এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ হকিতে ভারত আবার খেতাব তুলে নিল

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকিতে আবারও চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। মঙ্গলবার ফাইনালে দুরন্ত জয় তুলে আনল ভারত চিনের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে হরমনপ্রীত সিংরা পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব দেখাল। তবে এদিন ভারতীয় দলের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল আয়োজক দেশ চিন।

এবারের এই প্রতিযোগিতায় ভারতীয় হকি দল দাপটের সঙ্গে গ্রুপের খেলা থেকেই প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে ছেড়ে দিয়েছে। খেতাব জেতার আগেই প্রত্যেকটি ম্যাচেই ভারত জয় তুলে নিয়েছে। এমনকি গ্রুপের প্রথম খেলায় এই চিনকেই হারিয়ে দিয়েছিল ভারত। সেই ভারতীয় দল ফাইনালে চিনের বিরুদ্ধেও লড়াই করে জয় আনলেও, খেলার দ্বিতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত কোনও গোল পায়নি।

এদিনের খেলার শুরু থেকেই চিন অনেক বেশি আক্রমণাত্মক মনোভাব গ্রহণ করে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামে। প্রথম কোয়ার্টারে ভারত দু’টি পেনাল্টি কর্নার পেলেও, চিনের গোলরক্ষক দক্ষতার সঙ্গে তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এমনকি, চিনের খেলোয়াড়রাও পাল্টা আক্রমণ থেকে কখনওই দূরে সরে থাকেননি। তাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় কোয়ার্টারে চিনের খেলোয়াড়রা যেমন আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করতে থাকে, তেমনই পাল্টা আঘাত হানার চেষ্টা করতে থাকেন ভারতের খেলোয়াড়রা। সেই কারণেই ভারত ও চিনের খেলাটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। কখনওই বোঝা যায়নি, চিন হকিতে এইভাবে এগিয়ে আসতে পারে। একটা সময় ভারতীয় হকি দল বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গণে সেরা দলের তকমা ছিল। এমনকি অলিম্পিক্স গেমসে ভারতের সোনা বলতে হকি দলের পাশে লেখা হয়ে যেত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অন্যান্য দেশগুলি হকিতে অনেক প্রাধান্য দেখাতে শুরু করে। এমনকি ভারতীয় দল সবসময় চাপে পড়ে যেত। এই প্রথম পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে চিন এবারের প্রতিযোগিতায় ফাইনালে খেলার কৃতিত্ব দেখায়।


তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত কোনও পক্ষই গোল করতে পারেনি। চতুর্থ কোয়ার্টারে ৫১ মিনিটের মাথায় হরমনপ্রীত একক কৃতিত্বে বলটি টেনে নিয়ে বাড়িয়ে দেন যুগরাজ সিংকে। যুগরাজ তৎপরতার সঙ্গে চিনের প্রাচীরকে ভেদ করে বক্সের মধ্যে প্রবেশ করে দুর্দান্ত শটে গোল করে ভারতের জয় এনে দেন। গোল হওয়ার পরেই ভারতীয় দলের খেলোয়াড়রা আরও আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে চিনের রক্ষণভাগে হানা দিতে থাকেন। কিন্তু গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারেননি ভারতীয় খেলোয়াড়রা। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন ট্রফি হকি প্রতিযোগিতা ২০১১ সাল থেকে শুরু হয়। অতীতে দেখা গিয়েছে ফাইনালে বেশির ভাগ সময় ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু এবারে ব্যতিক্রম পাকিস্তানকে হারিয়ে চিন ফাইনালে ভারতের সামনে মুখোমুখি হয়েছিল। এবারের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান পেয়েছে পাকিস্তান।