ঘরের মাঠে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ফের একবার স্পর্শ করা থেকে ১ রান দূরে থমকে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। রবিবার রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে গিয়ে তুলল ২৮৬ রান। গতবছরই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে হায়দরাবাদ ২৮৭ রান করেছিল। এখানে বলা যায় সর্বোচ্চ স্কোরের নিরিখে তিন নম্বরেও রয়েছে হায়দরাবাদ।
টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক রিয়ান পরাগ। বুঝতে পারেননি, এই সিদ্ধান্তই বুমেরাং হয়ে যাবে। এর আগেও সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল সানরাইজার্সদের দখলেই। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরুর সঙ্গে তারা করেছিল ২৮৭ রান। এদিন রাজস্থানি বোলারদের পাড়ার বোলারে পরিণত করে নিজেদের সেই রেকর্ডের কাছাকাছি চলে গেল তারা। অভিষেক শর্মা ১১ বলে ২১ রানে মহেশ থিকসানার বলে আউট হয়ে গেলেও থামানো যায়নি ট্র্যাভিস হেডকে। তিনি রীতিমতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। ৩১ বলে ৬৭ রানে তিনি যখন আউট হন হায়দরাবাদের রান তখন ৯.৩ ওভারে ১৩০। ঠিক সেখান থেকেই শুরু করেন ঈশান কিষান। তাঁর গায়ে ছিল অবাধ্য ক্রিকেটারের তকমা। বাদ পড়েছেন ভারতীয় দল থেকেও। তাই আইপিএলকেই তিনি প্রমাণ করার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। যেভাবে তিনি ব্যাটিং করলেন তাতে যে কোনও দলের বোলারদের ভয় ধরতে বাধ্য। ৪৫ বলে সেঞ্চুরি করে তিনি বুঝিয়ে দিলেন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে তিনি এখনও অন্যতম সেরা।
শেষমেশ ৪৭ বলে ১০৬ রানে অপরাজিত থাকলেন ঈশান। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১টি চার এবং ৬টি বিরাট ছয় দিয়ে। ২০ ওভারে হায়দরাবাদের করে ৬ উইকেটে ২৮৬। অর্থাৎ, তাদেরই করা সর্বোচ্চ রানের থেকে তারা থামে মাত্র ১ রান দূরে। অন্যদিকে, আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে খরুচে বোলার হিসেবে লজ্জার রেকর্ড গড়লেন রাজস্থানের ব্রিটিশ তারকা জোফ্রা আর্চার। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৭৬ রান। এবারের আইপিএলটা শুরু হল শতরান দিয়ে। আইপিএলে এটাই তাঁর প্রথম শতরান। এর আগে ২০২০ সালে ৯৯ রানে শেষ হয়েছিল তাঁর ইনিংস। হায়দরাবাদে শতরান করে ঈশান বলেন, ‘দারুণ খুশি। খুব চাইছিলাম শতরানটা হোক। দল ভাল খেলছে। সাজঘরের পরিবেশ খুব ভাল। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স আমাদের স্বাধীনতা দেয়।’
২০ ওভারে টার্গেট ২৮৭। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জিততে হলে একপ্রকার অসম্ভবকে সম্ভত করতে হত রাজস্থান রয়্যালসকে। ২৮৭ রানের বিরাট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় রাজস্থান। মাত্র ২৪ রানের মধ্যে যশস্বী জয়সওয়াল এবং অধিনায়ক রিয়ান পরাগের উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে যায় রাজস্থানের দলটি। দ্রুত ফেরেন নীতীশ রানাও। সেখান থেকে অবশ্য পালটা লড়াই শুরু করেন দুই উইকেটরক্ষক। একজন সঞ্জু স্যামসন, অপরজন ধ্রুব জুরেল। ১১১ রানের জুটি বেঁধে রাজস্থানকে সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছে দিলেন তাঁরা। স্যামসন করলেন ৩৭ বলে ৬৭। জুরেল করলেন ৩৫ বলে ৭০ রান। দুই উইকেটরক্ষক অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু ঈশানের সেঞ্চুরির ইনিংসের কাছে পরাস্ত হলেন তাঁরা। শেষদিকে হেটমেয়ার এবং শিবম দুবে মারকুটে ইনিংস খেললেও, ততক্ষণে ম্যাচের ফলাফল প্রায় নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। শেষপর্যন্ত রাজস্থানের ইনিংস শেষ হয় ২৪২ রানে। হায়দরাবাদ জিতল ৪৪ রানে।