• facebook
  • twitter
Sunday, 29 December, 2024

ইস্টবেঙ্গল জয়ের হ্যাটট্রিক দেখতে পেল না

হায়দরাবাদের সঙ্গে ড্র

নিজস্ব চিত্র

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সেই পুরনো রোগ ফিরে এল। আইএসএল ফুটবলে এবারে প্রথম জয়ের হ্যাটট্রিকের হাতছানি ছিল লাল-হলুদ শিবিরে। কিন্তু তা হল না। হায়দরাবদের সঙ্গে ১-১ গোলে খেলা ড্র করে কলকাতায় ফিরে আসতে হচ্ছে কোচ অস্কার ব্রুজোর দলকে। বছরের শেষে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ‘ড্র’ উপহার পেলেন। সবাই আশা করেছিলেন, ইস্টবেঙ্গল জয় তুলেনিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে। ৯০ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও জয়ের হাসি হাসতে পারলেন না ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা। একেবারে শেষ মুহূর্তে হায়দরাবাদকে সমতায় ফেরান মনোজ মহম্মদ। তাই দুই দলকেই ১ পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল।

অস্কার ব্রুজো কোচ হওয়ার পরে লাল-হলুদ শিবিরের চেহারাই বদলে গিয়েছিল। তাই সবাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ফুটবলারদের কাছ থেকে দুরন্ত ভূমিকা দেখতে পাওয়া যাবে। পরপর দুটো ম্যাচে যেভাবে তাঁরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন, তা অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার মতো। পরপর দুটো ম্যাচ জেতার পরে ইস্টবেঙ্গল শেষ ছয়ের খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল। সেই জায়গায় শনিবার হোঁচট খেতে হল হায়দরাবাদ ও ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচটি ড্র হওয়ার কারণে। হায়দরাবাদ এই মুহূর্তে নীচের সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। হয়তো সেই কারণে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা ভেবেছিলেন খুব সহজেই প্রতিপক্ষ দলকে পরাস্ত করা সম্ভব হবে। কিন্তু ক্লেটনরা তা পারলেন না। আসলে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠটা এদিন অনেকটাই নিষ্প্র্ভ ছিল। সাধারণত মাঝমাঠ থেকেই আক্রমণের উৎসটা তৈরি হয়। সেই আক্রমণ এদিন গড়ে তুলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। যার ফলে হায়দরাবাদের রক্ষণভাগে লাল-হলুদ ফুটবলাররা সেইভাবে দাপট দেখাতে পারেননি। মাঝে একবার ক্লেটনকে যেভাবে ট্যাকল করা হয়েছিল, তখন রেফারির কাছে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা পেনাল্টি দাবি করতে থাকেন। কিন্তু রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি। খেলার প্রথমার্ধে কোনও পক্ষই গোল পায়নি।

দ্বিতীয় পর্বের শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গল ছক বদলে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা করে। একটা সময় একেবারে গোলের কাছে বল পেয়ে গিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের জিকসন সিং। বলটা বাড়িয়েছিলেন ক্লেটন। কিন্তু জিকসন হায়দরাবাদের রক্ষণভাগে প্রবেশ করেও গোলে শট নিতে পারেননি। দু’মিনিট বাদেই ফ্রিকিক পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটনের ফ্রিকিকটি বারে লেগে ফেরত আসে। বক্সের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন জিকসন। ফিরতি বলে হেড করে হায়দরাবাদের গোলের জালে তা জড়িয়ে দেন। ইস্টবেঙ্গল ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। এগিয়ে থাকা লাল-হলুদ ব্রিগেডের ফুটবলাররা আরও বেশি উজ্জীবিত হয়ে আক্রমণে শান দিতে থাকেন। কিন্তু গোলের সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। ৯০ মিনিটের সময় পাল্টা আক্রমণে হায়দরাবাদ প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলকে চাপ সৃষ্টি করে। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে হায়দরাবদের মনোজ মহম্মদ গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন। এই মনোজ ইস্টবেঙ্গলে খেলে গেছেন। অবশ্য ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে এই মুহূর্তে চোট-আঘাত নিয়ে বড় সমস্যা রয়েছে। তবুও কোচ মনে করেছিলেন, রিজার্ভ বেঞ্চের যে সমস্ত খেলোয়াড়রা রয়েছেন, তাঁরা ইস্টবেঙ্গলের জয়ের রথকে অবশ্যই টেনে নিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু হায়দরাবাদের কাছে সেই রথ থমকে গেল। লিগ টেবলে ইস্টবেঙ্গল ১১ নম্বরেই রয়ে গেল। তারা ১৩টি ম্যাচ খেলে ১৪ পয়েন্ট পেয়েছে। আর হায়দরাবাদ ১৩ ম্যাচ খেলে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে অবস্থান করছে। খেলার শেষে কোচ ও খেলোয়াড়রা রেফারির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হন।