বিশেষ করে ক্রিকেট জগতের তারকাদের মধ্যে একটা ব্যক্তিত্বের সংঘাত দেখতে পাওয়া যায়। তা সবাই জানেন। সারা বিশ্বের মানুষ সে দৃশ্য দেখেছেন। তাই মাঠে অনেক সময় ক্রিকেটাররা নিজেদের মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে প্রায় ১৮ বছর যুক্ত রয়েছেন বিরাট কোহলি। কোহলিকে অনেক সময় দেখতে পাওয়া গেছে, জুটি বেঁধে ভারতীয় দলকে বড় জায়গায় নিয়ে গেছেন। আবার এও দেখা গেছে, কোহলির ব্যক্তিত্বের সংঘাত ঘটেছে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কোহলি স্পষ্ট জানান, বৃহস্পতিবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সঙ্গে খেলা রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসের। তার আগেই খোলাখুলিভাবে কোহলি বলেছেন, ক্রিকেট জীবনে কারওর উপরে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করিনি। সবসময় সতীর্থ খেলোয়াড়দের কীভাবে অনুপ্রাণিত করা যায়, সেকথাই ভেবেছি। এমনকি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলার প্রবণতাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমার সঙ্গে যিনি জুটি বাঁধেন, তাঁকেও সহযোগিতা করেছি, কীভাবে ভালো খেলা যায়।
এই প্রসঙ্গে বিরাট কোহলি বলেন, ভারতের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হয়। যে কোনও সময় খেলার চরিত্র বদল করে দেওয়ার জন্য মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা বড় ভূমিকা নিয়ে থাকেন। সম্প্রতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে শ্রেয়স আইয়ারের নামটা এখন বড় করে দেখা দিয়েছে। শ্রেয়স খেলতে নেমে প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিয়ে ভারতীয় দলকে শুধু ভালো জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন তাই নয়, জয়ের রাস্তাটা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। কোহলি এবার বলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খুব ভাইটাল সময়ে শ্রেয়সের সঙ্গে আমি জুটি বেঁধেছিলাম। শ্রেয়স দায়িত্ব নিয়ে যেমন ভালো খেলেছেন, আমার তো মনে হয়েছে, ভারতের অলরাউন্ডার হিসেবে শ্রেয়সের নামটা একেবারে পয়লা সারিতে চলে আসবে। ব্যাটে যেমন রান করছেন, আবার বোলার হিসেবেও নজর কাড়ছেন। তখন আমার সঙ্গে কোনওরকম ব্যক্তিত্বের সংঘাত ঘটেনি শ্রেয়সের। যদি শ্রেয়স ছাড়া অন্য কোনও খেলোয়াড় থাকতেন, তাঁর সঙ্গেও সহযোগিতা করতাম এবং সাহস দিতাম ভালো খেলার জন্য। আমি কোনও সময়েই কারও উপরে প্রভাব খাটিয়ে খেলতে রাজি নই। পরিস্থিতি যেমন হয়, সেই অনুসারে খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি।
একমাত্র ক্রিকেটার বিরাট কোহলি ২০০৮ সাল থেকে আইপিএল ক্রিকেটে একটা দলেই খেলে চলেছেন। যখন তিনি বেঙ্গালুরু দলের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন তিনি তরুণ। পরবর্তী ক্ষেত্রে দলের অধিনায়কও হয়েছিলেন। চার বছর আগে অধিনায়কের ব্যাটনটা তিনি আর নিজের হাতে রাখেননি। নিঃসন্দেহে তিনি দলের সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার। এখনও সেই প্রথম দিনের কথা কোহলিকে ভাবিয়ে রাখে। তিনি বলেন, প্রথম দিনের ড্রেসিং রুমে অনিল কুম্বলে ও রাহুল দ্রাবিড়ের মতো ক্রিকেটারদের পেয়েছিলাম। সেইভাবে কারও সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। একমাত্র জাহির খানকেই চিনতাম। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম বছরটা মানসিক একটা চাপ ছিল। সেই চাপ ধীরে ধীরে অতিক্রম করেছি। শুধু তাই নয়, প্রথম বছরে টপ অর্ডারে খেলার সুযোগ আসেনি। ধীরে ধীরে নিজেকে আরও বেশি পরিণত করে টপ অর্ডারে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। এমনকি মাঝে মাধ্যে নিচের দিকেও খেলতে হয়েছে। দু’তিন বছর টপ অর্ডারে খেলা শুরু করে নিজেকে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। জীবনে উত্থান-পতন আসে। তাই নিয়ে যদি ভাবতে বসে পড়ি, তাহলে নিজের প্রতি আস্থাই হারিয়ে যাবে। এখনও পর্যন্ত আইপিএল ক্রিকেটে সর্বাধিক রান করার কৃতিত্বে বিরাট কোহলির নামটা বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে। বেঙ্গালুরুর হয়ে তিনি ২৫৬টি ম্যাচ খেলেছেন। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৮ হাজার ১৬৮ রান। তার মধ্যে রয়েছে ৮টি শতরান ও ৫৭টি অর্ধশতরান। তাই এখন অপেক্ষা করতে হবে, আইপিএল ক্রিকেটে পরবর্তী ম্যাচগুলো কীভাবে খেলেন বিরাট কোহলি।