আইএসএল ফুটবলের লিগ টেবলে লাস্ট বয় হিসেবে যে নামটা লেখা ছিল তা হল ইস্টবেঙ্গল। অবশেষে লাস্ট বয়ের তকমাটা মুছে ফেলতে পারল লাল-হলুদ শিবির। নতুন কোচ অস্কার ব্রুজো আসার পরে দলের চেহারা বদলে গেছে। সমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি কর্মকর্তারাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন দলের পারফরম্যান্স দেখে। কিন্তু কোচ অস্কার ব্রুজো সবাইকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, লাল-হলুদ দল অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সেই ভাবনাতেই লাল-হলুদ ফুটবলাররা নিজেদের শুধু তৈরিই করেননি, দলের জয় দেখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। সেই লক্ষ্যেই শনিবার চেন্নাইয়ের মাঠে দুরন্ত ফুটবল খেলল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গল আবার জিতল আইএসএল ফুটবলে। ঘরের মাঠে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডকে হারিয়ে প্রথম জয় দেখেছিল। আর তারপরেই চেন্নাইতে উড়ে যায় অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে। চেন্নাইয়েন এফসি’র ঘরের মাঠে দাপট দেখিয়ে ইস্টবেঙ্গল ২-০ গোলে জয় তুলে নেয়। ইস্টবেঙ্গল ১৩ নম্বর থেকে দুই ধাপ এগিয়ে এল।
এদিন খেলার শুরু থেকেই চেন্নাই দল ইস্টবেঙ্গলকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছিল। এমনকি প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের থেকে চেন্নাই দল অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে। গোল করার মতো সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেনি। কিন্তু পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে ইস্টবেঙ্গল চেন্নাইকে মাঝেমধ্যেই ভয় দেখিয়েছে। তবে, ইস্টবেঙ্গলও প্রথম পর্বে গোলের মুখ দেখেনি। আসলে কার্ডের সমস্যায় গত ম্যাচে নন্দকুমার খেলতে না পারায় এদিন নন্দকুমারের সঙ্গে পি ভি বিষ্ণুকে প্রথম একাদশে রাখা হয়। কেরলের এই ফুটবলারকে ভরসা করেই কোচ নতুন ছক তৈরি করেছিলেন। সাউল ক্রেসপোর বাড়ানো বলে মহম্মদ নাওয়াজের ভুলকে কাজে লাগিয়ে গোল করতে সমস্যা হয়নি পি ভি বিষ্ণুর। সারামাঠ জুড়ে তিনি খেলেছেন। প্রতিপক্ষ দলকে ব্যস্ত রেখেছেন। যার ফলে চেন্নাই দলের ফুটবলাররা সেইভাবে আঘাত হানতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। পি ভি বিষ্ণু কখনও উইং দিয়ে আবার কখনও মাঝমাঠ থেকেই একক কৃতিত্বে বল টেনে নিয়ে চেন্নাই শিবিরের বিপদ ডেকে নিয়ে এসেছেন। কোচ যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, ঠিক সেই ভাবে পি ভি বিষ্ণু খেলে সাফল্য পেলেন। এগিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল কোনও সময়ের জন্যই আক্রমণ থেকে সরে আসেনি। পাল্টা আক্রমণ হানার চেষ্টা করলেও চেন্নাই দলের ফুটবলাররা ইস্টবেঙ্গলকে চাপে রাখতে পারেনি।
এদিকে বিষ্ণুকে গোলের পাস বাড়ানোর পরেই ক্রেসপোকে উঠে যেতে হয়েছে। যখন তিনি বলটি বাড়িয়েছিলেন, তখন তাঁর পাটি মুচকে যায়। তখন তাঁকে মাঠের বাইরে নিয়ে আসা হয় স্ট্রেচারে করে। তবে এরপর যেটা করেছেন স্প্যানিশ ফুটবলার তা হতাশাজনক। তিনটি হলুদ কার্ড আগেই দেখেছিলেন, রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকার সময় ওই ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখেন। পরপর চারটি হলুদ কার্ড দেখায় পরের ম্যাচে ক্রেসপোকে পাওয়া যাবে না। তবে, ক্রেসপোর এই ব্যবহারে ক্ষুব্ধ কোচ অস্কার ব্রুজো। খেলা যতই গড়িয়েছে, ততই ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণের ধার জোরালো হয়। দ্বিতীয় পর্বে ৮৪ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় গোলটি আসে। জয়সূচক গোলটি করেন দূরপাল্লার শটে জিকসন সিং।