মোহনবাগানকে হারাল  কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স

কলকাতা ফুটবল লিগে প্রিমিয়ার ডিভিশনের থেকে সুপার সিক্সে খেলার অধিকার আগেই হারিয়েছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। তবুও অনেকে আশা করেছিলেন, অবশিষ্ট খেলাগুলিতে অবশ্যই ভালো খেলে জয়ের মুখ দেখতে চাইবেন খেলোয়াড়রা। এই তো তিনদিন আগে লখনউয়ের মাঠে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিল মোহনবাগান। তার আগে ডুরান্ড কাপ ফুটবলের ফাইনালেও হার স্বীকার করতে হয়েছিল মোহনবাগানকে পাহাড়ি দল নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে। তবুও সমর্থকরা দেখতে চেয়েছিলেন বৃহস্পতিবার বারাকপুর স্টেডিয়ামে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের জয়। কিন্তু হতাশ হতে হল সমর্থকদের। কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন দুরন্ত ফুটবল খেলে মোহনবাগানের মতো দলকে ২-১ গোলে হারিয়ে এই মুহূর্তে লিগ টেবলে চতুর্থ স্থানে চলে গেল। কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের কাছে অবশ্যই বড় জয়।

খেলা শুরু হতেই কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের ফুটবলাররা আক্রমণে ঝড় তুলতে থাকেন। কোচ জহর দাসের পরিকল্পনা মতো আক্রমণে যেভাবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের রক্ষণভাগকে বেসামাল করে দিয়েছে ফুটবলাররা, তার জন্য অবশ্যই প্রশংসা তোলা থাকবে। খেলার প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিটের মাথায় হোরামের গোলে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স এগিয়ে যায়। মোহনবাগানের গোলরক্ষকের কোনও কিছু করারই ছিল না। তবে এই গোল হজম করার পিছনে অবশ্যই মোহনবাগানের ডিফেন্ডারদের দোষ দিতেই হবে। স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের রক্ষণভাগের হতশ্রী অবস্থা। কোনও ডিফেন্ডারই নিজেদের জায়গায় খেলতেই পারেননি। ছন্নছাড়া রক্ষণভাগকে বোকা বানিয়ে হোরাম যেভাবে গোল করলেন, তা ভাবা যায় না।

দ্বিতীয়পর্বে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মোহনবাগান কিছুটা আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করতে থাকে। কিন্তু সেইভাবে গোল করার মতো সুযোগ তারা তৈরি করতে পারেনি। শুধুমাত্র সন্দীপ মালিক বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার মুখে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের ডিফেন্ডার পিছন থেকে বক্সের মধ্যে ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সেই পেনাল্টি তেকে ৫২ মিনিটের মাথায় গোল পরিশোধ করেন মোহনবাগানের আদিল আবদুল্লা। খেলায় সমতা ফিরে আসার পরে মোহনবাগানের ফুটবলাররা ম্যাচ জেতার জন্য সেইভাবে নিজেদের তুলে ধরতে চেষ্টাই করেননি। বরঞ্চ কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের ফুটবলাররা আরও বেশি আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করে মোহনবাগানের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। সেই চাপে মোহনবাগানের রক্ষণভাগ একেবারে বেসামাল হয়ে যায়। সেই ফাঁকে ৭০ মিনিটের মাথায় সৈকত সরকার ছবির মতো গোল করে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সকে এগিয়ে দেন। সৈকতের এই গোলটা অবশ্যই অনেকদিন মনে থাকবে। পরবর্তী সময় মোহনবাগানও গোল পরিশোধ করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন ২-১ গোলে মোহনবাগানকে হারিয়ে এবারের মতো কলকাতা ফুটবলে খেলা শেষ করল।


খেলার শেষে ক্লাবের সচিব স্বপন ব্যানার্জি খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষক দিবসের দিনটি আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফুটবলররা যেভাবে দলের জন্য লড়াই করেছেন, তা অভাবনীয়। আমরা তৃতীয় ডিভিশন থেকে যেভাবে প্রতিবছর সেরা খেলা খেলে প্রিমিয়ার ডিভিশনে উঠে এসেছি, তার জন্য অবশ্যই ফুটবলারদের অবদানকে কোনওভাবেই ভুলে থাকা যাবে না।