আইএসএল ফুটবলে প্রথম বছরে খেলতে নেমে মহমেডান স্পোর্টিং নজরই কাড়তে পারেনি। তারা মাত্র একটি জয় পেয়েছে। অর্থাৎ তাদের জায়গা হয়েছে একেবারে তলানিতে। একের পর এক হারের পরেও খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করার জন্য সাদা-কালো শিবিরের কর্মকর্তা ও সমর্থকরা এগিয়ে এসেছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই দলটি প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে এখনও পর্যন্ত ১০১টি গোল করার মতো সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু ওই সুযোগ থেকে মাত্র পাঁচটি গোল করতে পেরেছে। প্রতিপক্ষের গোলের সামনে গিয়ে বার বার ফুটবলাররা নিজেদের থেই হারিয়ে ফেলেছেন। যার ফলে গোলের দেখা মেলেনি। রবিবার ঘরের মাঠে মহমেডান স্পোর্টিং মুখোমুখি হয়
গতবারের কাপ চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি’র বিরুদ্ধে। স্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে মহমেডান স্পোর্টিংকে লড়াই করতে হবে। দলের রাশিয়ান কোচ আন্দ্রে চেরোনিশভ চেষ্টা করছেন মুম্বই দলকে চাপে রেখে কীভাবে গোল করা যায়, তার অঙ্ক কষতে। মাঠে নেমে খেলবেন ফুটবলাররা। তাই তাঁদের উপরেই নির্ভর করতে হবে দলকে। মানসিক দিক দিয়ে তাঁরা যদি এগিয়ে থাকতে পারেন, তাহলে গোল আসাটা কোনও ব্যাপারই নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ফুটবলাররাই পারেন, বর্তমান অবস্থাকে পরিবর্তন করতে। তার জন্য চাই সাহসী ভূমিকা এবং দৃঢ়তা।
শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাশিয়ান কোচ বলেছেন, গোল করার সমস্যা কীভাবে মেটানো যায়, তার জন্য আক্রমণকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা নেই। ফুটবলারদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা যেটা রয়েছে, তা দূর করতে হবে। নিজেরা যদি উপলব্ধি করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তেই হবে। প্রতিপক্ষের গোলের মুখে চাপ সামলে মাথা ঠান্ডা করে গোল করতে হবে, এই ব্যাপারটা অন্যশীলনের সময় রাশিয়ান খেলোয়াড়দের কাছে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। যদি একটা ম্যাচ জিততে পারেন, তাহলে খেলোয়াড়রাও উদ্বুদ্ধ হবেন এবং পুরনো ফর্মে ফিরে আসার একটা তাগিদও বাড়বে। তাই প্রয়োজন গোল।
দুই ডিফেন্ডার জোসেফ আজেই ও গৌরব গোরা চোটের কারণে দলের বাইরে রয়েছেন। যার ফলে মুম্বই দলের বিরুদ্ধে তাঁরা খেলতে পারবেন না। তাই সমস্যা হবেই। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের সচেতন হতে হবে আরও বেশি করে। প্রতিপক্ষের আক্রমণকে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, সেবিষয়ে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। চোট পাওয়া ওই দুই ডিফেন্ডার কমপক্ষে তিন থেকে চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকবেন। তাই চোট আঘাতের পাশাপাশি কার্ডেরও সমস্যা রয়েছে। হলুদ কার্ড দেখা খেলোয়াড়দের সতর্ক থাকতে হবে। এই মুহূর্তে দল একটা মিনি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। সেই কারণেই যে কোনও প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে কৌশলগতভাবে খেলার প্রয়োজন রয়েছে। শুধু ডিফেন্ডার নয়, আক্রমণভাগে সিজার মানজোকিও চোটের কারণে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন কিনা, তা স্পষ্ট করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে সমস্যার মধ্যে রয়েছে মহমেডান স্পোর্টিং। চেষ্টা করা হচ্ছে, অল্প আঘাত পাওয়া খেলোয়াড়দের ফিট করিয়ে নিয়ে দলে রাখা।
নিঃসন্দেহে মুম্বই দল অনেক বেশি শক্তিশালী এবং আক্রমণে তারা এগিয়ে রয়েছে। মুম্বই দল যতই শক্তিশালী হোক না কেন, যদি মহমেডান স্পোর্টিং গোল করার মতো সুযোগ তৈরি করে ফেলতে পারে, তাহলে এগিয়ে থাকা সম্ভব হবে। তার জন্য প্রয়োজন প্রথম সুযোগেই গোল করে দেওয়া। বেশ কয়েকটি ম্যাচে খেলার প্রথমার্ধে কেন প্রায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিপক্ষ দলকে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল, কিন্তু কোথাও কোনও একটা ভুলে শেষ মিনিটে গোল হজম করতে হয়েছে মহমেডান স্পোর্টিংকে। সেই ভুলটা যাতে না হয়, সে বিষয়েও সচেতন করা হয়েছে খেলোয়াড়রদের।