চেন্নাইয়ের হোটেলে কেকেআর

চেন্নাই— সোমবার আইপিএলে ডার্বি৷ মুখোমুখি নামছে কেকেআর ও চেন্নাই সুপার কিংস৷ ধোনি বনাম মেন্টর গম্ভীর৷ একজন মাঠের মধ্যে থেকে লড়বেন৷ আর একজন ডাগ আউটে বসে ছক কাটবেন দলের সাফল্য কীভাবে আনা যায়! এই হল ডার্বির মূল কথা৷

সোমবারের লড়াইয়ের জন্য কেকেআর চেন্নাইয়ের হোটেলে ঢুকে পডে়ছে৷ চারিদেকে ক্রিকেট কিটস৷ হোটেল প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে মালা গলায় পরিয়ে দেওয়া, কপালে চন্দনের ফোঁটা এঁকে দেওয়া এসবের মাঝে গম্ভীরের মনে একবারও কি ১২ বছর আগের কথা মাথায় আসেনি৷ সেদিন চেন্নাইয়ের মাটিতে আইপিএল ফাইনালে ধোনিদের সামনে ছিলেন গম্ভীররা৷ ফাইনালে তাঁদের পাঁচ উইকেটে হারিয়ে কেকেআর প্রথমবার আইপিএল জিতেছিল৷ গম্ভীর ইনিংসের প্রথম ওভারে ফিরে গেলেও দলকে জেতাতে বড় ভুমিকা নিয়েছিলেন বিসলা৷ তাঁর দুর্দান্ত ইনিংসের উপর ভর করে কেকেআর ফাইনাল জিতে নিয়েছিল৷

মনে পড়া স্বাভাবিক৷ এমন ঘটনা কি ভুলে যাওয়া যায়! সেদিনের ক্রিকেটার এখন প্রাক্তন৷ হয়ে গিয়েছেন দলের মেন্টর৷ সেদিনও দলকে জেতাতে টিম মিটিংয়ে ঘুঁটি সাজিয়েছিলেন৷ আজও সেই এক কাজ৷ টিম মিটিংয়ে তিনিই সর্বেসর্বা৷ তাঁকে সব কিছু করতে হচ্ছে৷ কেকেআর এখনও পর্যন্ত যে ক্রিকেট খেলছে, তারপর তাদের সাফল্য নিয়ে বেশি ভাবনার কিছু নেই৷ গাডি় ঠিকভাবে এগোতে পারলে চেন্নাই বধ করে চারে চার করতে পারবে কেকেআর৷ এর জন্য দরকার শুরুতে নারাইনের ব্যাটে ঝড়৷ মাঝপর্বে রাসেল- রিঙ্কুর ক্যামিও৷ এবারের আসরে সেরা জুটি বলতে গেলে রাসেল- রিঙ্কুকে সবাই সামনে নিয়ে আসছেন৷ তাঁরা ঠিকভাবে খেলে দিতে পারলে স্লগে বড় রান আসতে অসুবিধা হবে না৷ কিন্ত্ত এসবের জন্য চাই ওপেনিংয়ে বড় রান৷ ফিল সল্ট ও নারাইন জুটি পাওয়ার প্লে-তে ঝড় তুললে সিএসকে কিন্ত্ত মেরিনা বিচে গিয়ে পড়বে৷ চিপকের পিছনে মেরিনা বিচ৷ সেখানে নারাইন ঝড় উডি়য়ে নিয়ে যেতে পারে তাঁদের৷


এবারের আইপিএলে এটাই কেকেআরকে বাড়তি অক্সিজেন দিচ্ছে৷ যে নীতি টি২০ ক্রিকেটে সাধারনত হয়ে থাকে৷ দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে নারাইনের ইনিংসের কথা ধরা যাক৷ সেদিন কী মারই তিনি মেরেছিলেন৷ এটাও ঘটনা ইনিংসের শুরুতে ২০ রানের মাথায় নারাইন আউট হওয়ার পরও আম্পায়ারের দিক থেকে সাড়া না পেয়ে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন৷ অধিনাক ঋষভ পন্থও রিভিউ নিতে ভুল করেছিলেন৷ তাই নারাইনের মারমুখী মেজাজ ক্রিকেট ফ্যানেরা দেখতে পেয়েছিলেন৷ না হলে তাঁরা তো হতাশ হতেনই, পাশাপাশি কেকেআরও হয়তো চাপে পডে় যেত৷ কারন নারাইন ফিরে রঘুবংশী কতটা লড়াই করতে পারতেন সে বিষয়ে সন্দেহ আছে৷ উল্টোদিকে নারাইনকে দেখে তিনি বেশি উদ্দীপ্ত হতে পেরেছিলেন৷ আর রাসেল যখন আসেন, তখন খেলায় জাঁকিয়ে বসেছে কেকেআর৷

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও যেন ছন্দ পেয়ে গিয়েছে কেকেআর৷ স্টার্ক প্রথম দুটি ম্যাচে ম্লান ছিলেন৷ কিন্ত্ত শেষ ম্যাচে শুরুতে ধাক্কা দিয়ে দিল্লিকে কাত করে দেন৷ স্পিনাররাও ভাল বল করছেন৷ সব থেকে বড় কথা এটাই যে এবার রাসেলকে অলরাউন্ডার হিসেবে পেয়ে গিয়েছে কেকেআর৷ তিনি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও ঠিকঠাক করে দিচ্ছেন৷ তাই বোলারদের কাজটা সহজ হয়ে যাচ্ছে৷ সোমবার চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে এভাবে কেকেআরকে পাওয়া গেলে চেন্নাই জয় করা কঠিন হবে না৷