আত্মবিশ্বাসকে হাতিয়ার করেই ইস্টবেঙ্গল চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে চেন্নাইকে

ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি— নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে প্রথম জয় তুলে নেওয়ার পরে লাল-হলুদ শিবিরের আত্মবিশ্বাসের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সেই আত্মবিশ্বাসকে হাতিয়ার করে শনিবার চেন্নাইয়েন এফসি’র বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামছে ইস্টবেঙ্গল। অবশ্য চেন্নাইয়ের মাঠে খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। তাই আবহাওয়া একটা সমস্যা হতে পারে। এখনও পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল লিগ টেবলে নিচের সারিতেই রয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে, চেন্নাই দল সবসময় শারীরিক ফুটবল খেলে থাকে। সেই শারীরিক ফুটবলকে কীভাবে সামাল দিতে হবে, সেই বিষয়ে কোচ অস্কার ব্রুজো খেলোয়াড়দের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন অনুশীলনের মধ্য দিয়ে। তাই চেন্নাই উড়ে যাওয়ার আগে কোচ বলেছেন, আইএসএল ফুটবলে প্রতিটি ম্যাচের চরিত্র একেবারে ওপেন।

যেভাবে প্রতিটি দলের রেজাল্ট দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আশা করা যেতেই পারে, যে কোনও দল জয়ের হাসি হাসতে পারে। তবে আমাদের একটু অসুবিধা হতে পারে ভিনরাজ্যে গিয়ে খেলার জন্য। তার জন্য নিশ্চয়ই কৌশল অবলম্বন করেই খেলতে হবে। যেহেতু দক্ষিণ ভারতে দিন-রাতের উষ্ণতা ও তাপমাত্রার সেইভাবে কোনও তফাত হয় না। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে সেখানকার আবহাওয়া অনেকটাই বদলে গিয়েছে। প্রথমে মাঠে নেমে আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করতে হবে, তারপরে ফুটবলের রণক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে হবে।

গত দুটো ম্যাচে চেন্নাই জয়ের মুখ দেখতে পায়নি। তাই প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে জেতাটাও বেশ কঠিন জায়গায় পৌঁছে যাবে। তবে কোচ অস্কার ব্রুজো স্বীকার করেছেন, চেন্নাই দল বেশ শক্তিশালী। তারপরে তাঁদের কোচও বেশ ভালো। জানা গেছে, আইএসএল ফুটবলে সেরা তিন কোচের মধ্যে তিনি অন্যতম। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাদের খেলা দেখেছি। সেখানে উপলব্ধি করতে পেরেছি, চেন্নাইয়ের শক্তি কোন জায়গাটায় বেশি আবার দুর্বলতা কোথায় আছে। তাই বিচার করেই খেলার জন্য ফুটবলারদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঠিকমতো বল ধরে খেলতে পারলে ইস্টবেঙ্গলের জয় আসাটা খুব একটা কঠিন হবে না। গোলের সুযোগ এলেই গোল করতে হবে। আর প্রতিপক্ষ দলের আক্রমণে উৎসটা কোথায়, তা উপলব্ধি করেই সেখানেই স্তব্ধ করে দিতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনে মাঝমাঠের খেলোয়াড় বাড়ানো হতে পারে। ওদের কখনওই সেটপিস করতে সুযোগ দেওয়া যাবে না। তাহলেই সমস্যা তৈরি হতে পারে। এগুলি এড়িয়েই অন্যরকম পরিকল্পনায় চ্যালেঞ্জটা ছুঁড়ে দিতে হবে।


তাহলে কী হবে? কোচের জবাব, সম্প্রতি ঘরের মাঠে ৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারা গেছে। সেই সুবাদে লাল-হলুদ শিবিরের ফুটবলাররা ভালো খেলার জন্য তৈরি রয়েছেন। সেই কারণেই আক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ তৈরি হলে তা সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। তাহলেই জয় আসবে। দলের চার বিদেশি ফুটবলার হেক্টর ইউসতে, হিজাজি মাহের, সাউল ক্রেসপো ও ক্লেটন সিলভারা তিনটি করে হলুদ কার্ড দেখেছেন। সেখানে দুশ্চিন্তা তো আসতেই পারে। তাই অত্যন্ত বুদ্ধি সহকারে খেলতে হবে দলকে। চেন্নাইয়ের পরে খেলতে হবে ওড়িশার বিরুদ্ধে। এটা মনে রাখতে হবে, দলের মধ্যে সবসময় কার্ড ও চোটের সমস্যা থাকবে। সেই সমস্যা নিয়েই দল গঠন করতে হয়।

সমস্যা তো রয়েছে। ইতিমধ্যে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর ইউসতে সম্ভবত অনুশীলনে চোট পান। তাই চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে তিনি খেলতে পারবেন কিনা, তা কোচ স্পষ্ট করেননি। দল যে আগের থেকে ভালো খেলছে, সেকথা বলতে দ্বিধা করেননি কোচ ব্রুজো। কোচ মনে করেন, দলকে এমন জায়গায় নিয়ে আসতে পারা গিয়েছে, তার জন্য ফুটবলারদের প্রশংসা করব। গত ম্যাচে নন্দকুমার ও নাওরেম মহেশকে ছাড়াই নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে জয় এসেছে, সেই কারণে দলে অনেক বিকল্প ফুটবলার রয়েছেন, যাঁরা ভালো খেলে দলের জয়ের পথকে সহজ করে দেন।

দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার জিকসন সিং আগের থেকে ভালো জায়গায় রয়েছেন। তিনি কোচের নির্দেশে যে কোনও জায়গায় খেলতে রাজি। কোচ যে ভূমিকায় আমাকে খেলতে বলবেন, সেই ভুমিকায় খেলতে কোনওরকম অসুবিধা হবে না। মাঠে নামলে সেরা খেলাটাই উপহার দিয়ে দলের পাশে থাকতে চাই। সেই কারণেই বলতে দ্বিধা নেই, আত্মবিশ্বাসের আবহাওয়া ইস্টবেঙ্গল শিবিরে বইতে শুরু করেছে, তাতে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয় পাওয়াটা কোনও কঠিন
হবে না।