নিজস্ব প্রতিনিধি— তীব্র উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে আইএসএল ফুটবলে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ২-০ গোলে ওড়িশা এফসি’কে উড়িয়ে দিয়ে আবার ফাইনালে পৌঁছে গেল৷ মোহনবাগান আবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে সেরা ম্যাচ উপহার দেবে৷ যদি ফাইনালে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড জিততে পারে, তাহলে পরপর দু’বার ভারতসেরা সম্মান পাবে৷ এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, ৪ মে ফাইনাল কোথায় হবে৷ মোহনবাগানের সমর্থকরা আশাবাদী যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণেই এই ম্যাচ হবে৷ তার প্রধান কারণ হল, লিগ টেবলে শীর্ষে থাকা দলই ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলবে৷ তবে সারা ভারত ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শুধু সবুজ সংকেতের অপেক্ষায়৷
রবিবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বসু ওড়িশার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন৷ তিনি বলেছেন, ওড়িশা শিবিরের দিক থেকে তাঁর দিকে জলের বোতল বার বার ছোঁড়া হচ্ছিল৷ এমনকি ওড়িশার ফুটবলাররা তাঁকে বার বার ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দিচ্ছিলেন৷ ম্যাচের পরে যখন মিক্সড জোনে কথা বলতে এসেছিলেন শুভাশিস, তখন এমনই ঘটনা ঘটেছে৷ তিনি আরও বলেন, ম্যাচের পরে ডাক আউটের কাছে গিয়ে ফুটবলারদের সঙ্গে হাত মেলাতে গিয়েছিলাম৷ তখনও তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে৷ আমার মনে হয়, যেহেতু ওড়িশা দল হেরে গিয়েছে, তাই খেলোয়াড়রা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন৷ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন আচরণে৷ তবে, শুভাশিসের এই অভিযোগ মেনে নিতে পারেনি ওড়িশা শিবির৷
শুভাশিস আরও বলেন, আমি হয়তো সেইভাবে সমর্থকদের নজর কাড়তে পারিনি, তবে দলের পারফরম্যান্স আমাকে খুশি করেছে৷ এটা বলতেই পারা যায়, দারুণ একটা প্রত্যাবর্তন৷ প্রথম লেগে হেরে যাওয়ার পরে অনেকটাই মানসিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছিলাম৷ কিন্ত্ত কোচ হাবাস যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম জয় আমাদের আসবেই৷ তারপরেও সমর্থকদের প্রেরণা এই জয়ে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বলে মনে করি৷ তাই রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে সেরা খেলা উপহার দিয়ে প্রতিপক্ষ দলকে হারাতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি৷
ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলতে পারবে, এই আশা নিয়ে শুভাশিসরা এখন তৈরি হচ্ছেন৷ সারা বছর ধরে যেভাবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড পরিশ্রম করেছে, তারই ফসল হিসেবে সেমিফাইনালে জয়ের মুখ দেখতে পেয়েছে৷ ত্রিমুকুট সম্মানের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে দল৷ আত্মবিশ্বাসী খেলোয়াড়রা৷ এই লক্ষ্যে তাঁরা বাজিমাত করবে, তা সবার মধ্যেই ইচ্ছাশক্তি কথা বলছে৷ জেসন কামিন্স গোল দিয়ে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছেন৷ তার প্রধান কারণ হল, এমন একটা সন্দিক্ষণে দল খেলতে নেমেছিল, যেখানে বিরাট একটা চিন্তার পাহাড় তৈরি হয়েছিল৷ সেই পাহাড়কে সরিয়ে দিয়ে দল জিততে পেরেছে, এটাই তাঁর কাছে বড় পুরস্কার৷ এখন ফাইনাল খেলার জন্য খেলোয়াড়রাও মানসিক দিক দিয়ে প্রস্ত্তত হয়ে রয়েছেন৷ কোচ হাবাস খেলোয়াড়দের উদ্দেশে বলেছেন, আত্মবিশ্বাস ভালো, কিন্ত্ত কোনওভাবেই অতি আত্মবিশ্বাসে ডুবে থাকা যাবে না৷ মনে রাখতে হবে, ফাইনাল খেলার চরিত্র সবসময় আলাদা হয়ে থাকে৷ তাই বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল খেলে ভারতসেরা দল হিসেবে মোহনবাগানকে চিহ্নিত করতে হবে, এটাই হবে প্রতিজ্ঞা৷