পূর্ণেন্দু চক্রবর্তী: আইএসএল ফুটবলে লিগ-শিল্ড জয় করার পরে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ভারতসেরা হওয়ার লক্ষ্যে সরাসরি শেষ চারে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে যায়৷ প্রথম লেগে সেমিফাইনাল ম্যাচে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ১-২ গোলের ব্যবধানে হারতে হয়েছে ওড়িশা এফসি’র কাছে৷ এমনকি ওই ম্যাচে দুই দলের একজন করে ফুটবলার চড়া মেজাজে খেলার জন্য লালকার্ডও দেখেছেন৷ সেই কারণেই অত্যন্ত সতর্ক দুই দলই দ্বিতীয় লেগের সেমিফাইনাল ম্যাচ খেলার জন্য৷ তারপরে দ্বিতীয় লেগের সেমিফাইনাল ম্যাচ হবে রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে৷ একদিকে যেমন তীব্র তাপপ্রবাহ, তেমনই এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চড়া মেজাজকে ধরে রাখার জন্য সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের কোচ লোপেস হাবাস হুঙ্কার দিয়েছেন, ম্যাচ জিততেই হবে৷ অর্থাৎ ডু অর ডাই ম্যাচ৷ বিশেষ করে মোহনবাগানের ম্যাচে৷ তাই সব খেলোয়াড়দের এই পরীক্ষায় লেটার মার্কস পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে৷ খুব কঠিন ম্যাচ দিমিত্রি পেত্রাতোসদের কাছে৷ এটাও মনে রাখতে হবে, প্রতিপক্ষ ওড়িশা এফসির কোচ হলেন সার্জিও লোবেরা৷ ওড়িশার কাছে অ্যাডভেন্টেজ প্রথম লেগে তারা জিতে রয়েছে৷ তাই মোহনবাগানের গর্জনটা একেবারে অন্যরকম৷ ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রচুর টিকিট ছাড়া হয়েছে সমর্থকদের জন্য৷ সমর্থকরাও ভিড় করবেন গ্যালারিতে৷ তাঁদের চিৎকার সবুজ-মেরুন খেলোয়াড়দের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হবে৷ আবার এটাও মনে রাখতে হবে, ওড়িশা দলের সবচেয়ে সুযোগসন্ধানী খেলোয়াড় হলেন রয় কৃষ্ণ৷ তাঁকে কোনওভাবেই জায়গা দেওয়া চলবে না৷ তারপরেও বলতে হবে, দীর্ঘদিন মোহনবাগান ক্লাবে খেলে গেছেন রয় কৃষ্ণ৷
সেক্ষেত্রে তাঁদের খেলার চরিত্র কেমন হবে, তা জানা আছে৷ গর্জন যতই বড় হোক না কেন, কিন্ত্ত কৌশলগতভাবে যদি প্রতিপক্ষকে পরাস্ত না করা যায়, তাহলে বিপদের গন্ধ রয়েছে৷ বিশেষ করে মোহনবাগানের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের আরও বেশি সচেতন হতে হবে৷ ওড়িশার আক্রমণকে কীভাবে প্রতিরোধ করে তুলতে হবে, তার জন্য ছক একেবারে তৈরি রাখতে হবে৷ যেমন কোচ হাবাসের গোপন ছক তৈরি রয়েছে, তেমনই আবার ওড়িশার কোচ লোবেরা তাঁর অস্ত্র কীভাবে ব্যবহার করবে, সে বিষয়ে খেলোয়াড়দের বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন অনুশীলনের মধ্য দিয়ে৷ দুই দলই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর৷ কেউ কাউকেই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়৷ পরিকল্পনা সাজাতে ক্লোজ ডোর অনুশীলন করেছেন কোচ হাবাস৷
তবে কার্ডের সমস্যায় মোহনবাগানের সবচেয়ে বড় ভরসা সাদিকু খেলতে পারছেন না৷ তেমনই আবার ওড়িশার প্রথম সারির ফুটবলার একই কারণে মাঠের বাইরে থাকবেন৷ মোহনবাগান যেমন পেত্রাতোসের উপর ভর করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে, পাশাপাশি, রয় কৃষ্ণকে সামনে রেখে ওড়িশার আক্রমণ দেখতে পাওয়া যাবে৷ ওড়িশার কোচ লোবেরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ঘরের মাঠে সবসময় মোহনবাগান ভয়ঙ্কর৷ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে খেলা মোটেই সহজ নয়৷ বিশেষ করে মোহনবাগানের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোটা বেশ কঠিন৷ তাই পরিকল্পনামাফিক খেলা খেলতে হবে৷ দলের ছেলেরা সবাই প্রস্ত্তত রয়েছেন সেরা খেলা উপহার দেওয়ার জন্য৷ প্রত্যেকেই উত্তেজিত৷ আমাদের দলের ছেলেরা বড় ম্যাচের জন্য সবসময় তৈরি৷ এই ম্যাচ জিততেই আমরা মাঠে নামব এবং ফাইনাল খেলার জন্য তৈরি রয়েছি৷