ভেটারেন্স ক্লাবের পরিচালনায় লেসলি ক্লডিয়াস হকি প্রতিযোগিতার ফাইনালে শনিবার মহমেডান স্পোর্টিং মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল বারুইপুর হাইস্কুল ও বেহালার প্লেয়ার্স কর্নার। ১৬ বছর বয়সী এই হকি প্রতিযোগিতায় আটটি দল অংশ নিয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ে খেলার ফলাফল নির্ধারিত না হওয়ায় বেহালা প্লেয়ার্স কর্নার টাইব্রেকারে ভাগ্য নির্ধারণ হয়। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেহালা স্পোর্টস কর্নার বারুইপুর হাইস্কুলকে হারিয়ে। প্রতিযোগিতার শেষে সফল খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অলিম্পিয়ান গুরবক্স সিং ও দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। গুরবক্স সিং বলেন, একটা সময় এই কলকাতা ময়দানে হকি নিয়ে প্রচুর উন্মাদনা চোখে পড়েছে। এমনকি আমিও দাপটের সঙ্গে হকি খেলেছি।
পরবর্তী সময়ে রাজ্য হকি সংস্থার দায়িত্ব নিয়ে কাজও করেছি। তাই বাংলার হকি নিয়ে আমি গর্ব অনুভব করি। বাংলাতে খেলেই ভারতীয় দলে জায়গা পেয়েছি এবং অলিম্পিকে অংশ নিয়ে পদক জিতেছি। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তবে কলকাতা ময়দানে বেশ কয়েক বছর হকি প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে আবার হকির প্রসার ঘটতে চলেছে। ইতিমধ্যেই হাওড়ার ডুমুরজোলা স্টেডিয়ামে অ্যাস্টোটার্ফ বসেছে। আরও একটি মাঠ তৈরি হচ্ছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণের পাশে। বর্তমানে ঘাসের মাঠে হকি খেলা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। কৃত্রিম মাঠে খেলতে না পারলে, এখন প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। আশা করা যেতে পারে, আগামী দিনে এই কলকাতা থেকেই প্রচুর প্রতিভাবান হকি খেলোয়াড় উঠে আসবেন। এই তো কিছুদিন আগেই হকির ডার্বি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল। এই ডার্বি ম্যাচে দর্শকদের উন্মাদনা দেখে অতীতের কথা মনে পড়েছে। কলকাতার তিন প্রধান আবার হকি খেলায় ফিরে এসেছে, এটা অত্যন্ত ভালো দিক।
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানান, ‘ছোটদের হকি খেলা দেখে আমি অভিভূত। ঘাসের মাঠে এবারে খেলা হলেও আগামী বছরে ভেটারেন্স স্পোর্টস ক্লাবে এই প্রতিযোগিতার আসর হবে অ্যাস্টোটার্ফে, তা এখন থেকেই বলে গেলাম। শুধু তাই নয়, জেলাস্তরে হকি খেলাকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা বিশেষ উদ্যোগ নেব। হকি বেঙ্গলের পক্ষ থেকে ছোটদের পাশাপাশি কলকাতা হকি লিগকে আরও জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস থাকবে। আমার ভালো লাগছে, স্কুল দলের ছেলেমেয়েরা হকিতে ফিরে এসেছে।’ পাশাপাশ তিনি আরও বলেন, ‘নিজে ফুটবল খেলেছি। ফুটবল খেলা দেখতে ভালোবাসি। আইএসএল ফুটবলে শেষ ছয়ের খেলা কলকাতা থেকে মোহনবাগান খেলবে। মোহনবাগান ইতিমধ্যেই লিগ-শিল্ড জয় করেছে। পরপর দু’বার এই খেতাব তুলে নিয়ে নজির গড়েছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। আশা করব, মোহনবাগান কাপ জয় করে ভারত সেরা সম্মানে সম্মানিত হবে।’
এদিন চ্যাম্পিয়ন দলকে ১০ হাজার ও রানার্স আপ দলকে ৫ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। অন্যানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গাঙ্গুলি, অলোক মুখার্জি, মিহির বোস, কার্তিক শেঠ, অমিত বাগচী, সুমিত বাগচী, সমীর চৌধুরি, ঝণ্টু দে, নাসির আহমেদ সহ বেশকিছু প্রাক্তন হকি খেলোয়াড়।