• facebook
  • twitter
Thursday, 12 December, 2024

খেলোয়াড়দের চোট-আঘাত থাকলেও ওড়িশাকে হারাতে মরিয়া ইস্টবেঙ্গল

আইএসএল ফুটবলে প্রথম লেগে সেটপিস থেকে গোল হজম করতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। সেকথা মনে রেখে কোচ অস্কার সেটপিসের ব্যাপারে খেলোয়াড়দের সতর্ক করে দিয়েছেন। ওড়িশা দল বেশ শক্তিশালী, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল দল।

আগামী ১০ দিন ইস্টবেঙ্গলের কাছে সবচেয়ে ভাইটাল সময়। এই ১০ দিনের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলকে ঘরের মাঠে তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে। আর তিনটি ম্যাচের ফলাফলের উপরেই নির্ভর করবে লাল-হলুদ শিবির প্রথম ছয়ে খেলার জায়গা পাবে কিনা। তাই ইস্টবেঙ্গলকে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে মাঠে নামতে হবে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে। পরপর দু’টি ম্যাচে জিতে পয়েন্টের খতিয়ানে তলানি থেকে দুটো ধাপ এগিয়ে এসে একাদশে জায়গা করে নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই লাল-হলুদ সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন। কিন্তু এই অবস্থায় লাল-হলুদ শিবিরের খেলোয়াড়দের চোটের ধাক্কায় বেশ চিন্তায় পড়ে গেছেন কোচ অস্কার ব্রুজো। তিনি খেলোয়াড়দের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিন্তু কোথায় যেন একটা তাঁর কপালে ভাঁজ গাঢ় হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হবে ওড়িশা এফসি’র বিরুদ্ধে।

প্রতিপক্ষ দলও চাপে রয়েছে। রয়কৃষ্ণের মতো তারকা ফুটবলারের চোট রয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি মাঠে নামতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। আবার এদিকে লাল-হলুদ শিবিরে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতোকোস এবং সাউল ক্রেসপো চোটের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। দিয়ামানতোকোস গত বছরে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন এবং গোলও করেছেন। ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেওয়ার পরে সমর্থকরাও দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তার প্রধান কারণই ছিল দিমিত্রিয়সের মতো একজন মাঠে থাকলে অনেক স্বপ্ন দেখা যায়। কিন্তু ওড়িশার বিরুদ্ধে তিনি খেলতে পারছেন না জেনে সমর্থকরা কিছুটা হতাশ হয়ে গেছেন। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে গত ম্যাচে তিনি চোট পেয়েছেন। বুধবারও তিনি অনুশীলন করেন। পরপর দু’দিন তাঁকে অনুশীলনে দেখতে না পাওয়াতে ধরেই নেওয়া যেতে পারে, ওড়িশার ম্যাচে তিনি থাকছেন না। হয়তো আক্রমণভাগের ক্লেটন সিলভার উপরেই বেশি নির্ভর করতে হবে কোচ অস্কার ব্রুজোকে। সেই কারণেই ক্লেটনকে নিয়ে আলাদাভাবে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন কোচ।

সাউল ক্রেসপো গত ম্যাচের আগে চোট পেয়েছিলেন। তিনিও এখন পুরোপুরি ফিট হতে পারেননি। শুধু চোট পাওয়া নয়, পাশাপাশি কার্ডের ধাক্কায় তিনি মাঠের বাইরে। চারটি হলুদ কার্ড হওয়ায় তিনি মাঠে নামতে পারবেন না ওড়িশার বিরুদ্ধে। সেই জায়গায় সম্ভবত খেলার শুরু থেকেই জিকসন সিংকে খেলানো হতে পারে। প্রতিপক্ষের আক্রমণকে রুখে দেওয়ার জন্য বেশি দায়িত্ব দেওয়া হবে সৌভিক চক্রবর্তীকে। দলে চোট-আঘাত থাকলেও কোচ অস্কার ব্রুজো স্পষ্ট বলেছেন, খেলার মধ্যে এই ধরনের সমস্যা মাঝেমধ্যেই দেখা দিয়ে থাকে। তার জন্য হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়রাও প্রস্তুত রয়েছেন দলকে সবরকম সহযোগিতা করতে। সেই কারণেই বলতে দ্বিধা নেই, সেইভাবে কোনও অসুবিধা হবে না প্রতিপক্ষ দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে। তবে প্রথম দলের পাঁচজন খেলোয়াড়কে হয়তো পাওয়া যাবে না। তাই ওই সমস্ত কথা না ভেবে কোচ বলেছেন, আমরা যেভাবে খেলছি, ঠিক সেইভাবেই খেলে যাব। তবে বাড়তি সুবিধা হলো পরপর তিনটি ম্যাচ ঘরের মাঠে খেলতে হবে।

আইএসএল ফুটবলে প্রথম লেগে সেটপিস থেকে গোল হজম করতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। সেকথা মনে রেখে কোচ অস্কার সেটপিসের ব্যাপারে খেলোয়াড়দের সতর্ক করে দিয়েছেন। ওড়িশা দল বেশ শক্তিশালী, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যে দলে মুর্তাদা ফল ও হুগো বুমোসের মতো ফুটবলার রয়েছেন, সেখানে অঘটন ঘটতেই পারে। সেকথা ভেবেই ইস্টবেঙ্গলের কোচ অনুশীলনের সময় খাতা-কলম নিয়ে ফুটবলারদের ছবি এঁকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে আক্রমণ গড়তে হবে এবং কীভাবে আক্রমণে ধার মসৃণ করতে হবে।

পাশাপাশি পাসিং ও গ্রাউন্ড ফুটবল খেলার নির্দেশ দিয়েছেন কোচ। তবে, ইস্টবেঙ্গল দলের ভালো খবর, হেক্টর ইয়ুস্তে পুরোপুরি চোট সারিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়েছেন। যেহেতু ঘরের মাঠে পরপর তিনটি ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হবে, তাই কোচ অস্কার ব্রুজো সমর্থকদের পাশে থাকতে বলেছেন। তাদের সমর্থনকে ফুটবলাররা হাতিয়ার করে ম্যাচ ছিনিয়ে আনার জন্য সবরকম চেষ্টা করবেন বলে বিশ্বাস।