এবারের বিশ্বকাপে ভারতীয় দল দারুণ জায়গায় রয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারত পাকিস্তানের ম্যাচকে নিয়ে নানারকম সমালােচনার ঝড় তুলছেন, তাঁদেরকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় দলের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়না, ভারত অনেক এগিয়ে রয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়টা বড় কথা নয়, তার আগে ভারতকে দুটো ম্যাচ খেলতে হবে। আর ওইদুটো ম্যাচ ভারত যদি জিততে পারে, তাহলে পাকিস্তানই চাপের মধ্যে পড়ে যাবে। অধিনায়ক বিরাট কোহলিরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন। আর ওই লড়াইটা অবশ্যই ভারতের কাছে সহজ হয়ে যাবে।
সবসময়ই পাকিস্তান এবং ভারতের ম্যাচ স্নায়ুযুদ্ধ বলে স্বীকৃতি পেয়ে থাকে। আর এই স্নায়ুযুদ্ধে ভারত কিন্তু অনেক বেশি সুবিধা আদায় করে নিতে পারে। অতীতে এমন অনেক খেলার পরিচয় রয়েছে ভারতের কাছে। এটা মনে রাখতে হবে এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের প্রতিটি খেলােয়াড় দারুণ ফর্মে রয়েছে। যেকোনও অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ভারতীয় খেলােয়াড়দের একটা স্বভাবজাত চরিত্র।
এবারে পাকিস্তান দলের অবস্থান প্রথম ম্যাচে ধরা পড়েছে। তাই ভারতের খেলােয়াড়রা সেটা প্রত্যক্ষ করে নিতে পেরেছেন। যার ফলে অনেকটাই সুবিধা আদায় করে নিতে পারবে ভারত। রায়না আরও বলেন, এটা মনে রাখতে হবে সীমিত ওভারের খেলায় ভারতীয় দল সবসময় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে জানে। তাই প্রথম দুটো ম্যাচের পরে যদি পাকিস্তানকে ভারত পিছনে ফেলে দিতে পারে, তবে ফাইনাল খেলাটা কোনও দূরঅস্ত নয়। আর যদি ফাইনালে ভারতকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলতে হয়, তাহলে মনে রাখতে হবে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড যত না সুবিধা আদায় করে নিতে পারবে তার চেয়ে ভারতীয় দল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে চ্যালেঞ্জকে বাজিমাৎ করবে।
সুরেশ রায়না জানিয়েছে, ভারতীয় দলে অভিজ্ঞ মহেন্দ্র সিং ধােনি রয়েছে। তিনি চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসাবে দলের হয়ে মাঠে নামবেন, আর তার আগে তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসাবে বিরাট কোহলির খেলাটা উপভােগ করতে হবে। যে কোনও মুহূর্তকে মােকাবিলা করবার জন্যে বিরাট ও ধােনির ভূমিকাকে আলাদা চোখে দেখবার সুযােগ থাকবে। ইংল্যান্ডের মাঠে রানের ধামাকাটা স্পষ্ট। ওই ধামাকাতে ভারত কিন্তু এগিয়ে থাকবে। ধােনির অভিজ্ঞতা এবং তাঁর মারমুখী ব্যাটিংটা ভারতের কাছে বড় হাতিয়ার। তারপরে বােলারদের অবস্থান যেখানে রয়েছে তাতে অবশ্যই বড় হাতিয়ার। বিশেষ করে পেসারদের উপরেই নির্ভর করতে হবে। সেই জায়গায় মহম্মদ শামি যেমন রয়েছেন, তেমনি আবার ভুবনেশ্বর ও বুমরাকেও অন্যভাবে দেখতে পাওয়া গেলেও অবাক হবার কোনও কারণ নেই।
আসলে এবারের ভারতীয় দল অনেক বেশি পরিণত এবং সচেতন। ভারতীয় দলের ধারাবাহিক সাফল্যই তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। বিপক্ষ দলের ভূমিকা সম্পর্কে রায়না বলেন, আগেও বিশ্বকাপ যখন ভারত জিতেছে তখনও কিন্তু এই ধরনের প্রশ্নের মুখােমুখি হতে হয়েছিল অধিনায়ক কপিল দেব ও মহেন্দ্র সিং ধােনিকে। সেদিনও কেউ ভাবতে পারে নি ভারতীয় দলের পরিবর্তনটা কিভাবে ঘটে যাবে। আর এবারে তাে অনেক অভিজ্ঞ খেলােয়াড়রা রয়েছে। তাঁদের ভাবনাকে অবশ্যই কাজে লাগাবেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বিরাট এমন একজন বড়মাপের অধিনায়ক তা নিয়ে কোনও কথা উঠতে পারে না। তারপরে ধােনির সহযােগিতা দলকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে।
রায়না আবারও বলেন, যে কোনও দলের কাছে প্রথম ম্যাচটা ভাইটাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অবশ্যই জিততে হবে ভারতকে। প্রথম ম্যাচটা জিততে পারলেই ভারত কিন্তু এগিয়ে থাকবে। ভারতের কাছে বাড়তি পাওনা হিসাবে বলতে হবে ব্যাটসম্যান ও বােলারদের সমন্বয় দলকে যেকোনও বিপদের মুখ থেকে তুলে আনতে পারবে। তাই ভারতীয় দল আবার বিশ্বকাপ জয়ের পথে অবশ্যই বড় পদক্ষেপ রাখবে।
একই ভাবনার কথা বলতে দ্বিধা করেননি ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মঞ্জরেকর। তিনি বলেন ভারতীয় দল এবার বিশ্বকাপ জেতার পথে বড় দাবিদার। সেদিক দিয়ে বলতে পারা যায়, ভারতীয় দলের সব খেলােয়াড়রাই এখন ঐক্যবদ্ধ। তারা বিশ্বকাপ জেতার জন্যে মানসিক দিক দিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে ।