ভারত ও অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্ট ম্যাচে অধিনায়ক রোহিত শর্মা না থাকাতে ভারতীয় দলকে কে নেতৃত্ব দেবেন, তা নিয়ে জল্পনার শেষ ছিল না। শেষ পর্যন্ত সহকারী অধিনায়ক যশপ্রীত বুমরা ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন। যশপ্রীত বুমরা জোরে বোলার। পাশাপাশি দেখা যাবে, শুক্রবার পার্থে প্রথম টেস্টে যশপ্রীত বুমরার সঙ্গে টস করতে মাঠে যাবেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দুই দলের দুই অধিনায়ক হলেন দ্রুতগামী বোলার।
একজন বোলার দ্বিতীয়বার টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে লড়াই করতে নামবেন, আর একজন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা বলতে যা বোঝায়, তা একেবারে কয়েক মাসের। একজন প্রথম টেস্টে হেরে গিয়েছেন আর অন্যজন অধিনায়ক হিসেবে একের পর এক ট্রফি নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। বিশ্বকাপ থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর হাতে ট্রফি শোভা পেয়েছে। এই তারকা অধিনায়ক হলেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স।
অতীতে জাতীয় দলকে সাফল্যের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন কপিলদেব, ইমরান খান, ইয়ান বথাম, বব উইলিস, শন পোলক ও ওয়াসিম আক্রমরা। গত এক দশকে এই ধারা কমেই গিয়েছিল। প্রায় প্রতিটি দেশেই অধিনায়ক হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল দলের সেরা ব্যাটসম্যানকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সেই ধারা ভেঙে ড্যারেন স্যামিকে অধিনায়ক করে। এর পর অস্ট্রেলিয়া দায়িত্ব দেয় কামিন্সকে। সম্প্রতি নিউ জ়িল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন টিম সাউদি। প্রশ্ন উঠছে, কপিল, ইমরানের যুগের মতো আবার কি জোরে বোলারদের নেতৃত্ব দেওয়ার পর্ব ফিরে আসছে?
প্রশ্ন উঠতেই বেশ মজা পেলেন কামিন্স। বললেন, ‘দারুণ লাগছে ব্যাপারটা। এ রকম আরও হওয়া উচিত। গত বছর নিউজিল্যান্ড সিরিজে সাউদিকে নেতৃত্ব দিতে দেখে ভাল লেগেছিল। খুব বেশি তো বদলের দরকার হয় না।’ ভারতের অধিনায়ক যশপ্রীত বুমরা মনে করেন, টেস্টে জোরে বোলারদের অধিনায়ক হওয়ার যোগ্যতা অবশ্যই দরকার। আসলে বোলাররা সবসময় কৌশলগতভাবে লেনথে বল রাখেন। যার ফলে প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা কিছুটা সমস্যায় পড়ে যান। শুধু প্যাট কামিন্স নন, অতীতেও কপিল দেব থেকে শুরু করে, ইমরান খান দলকে যেভাবে ভালো জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন, তার জন্য আজও তাঁদের নিয়ে কথা ওঠে। বলতে দ্বিধা নেই, জোরে বোলার অধিনায়কর বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দৌরাত্ম্য খেলার মধ্যে কতখানি।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ভারতের দ্রুতগামী বোলার কপিলদেব অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন। আবার পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরান খানের হাতে বিশ্বকাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। আর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতেও শোভা পেয়েছে বিশ্বকাপ। তবে, দলের অধিনায়কের ব্যাটনটা খুবই কি বোঝার মতো খেলা করে? এই প্রশ্নের উত্তরে ভারতের বর্তমান অধিনায়ক যশপ্রীত বুমরার অভিমত, ‘আমি পারি। কারণ আমি জানি কখন নিজে তরতাজা রয়েছি। কখন নিজেকে আর একটু চাপ দিতে পারি বা কখন বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ থাকে তো বটেই। তবে আমার অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা হয়। বুঝতে পারি কখন উইকেট কেমন আচরণ করছে। কখন কী ভাবে বোলিং পরিবর্তন করতে হবে বুঝতে পারি।’
কামিন্স অবশ্য মেনে নিয়েছেন তাঁর মানিয়ে নিতে সময় লেগেছে। তবে প্যাট কামিন্সের বেশ কিছুটা সময় নিতে হয়েছে অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে মানিয়ে নিতে। তিনি ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলার পরেই তাঁর ভূমিকাকে পর্যবেক্ষণ করেন। যিনিই অধিনায়ক হন না কেন তাঁর কাছে দলের সমন্বয়টা বড় কথা। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পরামর্শ নেন এবং কোচের ছককে কীভাবে সার্থক রূপ দিতে হয়, তার সঙ্গে নিজের ভাবনাকেও প্রকাশ করা।