ম্যাঞ্চেস্টার সিটির ব্যর্থতা নিয়ে বিশ্ব ফুটবল এখন আলোচনায় মুখর। গত চারবারের ইপিএল জয়ী এই দলের এমন হাল কেন হল, তার উত্তর খুঁজতে সবাই ব্যস্ত রয়েছেন। শুধু ইংল্যান্ড নয়, এই মুহূর্তে ইউরোপের অন্যতম সেরা দল তারা। বেশির ভাগ দলই তাদের মতো খেলতে চায়। কেউই পারে না। বিশ্বের সেরা দলও তাদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে। সেই ম্যাঞ্চেস্টার সিটির টানা চারটি ম্যাচে হার অবাক হওয়ার মতোই। এই সিটিকে চেনা যাচ্ছে না। যে দলের সামনে কিছু দিন আগে পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ বিধ্বস্ত হয়েছে, তারাই এখন হেরে যাচ্ছে স্পোর্টিং লিসবন, ব্রাইটনের মতো তুলনামূলক অনেক কমজোরি দলের কাছে।
শেষবার যখন সিটি টানা চারটে ম্যাচে হারে তখনও পেপ গুয়ার্দিওলার কোচিং জীবন শুরুই হয়নি। তখন কেরিয়ারের সায়াহ্নে তিনি। মেক্সিকোর একটি ক্লাবে খেলছিলেন। তখনও সিটিকে কিনে নেয়নি আবু ধাবির রাজপরিবার। ইংল্যান্ডের ফুটবলে তখন দাপট চলছিল চেলসির। রোমান আব্রামোভিচের মালিকানাধীন দলের কোচ তখন হোসে মোরিনহো। সবে গোটা বিশ্বে বিখ্যাত হতে শুরু করেছেন। সিটির একটানা হারের দিকে কারও নজরও পড়েনি। স্টুয়ার্ট পিয়ার্সের কোচিংয়ে ২০০৬ সালে সে বার টানা ছ’টি ম্যাচ হেরেছিল সিটি।
১৮ বছর আগের সেই সিটির সঙ্গে এখনকার সিটির কোনও মিল নেই। এই সিটিতে খেলেন বিশ্বের সেরা ফুটবলারেরা। দায়িত্বে বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ। মালিক বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনপতি। এখন সিটি একটা ম্যাচে হারলেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। সমালোচিত হন কোচ গুয়ার্দিওলা থেকে ফুটবলারেরা। টানা চার হারের পর ফুটবল বিশেষজ্ঞেরাও স্তম্ভিত। প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি শেষের শুরু? না কি এখানেই সিটির দাপট শেষ? সাফল্য পেয়ে কি গুয়ার্দিওলা এবং তাঁর ফুটবলারেরা ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন? আর কোনও খিদে কি বেঁচে নেই? বের্নার্দো সিলভার ‘ক্লাব গভীর অন্ধকারে রয়েছে’ মন্তব্য নিয়েও জল্পনার শেষ নেই। পাশাপাশি নামি খেলোয়াড়দের চোট নিয়েও সমস্যায় পড়েছে দল। হয়তো সেই কারণে দল গঠনে চাপে পড়ে যাচ্ছেন কোচ।
কোচ গুয়ার্দিওলার অবদান রয়েছে দলের অবস্থান পরিবর্তনের জন্য। কিন্তু বর্তমানে দলের হালহকিকত দেখে অনেকেই কোচকেও দোষারোপ করতে ছাড়ছেন না। তাই এখন প্রশ্ন, কোচ কীভাবে দলের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়। সমস্যা মেটাতে গুয়ার্দিওলাকে মাঠে নামতে হবে। এ মরসুমের শেষে গুয়ার্দিওলার সঙ্গে চুক্তি শেষ হচ্ছে সিটির। তাই তিনিও চেষ্টা করবেন, যাতে দলের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারলে আগামী দিনে অন্য কোনও দলের কাছ থেকে বড় ডাক পেতে পারেন।