আর একদিন বাদেই এখানে শুরু হতে চলেছে ভারতের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট ম্যাচ। বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে দুই দেশের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স শুধু চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন, তাই নয়, ভারতকে কম রানের মধ্যে আটকে রাখার জন্য হুঙ্কার দিচ্ছেন। তাঁর অভিমত, ভারতীয় খেলোয়াড়রা যতই চেষ্টা করুক না কেন, এখানকার উইকেটে ভারতীয় দলের কোনও খেলোয়াড়কে জায়গা দেওয়া হবে না। হয়তো এই চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররাও সাহসী ভূমিকা নিয়ে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে জানান দেবেন, ছোট করার কোনও তাদের জায়গা নেই। বিশেষ করে, অস্ট্রেলিয়া দলের অফ স্পিনার নাথান লায়ন বলেছেন, আমাদের দলে স্টিভ স্মিথ, মানার্স লাবুসেন রয়েছেন। এঁদের সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো সাহস রাখে বিরাট কোহলি। তাই প্যাট কামিন্স যতই চিৎকার করে বলুন না কেন, ভারতীয় দলকে চাপে রাখা কঠিন হবে। অল রাউন্ডার মিচেল মার্শ বলেছেন, ঋষভ পন্থ যদি দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে কঠিন লড়াই হবে।
সাধারণত, পাঁচ নম্বরে তিনি ব্যাট করতে আসেন। তরুণ ক্রিকেটার। তাঁর হাতে ভালো মার আছে। অবশ্যই সমীহ করে খেলার প্রয়োজন রয়েছে ঋষভের বিরুদ্ধে। ওপেনার ট্রেভিস হেড বলেছেন, রোহিত শর্মা হয়তো প্রথম টেস্ট ম্যাচে খেলছেন না। তবে রোহিতের আগ্রাসী ব্যাটিং যে কোনও প্রতিপক্ষ দলকে ভাবায়। রোহিতকে সমীহ করতেই হবে। আবার পেসার স্কট বোলান্ড বলেছেন, যশস্বী বুমরা যখন তখন খেলার চেহারা বদলে দিতে পারেন। এই মুহূর্তে তিনি বিশ্বের সেরা বোলারদের মধ্যে অন্যতম। সব মিলিয়ে বলতে পারা যায়, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটা দুরন্ত জায়গায় পৌঁছে যাবে।
এদিকে, ভারতীয় দলের শুভমন গিলকে পাওয়া যাবে না প্রথম টেস্ট ম্যাচে, এমনই ধারণা দিয়েছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। কিন্তু সহকারী কোচ বলেছেন, এখনই স্পষ্ট করা হচ্ছে না শুভমন গিলের খেলা নিয়ে। শুভমন অনুশীলন ম্যাচে বল ধরতে গিয়ে আঙুলে চোট পেয়েছেন। সেই চোট এখনও পুরোপুরি নিরাময় হয়নি। তবুও খেলার দিন সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, শুভমন খেলবেন কিনা। আবার সহকারী কোচের অভিমত, নিঃসন্দেহে মহম্মদ শামি আবার মাঠে ফিরে আসাটা অবশ্যই ভালো বার্তা। কিন্তু এখনই ভারতীয় দলে ডাকা হবে কিনা, তা জানা নেই। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে মহম্মদ শামি যদি নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে হয়তো শেষের কয়েকটি টেস্টে দলে ডাকা হতে পারে। আমরা চাই মহম্মদ শামি দলের সঙ্গে যোগ দিক এবং ভারতকে ভালো জায়গায় নিয়ে যান।
অন্যদিকে বিরাট কোহলি ও যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে দেবদত্ত পারিক্কলকে বেশ কিছুক্ষণ অনুশীলন করতে দেখা গেল। খুব সম্ভবত প্রথম টেস্টে তাঁর জায়গা হতে পারে। বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণের কথা প্রথমে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সেই জায়গা থেকে ছিটকে গেছে। তবুও তাঁকে বিকল্প হিসেবে দলে রাখার চিন্তাভাবনা রয়েছে। যদি তিনজন পেসারকে নিয়ে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশ গঠন করা হয়, সেক্ষেত্রে যশপ্রীত বুমরার সঙ্গে মহম্মদ সিরাজ, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের কথা ভাবা হতে পারে। যদি চারজন খেলেন, সেখানে রবীন্দ্র জাদেজার নামটা সংযোজন হবে। উইকেট রক্ষক ঋষভ পন্থ যদি ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত হন, সেক্ষেত্রে ধ্রুব জুরেলকে দেখা যেতে পারেষ। তবে কোচ ভাবছেন, রবীন্দ্র জাদেজা যেমন বল করতে পারেন, তেমনই আবার তাঁর ব্যাট থেকে ভালো রান আসে। লোকেশ রাহুলের ব্যাপারে স্পষ্ট কোনও কথা শোনা যাচ্ছে না। যদি দলে লোকেশ রাহুলকে রাখা হয়, সেক্ষেত্রে তিনি ওপেনার হিসেবে যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন।
সরফরাজ খানের ব্যাপারে দোটানা চলছে। সব মিলিয়ে বলতে পারা যায়, শক্তিশালী দল হিসেবে ভারত অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম টেস্ট ম্যাচ থেকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে। অস্ট্রেলিয়া দলের ক্রিকেটাররা যতই হইচই করুক না কেন, ভারতীয় ক্রিকেটাররাও লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়বে না। এখন শুধু অপেক্ষা প্রথম টেস্ট ম্যাচের ফলাফল কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে।