ইস্টবেঙ্গল বড় ব্যবধানে হারাল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সকে

কলকাতা ফুটবল লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলায় ইস্টবেঙ্গল শনিবার বড় জয় পেল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে। খেলায় লাল-হলুদ ব্রিগেড ৪-০ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে নিল। যখন ঘরের মাঠে খেলা চলছে, তখনই খবর আসে রবিবারে ডুরান্ড কাপের ডার্বি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। এই খবর শুনেও কোনওরকম বিচলিত হননি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। বরঞ্চ বিনো জর্জের ফুটবলাররা আরও বেশি আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। ইস্টবেঙ্গল এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রয়েছে এবং গ্রুপ শীর্ষে তাদের অবস্থান রয়েছে।

নিঃসন্দেহে ঘরের মাঠে ইস্টবেঙ্গল সবসময়ই দাপট দেখিয়ে খেলতে জানে। খেলার প্রথম থেকেই আক্রমণে ঝড় তুলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল শিবির থেকে। সেই আক্রমণ রুখে দেওয়ার জন্য কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা বেশ সচেতন ছিলেন। এমনকি ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ শুরুতেই ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কালীঘাট স্পোর্টসের ফুটবলাররা। কিন্তু ম্যাচের ২৬ মিনিটের মাথায় দারুণ গোল করে জেসিন টিকে। মাঝেমধ্যেই প্রতিপক্ষ কালীঘাট স্পোর্টসের ফুটবলাররা আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু বিরতি পর্যন্ত আর গোলের ব্যবধান বাড়েনি। বিরতির আগেই মুষলধারে বৃষ্টি হয়। সেই বৃষ্টিতে খেলোয়াড়রা ঠিকমতো বল দেখতে পাচ্ছিলেন না। তাই কালীঘাট স্পোর্টসের গোলরক্ষক রেফারির কাছে আবেদন করেন খেলা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু রেফারি সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে খেলা চালিয়ে যেতে বলেন।

বিরতির পর খেলা শুরু হতেই ইস্টবেঙ্গলের ঝোড়ো আক্রমণের কাছে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের রক্ষণভাগ ভেঙে পড়ে। একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে ইস্টবেঙ্গল খেলতে থাকে। প্রথম পর্বে কালীঘাট স্পোর্টস যেভাবে খেলছিল, তার কোনওরকম প্রকাশ দেখতে পাওয়া গেল না দ্বিতীয় পর্বে। তারা ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে থাকে। বিশেষ করে বড় দলের বিরুদ্ধে খেলতে গেলে কম শক্তিশালী দলগুলি সবসময়ই রক্ষণাত্মক ভূমিকা বেশি নেয়। কিন্তু হঠাৎই দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তারা আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করে একের পর এক গোল হজম করতে থাকে। খেলার ৫৬ মিনিটের মাথায় দূরপাল্লার দুরন্ত শটে গোল করেন ভনসপাল। এই গোলটি দেখে অনেকেই হাততালি দিতে থাকেন গোলদাতার উদ্দেশ্যে। কালীঘাট স্পোর্টস বিক্ষিপ্ত আক্রমণ করলেও কোনও কাজে আসেনি।


ইস্টবেঙ্গলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন আজাদ। তিন গোল হয়ে যাওয়ার পরেই কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের ফুটবলাররা হাল ছেড়ে দেন। ৮০ মিনিটের মাথায় ভনসপাল আবার গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ইস্টবেঙ্গলের খেলা থাকলে সাধারণত খেলা দেখার জন্য দর্শকদের মধ্যে যে উন্মাদনা থাকে, তা দেখতে পাওয়া গেল না গ্যালারির দিকে তাকিয়ে। মুষ্টিমেয় কিছু সমর্থক এদিন মাঠে এসেছিলেন। অতীতে এই ধরনের খেলা দেখার জন্য প্রচুর দর্শক মাঠে আসতেন নিজের প্রিয় দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করার জন্য। বর্তমানে কলকাতা ময়দানে এই অবস্থা দেখে দীর্ঘদিনের এক ক্লাব কর্মকর্তার অভিমত, এইভাবে ফুটবল খেলা চলে না।