কলকাতা ময়দানে গড়াপেটা নিয়ে কঠোর হচ্ছে আইএফএ

কলকাতা ময়দানে ফুটবলকে ঘিরে গড়াপেটার ইতিহাস আজকের নয়। এই ধারা দীর্ঘদিন ধরে বসত করেছে। এমনকি, চ্যাম্পিয়ন দল থেকে একেবারে তলানিতে থাকা ক্লাবগুলি এই দোষে দুষ্ট হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর আবার কলকাতা ময়দানে থাবা মেরেছে বেটিং চক্র। তারা বিভিন্ন খেলাকে সামনে রেখে রমরমা হয়ে ওঠে এই চক্র। এমনকি এই চক্রে পড়ে গত মরশুমে টালিগঞ্জ অগ্রগামী ও ওয়াড়িকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু তাদের সমীক্ষা করে আইএফএ বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছিল। এমনকি দু’বছর তাদের সাসপেন্ড করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে শাস্তিপ্রাপ্ত দু’টি ক্লাব আইএফএ’কে অনুরোধ করেছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য এবং তাদের খেলতে দেওয়া হোক ময়দানে। শেষ পর্যন্ত আইএফএ তাদের খেলার সুযোগ করে দেয় এবং বেশকিছু অর্থ জরিমানা করা হয়। গড়াপেটা নিয়ে আইএফএ’র সহসভাপতি সৌরভ পাল ও স্বরূপ বিশ্বাস মুখর হয়ে উঠেছিলেন। তাদের প্রতিবাদের জন্যই বাধ্য হয়ে গত সোমবার গভর্নিং বডির সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ওই দুই সহসভাপতি ওই সভা বয়কট করেন। তবে পরবর্তী সময়ে আলোচনায় বসেছিলেন সভাপতি অজিত ব্যানার্জি, সচিব অনির্বাণ দত্ত, সহসভাপতি সৌরভ পাল ও স্বরূপ বিশ্বাস। আলোচনার সময় বেশকিছু প্রশ্ন করেন দুই সহসভাপতি। সেই প্রশ্নের উত্তরে সভাপতি ও সচিব আইএফএ’র সমন্বয়কে তুলে ধরেন।

আইএফএ গড়পেটার ব্যাপারে কিছু নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে। এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি ফুটবলার ট্রান্সফার এবং চিকিৎসাজনিত কারণে খেলোয়াড় বদল করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মে সংশোধন করা হয়েছে। পরের বছর কলকাতা লিগ থেকেই তা চালু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আইএফএ।

আইএফএ জানিয়েছে, কোনও ক্লাব যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ম্যাচ গড়াপেটার চেষ্টা করে বা ফলাফলকে প্রভাবিত করে বা খেলার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার জন্য এবং কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে তা হলে সেই ক্লাবের থেকে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পাওয়া সব পয়েন্ট কেড়ে নেওয়া হবে। সেই ক্লাবকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি আইএফএ-র সব প্রতিযোগিতা থেকে অন্তত দু’বছরের জন্য নির্বাসিত করা হবে অথবা স্থায়ী ভাবে আইএফএ-র অনুমোদন বাতিল করা হবে।
অপরাধ গুরুতর বলে বিবেচিত হলে যুক্ত থাকা খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তা অথবা অপরাধে যুক্ত থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে আজীবন নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।


এ ছাড়া, চিকিৎসাজনিত কারণে ফুটবলার পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্লাবকে মেডিক্যাল কমিটিতে সরকারি ভাবে আবেদন জমা দিতে হবে। সেটি দিতে পারেন একজন স্বীকৃত চিকিৎসক। সমস্ত প্রাসঙ্গিক মেডিক্যাল পরীক্ষা এবং রিপোর্ট-সহ খেলোয়াড়ের অক্ষমতা স্পষ্টভাবে জানাতে হবে।

এ ছাড়াও, প্রিমিয়ার ডিভিশনের ক্লাবগুলির ক্ষেত্রে প্রতিটি ট্রান্সফারের জন্য বাধ্যতামূলক ট্রান্সফার ফি হিসাবে ১৫,০০০ টাকা অথবা খেলোয়াড়ের চুক্তির মূল্য অনুযায়ী ২০%-এর মধ্যে যেটি বেশি সেই অর্থ ধার্য করা হবে। প্রথম ডিভিশন ক্লাবগুলির জন্য ১০,০০০ টাকা এবং অন্যান্য বিভাগের জন্য ৩,০০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। খেলোয়াড়ের রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ টাকা দিতে হবে। একইসঙ্গে, বাধ্যতামূলক নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।