মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ও ওড়িশা এফসি’র খেলাটি রবিবার ভুবনেশ্বর মাঠে সবচেয়ে মর্যাদার লড়াই হিসেবে চিহ্নিত হবে। তার প্রধান কারণ হল, মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনার দল গত তিন ম্যাচে একটা গোলও হজম করেনি। আবার ওড়িশার খেলার অতীতের ছবি কোচের কাছে জানা আছে। এই দলের কাছে পাঁচ গোলে হারতে হয়েছিল মোহনবাগানকে। শুধু তাই নয়, মোহনবাগান ক্লাবের দুই প্রাক্তন ফুটবলার রয় কৃষ্ণ ও হুগো বুমাস রয়েছেন এই দলে। তাঁরা প্রত্যেকেই ভালো করে জানেন, মোহনবাগানের আক্রমণের ছকটা কী হতে পারে। আবার কোচ মোলিনার কাছ বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, চোট পাওয়া খেলোয়াড় গ্রেগ স্টুয়ার্ট। তিনি তো খেলতে পারবেনই না, তারপরে সেই জায়গায় কাকে খেলাবেন, সেই বিষয়ে চিন্তা রয়েছে। তবে, তিনি বলেছেন, সমস্যা হবে না। বিকল্প খেলোয়াড় তৈরি রয়েছেন। সেই কারণে ওড়িশার বিরুদ্ধে সেরা খেলা উপহার দিয়ে জয় তুলে আনবেন বলে বিশ্বাস।
মোহনবাগানের কোচ মোলিনা ওড়িশার বিরুদ্ধে কীভাবে লড়াই করতে হবে, তার ছক পুরোপুরি তৈরি করে ফেলেছেন। তাঁর পাখির চোখ তিন পয়েন্ট। খেলার শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলতে হবে। কোনও সময়ের জন্য হালকা চালে খেলার কোনও ভাবনাই নেই। তার প্রধান কারণ হল যে দলে রয় কৃষ্ণর মতো ফুটবলার থাকে, তখন কিছুটা পরিকল্পনামাফিক ফুটবল খেলতে হবে। বক্সের মধ্যে বল পেলে রয় কৃষ্ণ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে জানেন। সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের। কোনও সময়ের জন্য প্রতিপক্ষ দলকে জায়গা ছেড়ে দেওয়া চলবে না। যখনই আক্রমণ গড়ে তুলবে বিপক্ষ দল, সেই সময় সেই আক্রমণ শুরুতেই ভেঙে দিতে হবে। তারপরে মনে রাখতে হবে, ঘরের মাঠে খেলছে ওড়িশা দল। তাদের সমর্থক অবশ্যই খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করবেন, সেটাও কিন্তু ভেবে রাখতে হবে।
মোহনবাগানের রক্ষণভাগ মরশুমের শুরু থেকেই ভাবিয়ে রেখেছি। অথচ বেশ কয়েকটি ম্যাচে অন্য ছবি দেখতে পাওয়া গেছে সবুজ-মেরুন শিবিরে। তাই আশা করা যেতে পারে, আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন থাকবে রক্ষণভাগের ফুটবলাররা। আত্মবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নামবে দিমিত্রিয়াসরা। দীপক টাংরি শুরু থেকেই খেলবেন। পাশে জেমি ম্যাকলারেন, নুনো রেইসরা বড় ভূমিকা নেবেন বলে বিশ্বাস।
আইএসএলের লিগ টেবলে ওড়িশা নবম স্থানে রয়েছে আর মোহনবাগান দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। তাই সেকেন্ড বয়ের সঙ্গে লড়াই করতে হবে ওড়িশাকে। নিঃসন্দেহে খাতায় কলমে বেশ শক্তিশালী দল দিয়েগো মৌরিসিও, হুগো বুমোস, আহমেদ জাহৌ ও মুর্তাতার দল। তবে ওড়িশা দলের হয়ে টানা দু’বছর খেলেছেন রয় কৃষ্ণ। তিনি সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার। গোলের সুযোগ পেলে গোল করতে তিনি ওস্তাদ। তাই মনে রাখতে হবে, মোহনবাগানের ফুটবলারদের কোনওভাবেই রয় কৃষ্ণেকে জায়গা দেওয়া চলবে না। গোলের মুখে বল পেলে তিনি গোল করে আকাশের দিকে হাত তুলে সারা মাঠ ছুটতে থাকেন। তাই সতর্ক হয়ে থাকতে হবে রয় কৃষ্ণকে নিয়ে। দুই দলের কাছেই অত্যন্ত মর্যাদার লড়াই, তা নতুন করে বলার জায়গা নেই।