সূর্যের ব্যাটে ধোনিদের উড়িয়ে ফাইনালে মুম্বই

লক্ষ্যমাত্রা ছিল মাত্র ১৩১ রান। ধােনির চেন্নাই সুপার কিংসকে ছয় উইকেটে হারিয়ে সহজেই ফাইনালে উঠে গেল রােহিতের মুম্বই। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়ে অপরাজিত থেকে সূর্যকুমার যাদব করলেন ৭১ রান।

ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ের ব্যাটিং বিপর্যয়। মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুম্বইয়ের বােলাররা ধােনিদের তাদের ঘরের মাঠে দেড়শাে রানের গন্ডি টপকাতে দিল না। টসে জিতে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ধােনির অপরাজিত ৩৭ ও অম্বাতি রায়াডুর অপরাজিত ৪১ রানের উপর ভর করে চেন্নাই সুপার কিংস রান তােলে চার উইকেটে ১৩১।

আইপিএল ক্রিকেটে এল ক্লাসিকো’র তকমা পেয়েছে চেন্নাই ও মুম্বই এই দুই দলের খেলাটি। অতীতে এবং বর্তমানে বরাবরই এই দু’দলের মধ্যে একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা গেছে। কেউ কাউকে মাঠে নেমে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে নারাজ। বিশেষ করে, চলতি দ্বাদশতম আইপিএল প্রতিযােগিতায় মুম্বই দল এবারে দু’বারই চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়েছে।


মঙ্গলবার ঘরের মাঠে আইপিএলের প্লে অফের কোয়ালিফায়ারের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে কোনাে বাড়তি সুযােগ নিতে পারল না চেন্নাইয়ের ক্রিকেটাররা। অবশ্য এই দলের কাছে চিন্তাটা একটু কম। কারণ, প্রথম দুটি স্থানে পয়েন্ট টেবলে খেলা শেষ করায় তারা কোয়ালিফায়ারের প্রথম ম্যাচে পরাজিত হলেও, প্রতিযােগিতা থেকে ছিটকে যাবে না। ফাইনালে খেলার টিকিট অর্জনের জন্য আরাে একবার সুযােগ পাবে। এবং জিতে গেলে সরাসরি ফাইনালে। ১০ মে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলতে নামবে আজকের ম্যাচে যে দল পরাজিত হবে। খেলবে এলিমিনেটরে বিজয়ী দলের সঙ্গে।

প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলতে নেমে এদিন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে পরিবর্তন আনা হয়। ম্যাকক্লিনঘানের পরিবর্তে দলে আনা হয় জয়ন্ত যাদবকে। অন্যদিকে শেষ ম্যাচে পাঞ্জাবের কাছে হার স্বীকার করার পরও চেন্নাই দলের প্রথম একাদশে একটি পরিবর্তন আনা হয়নি। কেদার যাদবের পরিবর্তে দলে আনা হয় মুরলী বিজয়কে। তবে কেদার যাদবকে দলের বাইরে চলে যেতে হয় তার চোটের জন্য। ফিল্ডিং করার সময় কেদার কাধে চোট পান। এই চোটের ফলে তিনি বিশ্বকাপ প্রতিযােগিতা থেকেও ছিটকে যেতে পারেন। এমনটাই আশা করছেন অনেকে। চোটটা গুরুতর।

টসে জিতে মঙ্গলবার চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধােনি প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মােটেই ভালাে করতে পারেনি চেন্নাই সুপার কিংস। স্পিন সহায়ক পিচে মুম্বইয়ের অধিনায়ক রােহিত শর্মা শুরু থেকে স্পিনারদের ব্যবহার করেন। এবং প্রথম তিরিশ বলের মধ্যে মাত্র ৩২ রান যােগ হয় চেন্নাইয়ের স্কোরবাের্ডে এবং উইকেট হারিয়ে ফেলে তিনটি। ফ্যাপ দু প্লেসিস, শেন ওয়াটসন ও সুরেশ রায়নারা প্রত্যেকেই ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখালেন।

পর পর তিনটি উইকেট হারিয়ে ফেলার রীতিমতন চাপের মধ্যে পড়ে যায় চেন্নাই সুপার কিংসের ক্রিকেটাররা। ঘরের মাঠে দলের ব্যাটসম্যানদের চুড়ান্ত ব্যর্থতা দেখার পর সমর্থকরা পুরােপুরি হতাশ হয়ে পড়েন। তবে, মুম্বইয়ের বােলাররা যে পুরােপুরি প্রমাণ করে দিলেন তারা তাদের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছেন। আর বিশেষ করে স্পিনাররা কাজের কাজটা পুরােপুরি করে গেলেন।

দলের প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা কিছুটা মুছে দিতে থাকেন মুরলী বিজয়। ছাবিশ বলে ছাব্বিশ রান করে দলকে একশাের গন্ডির দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলেও চাহারের বলে আউট হয়ে যান। একশাে রানের গন্ডি টপকানাের আগে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে। শেষদিকে অম্বাতি রায়াডু ও মহেন্দ্র সিং ধােনির দৌলতে চেন্নাই সুপার কিংস ১০৫ বল খেলে একশাে রানের গন্ডি টপকাতে পারে। এবং পঞ্চম উইকেটে আটত্রিশ বলে পঞ্চাশ রানের পার্টনারশিপ যােগ করে দেন।

শেষপর্যন্ত ধােনির অপরাজিত ৩৭ ও অম্বাতি রায়াডুর অপরাজিত ৪১ রানের উপর ভর করে চেন্নাই সুপার কিংস রান তােলে চার উইকেটে ১৩১। মুম্বই দলের হয়ে ক্রুণাল পান্ডিয়া ও জয়ন্ত যাদব একটি করে এবং রাহুল চাহার দু’টি উইকেট সংগ্রহ করেন।