প্যারালিম্পিক্সে ভারতের সাফল্যটা বেশ ভালো জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে। পদকের তালিকাটা দেখলে তা স্পষ্ট হচ্ছে। শুক্রবার ভারতের আরেকটি সোনা এল। এই নিয়ে ভারত ষষ্ঠ সোনা পেল। উচ্চ লম্ফনে প্রবীণ কুমার ২.০৮ মিটার উঁচুতে লাফিয়ে সোনা জিতলেন। টোকিও অলিম্পিক্সে রুপো পেয়েছিলেন প্রবীণ। আর এ বার সোনা জিতলেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমেরিকার ডেরেক লকিডেন্টের থেকে ০.০২ মিটার ব্যবধানে লাফিয়ে জিতলেন প্রবীণ।
টোকিও অলিম্পিক্সের মতো এ বারেও এশিয়ান রেকর্ড গড়ে সোনা জিতলেন প্রবীণ। টি৬৪ ইভেন্টে টোকিও প্যারা অলিম্পিক্সে ২.০৭ মিটার লাফিয়ে ছিলেন। সেটাই ছিল এশিয়ান রেকর্ড। এবারে সেই রেকর্ডকে ভেঙে নতুন নজির গড়লেন।
প্রবীণের বাঁ পা ডান পায়ের তুলনায় ছোট। জন্ম থেকেই তিনি আর পাঁচজনের থেকে আলাদা ছিলেন। নয়ডার গোবিন্দগড় গ্রামের সেই প্রবীণই এখন প্যারালিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন হয়ে সোনা জিতলেন। দিল্লির মতিলাল নেহরু কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন তিনি। ছোট থেকেই খেলতে ভালবাসেন প্রবীণ। ছাত্রজীবনে ভলিবল খেলতেন। সেটাই ছিল তাঁর প্রিয় খেলা। আন্তঃ জেলা স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতে এক বার উচ্চলম্ফেনে নাম দিয়ে প্রথম তিনে না থাকায় মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। সেই সময় একজন শিক্ষক তাঁকে বলেছিলেন, প্রবীণ প্যারা-অ্যাথলেটিক্সে গেলে ভাল করবে।শিক্ষকের কথা শুনে প্যারাঅলিম্পিক্সের প্রতি তাঁর আগ্রহ বেড়ে যায়। তখন থেকেই প্যারাঅলিম্পিক্সের ইতিহাস জানা নয়, কীভাবে ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যায়, তার জন্য মনোনিবেশ করলেন। সেদিনের ভাবনা এখন সার্থক রূপ পেয়েছে।
জেলার প্রতিযোগিতাতে হাই জাম্পের এক কর্তা প্রবীণকে বলেছিলেন দ্রোণাচার্য কোচ সত্যপাল সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে। তাই কোনও একদিন বাবাকে নিয়ে প্রবীণ দিল্লি গিয়েছিলেন কোচ সত্যপাল সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে। সেই ঘটনাটা ২০১৮ সাল। প্রবীণকে দেখার পরে কোচ সত্যপাল কয়েক দিন অপেক্ষা করতে বলেছিলেন প্রবীণকে। ২০১৯ সালে সত্যপালের কাছে দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করেন প্রবীণ। সোনা জয়ের পরে প্রবীণ বলেছেন, দেশবাসী আমাকে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, তা কোনওদিন ভুলে থাকা যাবে না। পাশাপাশি, কোচ সত্যপাল সিং ও সাই পরিবারের কাছে চির কৃতজ্ঞ, আমাকে নতুন করে পথ দেখানোর জন্য।