• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

কাইথের হাত ধরে শেষ চারে মোহনবাগান

টাইব্রেকারে মোহনবাগান ৬-৫ গোলে পঞ্জাব এফসিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলবার জন্য যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চলে এল

গোলরক্ষক বিশাল কাইথের হাত ধরে শেষপর্যন্ত মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ইন্ডিয়ান ওয়েল ডুরান্ড কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় শেষ চারে খেলবার ছাড়পত্র পেয়ে গেল। শুক্রবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মোহনবাগান মুখোমুখি হয়েছিল পাঞ্জাব ফুটবল ক্লাবের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট সময়ে খেলাটি ৩-৩ গোলে শেষ হয়। আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনওরকম অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়নি। সরাসরি টাইব্রেকারে খেলার ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়। টাইব্রেকারে মোহনবাগান ৬-৫ গোলে পঞ্জাব এফসিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলবার জন্য যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চলে এল। আগেই জানানো হয়েছে, দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ও ফাইনাল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে।

গতবারের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান বেশ চাপে পড়েগিয়েছিল পঞ্জাবের সঙ্গে লড়াইয়ে। প্রথম থেকেই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে আক্রমণাত্মক ভূমিকা দেখতে পাওয়া গিয়েছে। দুই দলের বিদেশি ফুটবলারদের দাপট দেখবার জন্য স্টেডিয়ামে বেশ কিছু দর্শক সেইভাবে ছন্দময় ফুটবল খেলা দেখতে পাননি। তবে পঞ্জাবের খেলোয়াড়দের মধ্যে যে প্রয়াস দেখতে পাওয়া গিয়েছে তা সবুজ মেরুন খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রকাশ পায়নি। মোহনবাগন একাদশে সেইভাবে তারকা ফুটবলারদের জায়গা দেননি নতুন কোচ হোসে মোলিনা। যার ফলে তরুণের উপরেই বেশি নির্ভর করতে হয়েছিল। রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলেন শুভাশিস বসু, দ্রিমি পেত্রাতোষ। তাই তরুণ সুহেল ভাটের সঙ্গে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে খেলানো হয়েছিল আক্রমণে। খেলার শুরুতেই পঞ্জাব পেনাল্টি পেয়ে যায়। পঞ্জাবের বিনীত রাই মোহনবাগানের রক্ষণভাগকে ভেঙে বল বাড়িয়ে দেন দলের অধিনায়ক লুকা মাইচেনকে। মাইচেনকে আলবার্তো ট্যকেল করলে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে গোল করেন লুকা মাইচেন। পিছিয়ে থাকা মোহনবাগান তারপরে খেলার ছক বদল করে প্রতিপক্ষ দলের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে থাকেন। খেলার ৪৪ মিনিটের স্টুয়ার্টের শর্ট সুহেলের পায়ে লেগে বল চলে যায় গোলের জালে। খেলায় সমতা ফিরে আসে। তবে প্রথমপর্বের একেবারে শেষ মুহূর্তে মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কাইথ নিশ্চিত গোলটি না বাঁচালে, তাহলে চাপে পড়ে যেত দল।

দ্বিতীয় পর্বের শুরুতেই কোচ মোলিনা কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে তিনজন খেলোয়ড়কে পরিবর্তন করেন। মাঠে আসেন শুভাশিস বসু, মনবীর সিং ও জেসন কামিন্স। খেলার ৪৮ মিনিটের মাথায় মনবীর গোল করে সবুজ মেরুন ব্রিগেডকে এগিয়ে দেন। কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৬৩ মিনিটের মাথায় পঞ্জাবের ফিলিপ দারুন গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন। তারপরেই দুই দলের খেলোয়াড়রা গোল করবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। ৭১ মিনিটে ভিদালের শট গোলের জালে জড়িয়ে যায়। আবার পিছিয়ে পড়ে মোহনবাগান। আবার খেলোয়াড় পরিবর্তন করেন মোহন কোচ মোলিনা। মাঠে নামানো হয় পেত্রাতোষকে। ৭৯ মিনিটের মাথায় মনবীর থেকে বল পেয়ে কামিন্স গোল করেন এবং সমতা ফেরান। খেলার নির্দিষ্ট সময় দুই দলই ৩-৩ গোল করে।

তারপরেই খেলার নাটকটা জমে যায়। সরাসরি টাইব্রেকারে ভাগ্য নির্ধারণের জন্য রেফারি দুই দলের খেলোয়াড়দের আহ্বান করেন। এদিনের খেলায় নায়ক হয়ে ওঠেন বিশাল কাইথ। বিশাল পঞ্জাবের ইভান ও ধনচন্দ্রের শট আটকে দিয়ে নায়ক হয়ে যান। প্রথমে মোহনবাগানের হয়ে টাইব্রেকারে কামিন্স গোল করতে ব্যর্থ হন। তারপরেই দুই দল পেনাল্টি থেকে গোল করে নাটকীয় জায়গায় খেলা পৌঁছে দেয়। পঞ্জাবের পঞ্চম শটটি বাঁচিয়ে দেন মোহনবাগানের বিশাল কাইথ। অর্থাৎ প্রথম পাঁচটি শটে দুই দলই ৪টি করে গোল করে। পঞ্জাব ও মোহনবাগান ষষ্ঠ শটে গোল করেছে।পঞ্জাবের সপ্তম শটটি বাঁচিয়ে দেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। মোহনবাগানের টম অ্যালফ্রেড গোল করে দলকে শেষ চারে পৌঁছে দেন। সেমিফাইনালে মোহনবাগান খেলবে কেরল ব্লাস্টার্স ও বেঙ্গালুরু এফসি জয়ী দলের বিরুদ্ধে।