গুয়াহাটির ডার্বি ম্যাচের ভাবনায় দুই প্রধানের কোচ

ফাইল চিত্র

পর্যাপ্ত পুলিশ পায়ো যাবে না বলে কলকাতা থেকে আইএসএল ফুটবলের ফিরতি ডার্বি ম্যাচ চলে গেছে অসমের গুয়াহাটিতে। এই খেলা নিয়ে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ও ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তাদের তির্যক মনোভাব দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তারই মধ্যে দুই প্রধানের ফুটবলারদের নিয়ে কোচেরা নেমে পড়েছেন অনুশীলনে। শুক্রবারই উড়ে যাবে ডার্বি ম্যাচে অংশ নেওয়ার জন্যে সবুজ-মেরুন ও লাল-হলুদ বাহিনী।

ডার্বি বলতেই দুই প্রধানের কাছে মর্যাদার লড়াই। কোন দল লিগ টেবলে এগিয়ে থাকল বা কোন দল পিছিয়ে পড়েছে, তা বড় দেখা দেয় না। দুই প্রধানের ফুটবলাররাও ডার্বি ম্যাচটা অন্য চোখে দেখেন। তা দুই দলের লড়াইয়ে একটা রণংদেহি মনোভাব চোখে পড়ে। মাঠের লড়াই এমন জায়গায় পৌঁছয়, তা নিয়ে আলোচনার টেবিল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নিঃসন্দেহে মোহনবাগান লিগ টেবলে শীর্ষস্থানে রয়েছে। কিন্তু তাই বলে ইস্টবেঙ্গল পয়েন্টের খতিয়ানে পিছিয়ে থাকলেও, ছেড়ে কথা বলবে না। দুই প্রধানের চ্যালেঞ্জিং মুডটা কোন স্তরে গিয়ে পৌঁছবে, তা নিয়ে আগাম কথা বলা সম্ভব নয়।

দুই শিবিরের খেলোয়াড়দের চোট-আঘাত নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে। চোটের কারণে বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে পাবেন না মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা ও ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজো। মুম্বই সিটি এফসি’র বিরুদ্ধে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ইস্টবেঙ্গল সমতা ফিরিয়ে এনেও, শেষ পর্যন্তএকটা ভুলে হারতে হয়। তাই সেই ভুলটা শুধরে নেওয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন কোচ অস্কার ব্রুজো। তবে আনোয়ার আলির চোট এমন পর্যায়ে রয়েছে, যা নিয়ে চিন্তা বড় করে দেখা দিয়েছে। আনোয়ারের খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সাউল ক্রেসপো অনুশীলনে যোগ দিলেও খেলার জায়গায় নেই। শৌভিক অনেকটা ফিট, তবুও প্রথম একাদশে থাকবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। ডার্বি ম্যাচের আগে লাল-হলুদ ব্রিগেড নিয়ে নিভৃতে অনুশীলন করায় ব্যস্ত ছিলেন বৃহস্পতিবার। ডার্বি ম্যাচের ভাবনায় কোচ অস্কার ব্রুজোর স্পষ্ট জবাব— মানসিকভাবে আমরা প্রস্তুত। চোট-কার্ড সমস্যা থাকলেও লাল-হলুদ বাহিনী যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি। ইস্টবেঙ্গল কি আন্ডারডগ?


এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, এই ধরনের ম্যাচের সঙ্গে কোনও কিছুই তুলনা করা যায় না। কোন দল আন্ডার ডগ তা আমার জানা নেই। দুই দলের সামনে ৫০ শতাংশ সুযোগ রয়েছে। তবে হ্যাঁ, প্রতিপক্ষ দলকে সবসময় সমীহ করতে হয়। সেই কারণে মোহনবাগান দলকে কীভাবে থামিয়ে দেওয়া যায়, এই অঙ্কে খেলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ফুটবলারদের। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে হবে। গোল চাই। এটাই পাখির চোখ।

মোহনবাগান শিবিরে কিছুটা খোলা হাওয়া দেখতে পাওয়া গেল। গত বুধবার অনুশীলনের সময় অনিরুদ্ধ থাপা চোট পায়োয় ডার্বি ম্যাচে অনিশ্চিত। কিন্তু পুরোদমে অনুশীলন করেন চোট পাওয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার পর গ্রেগ স্টুয়ার্ট, দিমিত্রি পেত্রাতোস ও আপুইয়ারা। কোচ হোসে মোলিনা মনে করেন, ডার্বি ম্যাচের চরিত্র একেবরে আলাদা। তাই অঙ্ক কষে খেলতে হয়। কৌশল এবং বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে লড়াই করতে হবে। আশা করছি আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে মাঠে নামবেন দলের সৈনিকরা। কেউ কাউকেই এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়বে না। গোলটা টার্গেট। প্রথম থেকে আক্রমণের ঝড় তুলতে হবে। প্রতিপক্ষ দলকে চাপে রাখতে হবে। তবে নিজেদের রক্ষণভাগকে মজবুত রাখতে হবে। কোনওভাবে বিপক্ষ দলের আক্রমণে উৎসকে স্তব্ধ করে দিতে হবে। দলের শপথ শীর্ষস্থান ধরে রাখতে হবে। গুয়াহাটিতে ডার্বি ম্যাচ হওয়াতে দুই দলের সেই সমর্থকদের সেইভাবে পাওয়া গেলেও উত্তেজনায় কোনও অভাব থাকবে না বলে বিশ্বাস।