আইএসএল ফুটবলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শনিবার মহমেডান স্পোটিং ক্লাবের বিরুদ্ধে সাহসী লড়াই করল ৯ জনকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল। ভাবতে পারা যায় ৩০ মিনিটের মধ্যে লাল হলুদ ব্রিগেডের দুইজন নির্ভরযোগ্য ফুটবলারকে লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। স্বাভাবিকভাবে নয় জনের ইস্টবেঙ্গলকে চাপে রাখবে প্রতিপক্ষ মহেমডান স্পোটিং। আবার অনেকেই ভেবেছিলেন ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে দেবে। কিন্তু সেই ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে ৯ জনের ইস্টবেঙ্গল আক্রমণে ঝড় তুলে মহমেডান স্পোর্টিংকে প্রায় কোণঠাসা করে রেখেছিল। এমনকী গোলের সুযোগও তৈরি করে ফেলেছিল। যদি ইস্টবেঙ্গল জিততে পারতো তাহলে নতুন এক অধ্যায় রচনা তৈরি হতো।
সপ্তম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল প্রথম পয়েন্ট পেল ড্র করে। কিন্তু কোচ অস্কার ব্রুজো খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। রাগ দেখিয়ে লাল কার্ড দেখা নাওরেম মহেশকে সতর্ক করা নয়—শৃঙ্খলা শিখতে হবে। রবিবার জানা গেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে মহেশকে জরিমানা করা হতে পারে। রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফুটবলে লাথি মারায় আইএসএলের তরফে শাস্তি হতে পারে। সেই শাস্তিতে তিনি নির্বাসিত হলেও অবাক হওয়ার কোনও কারণ থাকবে না।
এদিকে সামনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকায় ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা এখন ছুটিতে। মহেশ জাতীয় দলে জায়গা পাননি। তাই তিনিও ছুটিতে। আবার যখন লাল হলুদ ব্রিগেডের অনুশীলন শুরু হবে, তখন ক্লাবের পক্ষ থেকে জরিমানা করা হবে। কোচ কথা বলবেন মহেশের সঙ্গে জানতে চাইবেন তিনি কেন এমন আচরণ করলেন। মাঠের মধ্যে খেলা চলাকালীন মহেশ যে ব্যবহার করেছেন তা ভালো ভাবে নিতে চাইছে না ক্লাব। স্বাভাবিকভাবে পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না মহেশ। রেফারির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে শাস্তির বিধান আছে ফিফার নিয়মে।
মহেশের আচরণে খুশি নন দলের কোচ অস্কার ব্রুজো। তিনি বলেছেন, রেফারির বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে রাজি নই। মহেশ যে ব্যবহার করেছেন তা মেনে নিতে পারছি না। ফিফার নিয়ম সবার জানা আছে। মহেশ নিয়ম ভেঙেছে। তাই ক্লাব শাস্তি বিধান করতেই পারে বুঝতে হবে নিয়ম ভাঙাটা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না।
তবে মহমেডান স্পোর্টিং-য়ের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের সাহসী লড়াইকে প্রশংসা করেছেন কোচ অস্কার ব্রুজো। তিনি অভিমত প্রকাশ করে বলেছেন-এই ম্যাচে অনেক ইতিবাচক দিক দেখতে পাওয়া গেছে। দল স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসছে। আত্মবিশ্বাস ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। লিগ টেবলে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে গেলে পরবর্তী ম্যাচগুলোর উপরে নজর রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ১২ নম্বরে থাকা দলের সঙ্গে আমাদের এখনও চার পয়েন্টের পার্থক্য। খেলোয়াড়রা অনুভব করতে পারছেন দৃঢ়তা দেখিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। মানসিক দিক থেকে এগিয়ে থাকতে হবে। তাহলেই মনোবল বাড়বে। তিনি আরও বলেন, শনিবারের ম্যাচে বিরতির সময় খেলোয়াড়দের যে পেপটক দেওয়া হয়েছিল তা কাজে লেগেছে। স্পষ্ট করে কোচ বলেছিলেন, মনে কর আমরা এগারো জনে খেলছি আর প্রতিপক্ষ দলে নয় জন খেলোয়াড় আছেন, সত্যি খেলোয়াড়রা সেই শপথে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের উদ্দেশ্য ছিল গোলরক্ষা এবং চকিত আক্রমণ গড়ে তোলা। নিঃসন্দেহে বলা যায় আহত বাঘ যেমন গর্জন করে ঠিক সেই ভাবে ইস্টবেঙ্গলের হুঙ্কার সারা মাঠকে জানান দিয়েছে।