নিজস্ব প্রতিনিধি— আইএসএল ফুটবলে লিগের খেলায় মুম্বই সিটি এফসি’কে হারিয়ে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস লিগ-শিল্ড জয় করেছিল৷ সেদিনের উচ্ছ্বাসকে এখনও সমর্থকরা ভুলে যাননি৷ তবে, দলের কোচ লোপেজ হাবাস আগেই সতর্ক করে খেলোয়াড়দের বলেছিলেন, আত্মবিশ্বাস ভালো, কিন্ত্ত অতি আত্মবিশ্বাস অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে৷ সেই কথা প্রকাশ পেল গত মঙ্গলবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনাল লেগের খেলায় মোহনবাগানের হারের মধ্যে দিয়ে৷ মোহনবাগান হারল ১-২ গোলের ব্যবধানে ওড়িশা এফসি’র কাছে৷ খেলার শেষে কোচ হাবাস যখন কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের দর্শকদের উল্লাস দেখছিলেন, তখন তিনি হতাশায় বেশ কিছুক্ষণ মাঠের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ হয়তো তিনি ভাবছিলেন, ওড়িশার কোচ লোবেরার কাছে মস্তিষ্কের যুদ্ধে হার হয়ে গেল৷ অবশ্য সেমিফাইনাল ম্যাচ যখন ডবল লেগে হয়, তখন হয়তো আশা একেবারে হাতছাড়া হয়ে যায় না৷ কিন্ত্ত এই হার অনেক সময় খেলোয়াড়দের বিপর্যস্ত করে তোলে৷ আগামী ২৮ এপ্রিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে মোহনবাগান দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে ওড়িশার বিরুদ্ধে৷ ওড়িশা ইতিমধ্যেই ২ গোল করে এগিয়ে রয়েছে গোলের পরিসংখ্যানে৷ তাই মোহনবাগানকে কমপক্ষে ২ গোলের ব্যবধানে জিততে হবে৷ তা না হলে ফাইনাল খেলা কঠিন হয়ে যাবে৷
হতাশ কোচ হাবাস বলেছেন, একাধিক ভুলের কারণেই ওড়িশার কাছে ম্যাচটা হারতে হয়েছে৷ তবে তিনি এখনই কোনও ফুটবলারকে কাঠগড়ায় তুলতে চাইছেন না৷ তিনি বলেন, দলগতভাবে ভুল করলে যে কোনও ম্যাচই কঠিন জায়গায় পৌঁছে যায়৷ বিশেষ করে, রক্ষণভাগে এমন এমন ভুল হয়েছিল, যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়৷ সেই ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে দলকে৷ আর এই ভুলের কারণেই রয় কৃষ্ণের গোলটা হজম করতে হয়েছে৷ সবচেয়ে খারাপ লাগল, একজন মিডফিল্ডারের সাহায্য নিয়ে যদি রয় কৃষ্ণকে বাধা দেওয়া যেত, তাহলে ওই গোলটা হয় না৷
মনে রাখতে হবে, সুযোগসন্ধানি ফুটবলাররা সবসময় প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারদের ভুলটা খুঁজে থাকে৷ রয় কৃষ্ণ এমন একজন সুযোগ পেলেই গোল করতে ওস্তাদ৷ তাহলে কি আত্মতুষ্টিতে ফুটবলাররা ভুগছিলেন? কোচের অভিমত, হয়তো কিছুটা! খেলার শুরুতেই মনবীর গোল করার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন, তাহলে ম্যাচটা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এল৷ কিন্ত্ত না৷ ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করতে হয়৷ সেই লড়াইয়ে কে বাজিমাত করবে, তা আগাম ভাবার কোনও কারণ ছিল না৷ আর ফুটবল খেলায় এরকমই হয়৷ জেতার জন্য যে কোনও দলই মাঠে নামবে৷ তাই লড়াইটা অন্য চরিত্রের হয়ে থাকে৷ একজন খেলোয়াড় মাঠে নামলে জয়ের হাসিই হাসতে চান৷ তবে, কোচ হাবাস একটু ঘুরিয়ে বললেন, আমি বিশ্বাস করি ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস আছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের৷ তাই অপেক্ষায় থাকতে হবে৷