• facebook
  • twitter
Tuesday, 8 April, 2025

ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হওয়া ঝুলে রইল কলকাতা লিগে

ডায়মন্ড হারবার গরহাজির মাঠে

ফাইল চিত্র

ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা আকাশ ব্যানার্জি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, কলকাতা ফুটবল লিগের খেলা নিয়ে আইএফএ যে খামখেয়ালিপনা করেছে, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আগেই জানা ছিল, আরএফডিএল-এর ম্যাচ দেওয়া হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু রাতারাতি কলকাতা ফুটবল লিগে গুরুত্বপূর্ণ ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের খেলাটি দেওয়া হয় ১৩ ফেব্রুয়ারি। প্রথমে এই খেলাটি ছিল নৈহাটি স্টেডিয়ামে। তখনই ডায়মন্ড হারবার ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা আইলিগ-টু’তে খেলছে।

আরএফডিএল-এর ম্যাচও রয়েছে। একদিনেও বিশ্রাম দেওয়া হল না, কিন্তু পরপর দু’দিন ম্যাচ খেলতে হবে, সেটা কী করে সম্ভব? এমনকি আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি আই লিগ-টু-এর ম্যাচ। আর এই ম্যাচটি বাংলার ফুটবলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই দুই ম্যাচ বাদ দিয়ে কলকাতা ফুটবল লিগে খেলা সত্যিই অসম্ভব। সেই কারণে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাদের পক্ষে কলকাতা ফুটবল লিগে খেলা সম্ভব নয়। আবার জানানো হয়েছিল, সন্তোষ ট্রফি জয়ের পরে বেশ কিছুদিন সময় ছিল যখন কোনও খেলাই ছিল না। তখন কেন দেওয়া হয়নি? তবুও আমরা চেষ্টা করেছিলাম ৬ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ম্যাচটা দেওয়া হোক। কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করেননি আইএফএ’র কর্মকর্তারা। বরঞ্চ নৈহাটি স্টেডিয়াম পরিবর্তন করে তা নিয়ে আসা হয় কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে। তার পরের ঘটনা মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে। ডায়মন্ড হারবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ১৪ ফেব্রুয়িারির খেলাটি বাতিল করা হয়েছে। এই ব্যাপারে ক্লাব সচিব ও প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলেছেন, আইএফএ’র এই খামপেয়ালিপনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তবুও আইএফএ’র সঙ্গে সবরকম সহযোগিতার কথা বলে ক্রীড়াসূচি পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল। তাতেও কর্ণপাত করা হয়নি। কলকাতা ফুটবলে উন্নতি করার জন্য লিগের খেলাগুলিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত।

এদিকে জানা গেছে সুপার সিক্সের খেলায় প্রথম থেকেই ঝামেলা তৈরি হয়। বেশ কয়েকটি ক্লাব নাম প্রত্যাহার করে বলে, তাদের পক্ষে খেলা সম্ভব হবে না। চুক্তিবদ্ধ ফুটবলাররা ইতিমধ্যেই দেশে ফিরে গিয়েছেন। সাধারণত তিন মাসের মধ্যে লিগের খেলা শেষ করতে হয়। তা না হওয়ায় চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়রা আর থাকতে চাননি। এটাও ঠিক, এই ক্লাবগুলোর এতদিন ধরে খেলোয়াড়দের পিছনে অর্থ ব্যয় করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। নাম প্রত্যাহার করে নেয় ভবানীপুর, খিদিরপুর, কাস্টমস ও অন্য দলগুলি। তাই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার জন্য ডায়মন্ড হারবার ও ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচটি এমন জায়গায় পৌঁছয়, যা খেদাব জয়ের জন্য প্রয়োজন। সেই খেলাটি বৃহস্পতিবার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে আইএফএ’র ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী নির্দিষ্ট করা হয়।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এই ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। তাই তাদের জন্যই এই খেলাটি সংগঠিত করা হয়েছে বলে ময়দানে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এদিন মাঠে ইস্টবেঙ্গল দলের খেলোয়াড়রা হাজির হলেও ডায়মন্ড হারবারের দেখা মেলেনি। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে রেফারিরা মাঠ ছেড়ে চলে আসেন। যে টিম লিস্ট দেওয়া হয়েছিল তাতে লাল-হলুদ ব্রিগেডে ফুটবলারদের নাম থাকলেও ডায়মন্ড হারবারের কোনও ফুটবলারের নাম ছিল না। কোনও দল যদি মাঠে হাজির না হয়, সেক্ষেত্রে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেন রেফারিরা। কিন্তু অবাক হতে হয়, ম্যাচ রেফারি সুব্রত দাস রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে তিনি লিখেছেন, ম্যাচটি পরিত্যাক্ত। আবার বলেছেন, ম্যাচটি ফরফিট। ইংরেজি শব্দ অনুযায়ী ফরফিটের অর্থ বাজেয়াপ্ত। ম্যাচটি কী কারণে বাজেয়াপ্ত হল, বোঝা গেল না। তিনি লিখে ফেললেন।

আবার পরিত্যাক্ত কথাটিও বললেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গেলে বলতে হয়, মাঠে কোনও গণ্ডগোল, নেট বা বারপোস্ট না থাকা, আবার প্রবল বৃষ্টি বা ঝড়ে ম্যাচ পরিচালনা করার অসুবিধা হলে তখনই ম্যাচ কমিশনার লিখতে পারেন ম্যাচটি পরিত্যাক্ত। সবাই জানে, বিপক্ষ দল যদি খেলতে না আসে, তখন হাজির থাকা দলকে ওয়াকওভার দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ম্যাচ কমিশনার তাঁর রিপোর্টে লিখলেন না। তিনি রিপোর্টটা আইএফএ’র কোর্টে ফেলে দিলেন। বলা হল, আইএফএ’র সংবিধান অনুযায়ী যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা লিগ সাব-কমিটিই নিতে পারে। এ তো অবাক কাণ্ড! আগে এই ধরনের ম্যাচে অনেক ক্লাবকেই ওয়াকওভার দিয়ে ৩ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে এবং তার সঙ্গে তিনটি গোলও দেওয়া হয়েছে। হয়তো লাগ সাব কমিটি সবুজ সংকেত দিতে পারে চলতি মরশুমে কোন দল চ্যাম্পিয়ন হবে। কিন্তু এদিকে ডায়মন্ড হারবার ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা হয়তো আইনের পথে যাবে। সেক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গলকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন হবে। এদিন ইস্টবেঙ্গল লিগ খেতাব জয়ের ক্লাব পতাকা তোলেনি।

ভবানীপুর ক্লাবের সচিব সৃঞ্জয় বসু বলেছেন, একটা ক্লাবকে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার জন্য আইএফএ যে ভূমিকা নিয়েছে, তা সঠিক নয়। মনে রাখতে হবে, আইএফএ সমস্ত ক্লাবের কথা ভাববে। তা না করে অন্য পথে চলার চেষ্টা করেছে।

News Hub