লর্ডসে টেস্ট ম্যাচ খেলেই ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন জেমস অ্যান্ডারসন

লর্ডস— ইংল্যান্ডের তারকা ফুটবলার জেমস অ্যান্ডারসন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন৷ আগামী জুলাই মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে লর্ডসে প্রথম টেস্ট হবে এবং ওই টেস্ট ম্যাচ খেলে তিনি বিদায় জানাবেন ক্রিকেটকে৷ অ্যান্ডারসনের ২০০৩ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল৷ ৪১ বছর বয়সী এই বোলার দুরন্ত গতিতে বল করে থাকেন৷ ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয়েছিল৷ বিশ্বের একমাত্র দ্রুতগামী বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি৷ অ্যান্ডারসন জানিয়েছেন, আগামী গ্রীষ্মে লর্ডসের মাঠেই প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ ওই ম্যাচ খেলে আমার ক্রিকেট জীবনের শেষ ম্যাচ হিসেবে সবাইকে অভিনন্দন জানাব৷ টানা ২০ বছর দেশের হয়ে তিনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন৷ তাঁর অভিজ্ঞতা অসাধারণ৷ ছোট থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল৷ তাই ইংল্যান্ডের হয়ে মাঠে নামার মুহূর্তগুলি আজও অ্যান্ডারসনকে ভাবায়৷ হয়তো সেই কারণেই তিনি বিদায়ের সময়টা এখনই বেছে নিয়েছেন৷ তিনি তাই বলেছেন, এটাই আমার সেরা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর৷ তারপরও তিনি বলেছেন, যখন দুই দশক ধরে নিজেকে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত রেখেছেন, তখন সবসময়ই ভাবতাম, দেশের জন্য আমার কিছু করণীয় আছে৷ কিন্ত্ত এই জায়গায়টা ধরে রাখাটা সবসময় ঠিক নয়৷ তরুণদেরও জায়গা দিতে হবে৷ তাঁদের সামনে রয়েছে অনেক স্বপ্ন৷ সেই স্বপ্ন তাঁরা যদি গ্রহণ করতে না পারেন, তা হবে অত্যন্ত বেদনাদায়ক৷ আমি নিজে অনেক সুযোগ পেয়েছি৷ তাই এই সিদ্ধান্তে আমি কখনওই আক্ষেপ জানাতে রাজি নই৷

অ্যান্ডারসন ইংল্যান্ডের হয়ে ১৮৭টি ম্যাচ খেলেছেন৷ খেলেছেন ১৯৪টি একদিনের ম্যাচ৷ সঙ্গে রয়েছে ১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা৷ অবশ্য ২০১৫ সালে দেশের হয়ে তিনি সাদা বলের ক্রিকেট খেলেননি৷ টেস্টে তিনি যেমন ৭০০ উইকেট পেয়েছেন, তেমনই একদিনের ক্রিকেটে ২৬৯টি এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৮টি উইকেট৷ এখানে অবশ্যই মনে করিয়ে দেওয়া যায়, ভারতের মাটিতে অ্যান্ডারসন বছরের শুরুতেই টেস্ট সিরিজ খেলতে এসেছিলেন৷ তিনি ছ’বার ভারত সফরে এসেছেন৷ তার মধ্যে রয়েছে চারটি টেস্ট সিরিজ৷ ভারতের মাটিতে তিনি দশটি উইকেট নিয়েছিলেন৷ বেশ কিছুদিন ধরে অ্যান্ডারসন অবসর নেবেন এমন জল্পনা তৈরি হয়েছিল৷ তার প্রধান কারণ হল টেস্ট দলে তাঁকে ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম চাইছিলেন না৷ ক’দিন আগেই নিউজিল্যান্ড থেকে ইংল্যান্ডে এসেছেন ম্যাকালাম৷ অ্যান্ডারসনের সঙ্গে কথা বলার জন্য ইংল্যান্ডে আসেন টেস্ট দলের কোচ৷ অভিজ্ঞ দ্রুতগামী বোলার অ্যান্ডারসনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, দীর্ঘদিন যখন দলের সঙ্গে রয়েছেন, তখন নিজেকে সরিয়ে রাখাটাই ভালো সময়৷ আর ক্রিকেটের বিদায়বেলাটা যদি সম্মানজনক হয়, তার থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হয় না৷ অর্থাৎ কোচ ঘুরিয়ে অ্যান্ডারসনকে বলতে চেয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে৷