চেন্নাই– আইপিএলের নিলাম হবে আগামী বছর৷ সব ফ্র্যাঞ্চাইজকে আবার নতুন করে দল তৈরি করতে হবে৷ স্বভাবতই এ বারের চ্যাম্পিয়ন দলের সব ক্রিকেটারকে ধরে রাখতে পারবে না কলকাতা নাইট রাইডার্স৷ নিয়ম অনুযায়ী চার জন ক্রিকেটারকে রেখে দিতে পারবেন গৌতম গম্ভীর, চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতেরা৷ কারা হতে পারেন সেই চার ক্রিকেটার?
তিন বছর অন্তর আইপিএলের পূর্ণ নিলাম হয়৷ নতুন করে তৈরি হয় সব দল৷ ২০২৫ সালের আইপিএলের আগে আবার নতুন করে ক্রিকেটার কিনবে ফ্র্যাঞ্চাইজগুলি৷ তার আগে চলে নানা হিসাব৷ ভারতীয় ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়ে চিন্তা থাকে না দল মালিকদের৷ চিন্তা থআকে বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়ে৷ আইপিএলের সময় ভারতের খেলা না থাকলেও বিভিন্ন দেশের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় থাকে৷ তাই অনেক দেশের ক্রিকেটারদের পুরো প্রতিযোগিতায় পাওয়া যায় না৷
আগামী নিলামে ২০২৫ থেকে ২০২৭ সালের জন্য দল তৈরি করবে ফ্র্যাঞ্চাইজগুলি৷ দায়িত্বপ্রাপ্তদের চোখ থাকবে তিন বছরের আন্তর্জাতিক সূচির দিকে৷ যে দেশের ক্রিকেটারদের টানা তিন মরসুমে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকবে, তাঁদের নিয়ে আগ্রহী হবেন ফ্র্যাঞ্চাইজ কর্তৃপক্ষেরা৷ এখনও পর্যন্ত যে নিয়ম রয়েছে, সেই অনুযায়ী চার জন ক্রিকেটার বাদে বাকিদের ছেডে় দিতে হবে নিলামের জন্য৷ তাঁদের আবার পেতে হলে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজগুলির সঙ্গে লড়াই করতে হবে৷ এই নিয়ম পরিবর্তন হতে পারে বলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে খবর৷ চারের বদলে পাঁচ বা ছ’জন ক্রিকেটারকে ধরে রাখার সুযোগ পেতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজগুলি৷ নতুন নিয়ম না হওয়া পর্যন্ত চার ক্রিকেটারকে ধরেই পরিকল্পনা করতে পারবে সব ফ্র্যাঞ্চাইজ৷
তা হলে কাদের ধরে রাখবে কেকেআর? প্রথমেই নাম আসবে শ্রেয়স আয়ারের৷ এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার দলের অধিনায়ক৷ এ বারের আইপিএলে ব্যাট হাতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নজর কেডে়ছে তাঁর নেতৃত্বও৷ শ্রেয়সকে রেখে দিতে চাইবেন গম্ভীরেরা৷ দ্বিতীয় নাম অবশ্যই সুনীল নারাইন৷ এ বারের আইপিএলের সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন ৩৬ বছরের অলরাউন্ডার৷ আরও বছর তিনেক খেলে দিতে পারেন৷ ব্যাট এবং বল হাতে দলের অন্যতম ভরসা৷ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন না৷ তাই দলের সবচেয়ে পুরনো ক্রিকেটারকে পাওয়া নিয়েও কোনও উদ্বেগ নেই৷ নারাইন নিঃসন্দেহে কেকেআরের দ্বিতীয় পছন্দ হবেন৷ তৃতীয় পছন্দ হতে পারেন বরুণ চক্রবর্তী৷ এ বারের আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি৷ নারাইন এবং তাঁর স্পিন জুটি দলের অন্যতম সম্পদ৷ বরুণের উপর আস্থা রয়েছে মেন্টর গম্ভীরেরও৷ আগামী তিন বছরের জন্য তাঁকে ধরে রাখার সম্ভাবনা যথেষ্টই৷
বাকি একটি জায়গা৷ এই জায়গার দাবিদার অন্তত চার জন ক্রিকেটার৷ তাঁরা হলেন ফিল সল্ট, আন্দ্রে রাসেল, রিঙ্কু সিংহ এবং হর্ষিত রানা৷ সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন৷ কাউকেই ছেডে় দিতে চাইবেন না কেকেআর কর্তৃপক্ষ৷ নিলামে ফিরিয়ে নিতে হলে খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে৷ কিন্ত্ত নিয়মের বাইরে যাওয়ার উপায় নেই৷ সল্টের মতো উইকেটরক্ষক-ব্যাটার যোগ দেওয়ায় দলের ভারসাম্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে৷ উইকেটে সামনে এবং পিছনে তাঁর দক্ষতা ভসা করার মতোই৷ তাঁর এবং নারাইনের ওপেনিং জুটি এ বার বহু ম্যাচে কেকেআরকে জয়ের ভিত গডে় দিয়েছেন৷ তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের মনোভাব তাঁর বিপক্ষে যেতে পারে৷ রাসেল দলের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার৷ কেকেআরের ভারসাম্যের ভরকেন্দ্র৷ এ বারের আইপিএলে তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স নজর কেডে়ছে৷ তাঁকে গোটা মরসুম পাওয়া নিয়ে সমস্যা নেই৷ যদিও ৩৬ বছর বয়স কিছুটা তাঁর বিপক্ষে যেতে পারে৷ তবু দীর্ঘ দিন এক দলের হয়ে খেলার সুবাদে সল্টের থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবেন তিনি৷ এই দু’জনের প্রধান প্রতিপক্ষ রিঙ্কু৷ এ বারের আইপিএলে তেমন খেলার সুযোগই পাননি৷ তবে ২০ ওভারের ক্রিকেটে এখন ভারতের অন্যতম সেরা ফিনিশার৷ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন৷ তাঁকে পাওয়া নিয়েও কোনও প্রশ্ন নেই৷ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, কর্ণধার শাহরুখ খানের অত্যন্ত প্রিয় রিঙ্কু৷ লড়াইয়ে থাকলেও কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন হর্ষিত৷ এ বার কেকেআরের চমক ছিলেন দিল্লির তরুণ জোরে বোলার৷ তবে তাঁর বিকল্প পাওয়া কঠিন নয়৷