গতবারের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড দল শনিবার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম মাচে খেলতে নেমে গুপ্টিল-মুনরাের হাত ধরে দশ উইকেটে লঙ্কাবধ করে প্রথম জয় তুলে নিল।
এবারের নিয়ম যেহেতু আলাদা সেহেতু প্রতিটা দল চাইবে সহজ ম্যাচগুলিকে আরাে সহজ করে জয় তুলে নিয়ে নিজেদের রানরেট বেশি রাখা। কারণ, এবারের নিয়ম অনুযায়ী পয়েন্ট টেবলে প্রথম চারটি স্থানে থাকা দল সেমিফাইনালে খেলার যােগ্যতা অর্জন করতে পারবে। সেখানে হয়তাে খেলার শেষদিকে এমন কোনও অবস্থা দাঁড়াল সেখানে রানরেটের প্রয়ােজন হতে পারে, এবং রানরেটটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বিশ্বকাপের শেষ চারে পৌছানাের জন্য। তাই তাে ক্যারিবিয়ান ও নিউজিল্যান্ড দল নিজেদের বিশ্বকাপে প্রথম জয়টা বেশ ভালােভাবে যেমন তুলে নিল ঠিক তেমনই রানরেটটা ভালো রাখল।
ম্যাট হেননির বােলিং দাপটে শ্রীলঙ্কা দলের ইনিংস থেমে যায় মাত্র ১৩৬ রানে। ১৩৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৬.১ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে গুপ্টিল- মুনরাের অপরাজিত অর্ধশতরানের উপর ভর করে নিউজিল্যান্ড জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ১৩৭ রান।
সাত ওভার হাত ঘুরিয়ে সাতাশ রান খরচ করে তিনটি উইকেট সংগ্রহ করে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ম্যাট হেনরি। হেনরির পাশাপাশি লুকি ফার্গুসন তিনটি উইকেট পেলেও, ট্রেন্ট বােল্ট মাত্র একটি উইকেট সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া গ্র্যান্ডহােম, নিশাম ও স্ট্যান্টনাররা যৌথভাবে একটি করে উইকেট নিজেদের দখলে করেছেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সহজ ম্যাচে সহজভাবে জয় তুলে নিয়ে প্রথম ম্যাচ থেকে দু’পয়েন্ট সংগ্রহ করে রানরেট ভালাে রাখার জন্য ক্যারিবিয়ানরা পয়েন্ট টেবলে প্রথম স্থান ধরে রেখেছেন। তবে নিউজিল্যান্ড এদিন ১৬.১ ওভারে বিনা উইকেটে রান তুললেও, দু’পয়েন্ট সংগ্রহ করেও ক্যারিবিয়ানদের টপকে প্রথমস্থানে যেতে পারল না। তবে, ইংল্যান্ডকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয়স্থানে রইল নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচে আলাদা করে বলার মতন কিছুই নেই, ডার্ক হর্স নিউজিল্যান্ড দল তাদের কাজের কাজটা দেখালেন। তবে, প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত বােলিং পারফরমেন্স করে দেখানাের পর দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে ক্যারিবিয়ানরা এই বােলিং লাইনআপ ভেঙে চুড়ে চারশাের বেশি রান তুলে ফেলেছিল। তাই মহারণে নেমে নিউজিল্যান্ড বােলাররা নিজেদের কতটা গুছিয়ে নিয়েছে সেটাই দেখার বিষয় ছিল। আর সেটাই হল।
টসে জিতে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়ামসন প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তটা যে কতটা কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিল সেটা তাঁর দলের বােলাররা ভালােভাবে অধিনায়ককে বুঝিয়ে দিলেন। শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ধস নামাতে শুরু করে দেওয়ার কাজটা করেন। করুণারত্নে (৫২), কুশল পেরেরা (২৯) ও থিসারা পেরেরা (২৭) ছাড়া আর কোনও লঙ্কার ব্যাটসম্যানরা দু’অঙ্কের রানের গন্ডি টপকাতে পারেননি।
নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে পুরােপুরি চাপের মধ্যে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা, একটা সময় খেলা দেখে মনে হচ্ছিল তারা একশাে রানের গন্ডিও টপকাতে পারবে না। কিন্তু শেষ অবধি শ্রীলঙ্কা কোনও রকমে মান সম্মান বাঁচিয়ে ১৩৬ রানে ইনিংস শেষ করতে সক্ষম হয়। ১৩৭ রানের সহজ লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে মার্টিন গুপ্টিলের অপরাজিত ৫১ বলে ৭৩ ও মুনরাের অপরাজিত ৪৭ বলে ৫৮ রানের উপর ভর করে নিউজিল্যান্ড কোনও উইকেট না হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় ১৩৭ রান।