চক দে ইন্ডিয়া … দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান … শেষপর্যন্ত টোকিও’য় হল শাপমুক্তি … অলিম্পিক হকিতে পদকের খরা কাটল ভারতের .. ৪১ বছর পর অলিম্পিকের আসর থেকে ভারতীয় হকি দল ব্রোঞ্জ পদক জয় করল বৃহস্পতিবার। মনপ্রীতদের হাত ধরে ভারতীয় হকি দল অলিম্পিকের আসর থেকে এক ডজন পদক জয় করল।
অলিম্পিকের আসরে আটবারের সােনার পদক জয়ী ভারতীয় দল চলতি অলিম্পিকের আসরে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমেছিল জার্মানির বিরুদ্ধে। ব্রোঞ্জ পদক জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বার বার পিছিয়ে পড়েও, মনপ্রীতরা শেষপর্যন্ত জয়ের মুখ দেখতে পেল (৫-৪) গােলের ব্যবধানে জার্মানিকে পরাজিত করে।
বলে রাখা ভালাে, অলিম্পিকের ইতিহাসে তুর্কি থেকে সর্বাধিক সােনার পদক জয়ের দৌড়ে ভারতের ধারে কাছে কোনও দল নেই। যদিও জার্মানি চারবার সােনার পদক জয় করে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে।
১৯৮০ সালে মস্কো গেমের পর ৪১ বছরের খরা কাটিয়ে বৃহস্পতিবার ভারতীয় পুরুষ হকি দল চলতি টোকিও অলিম্পিকের আসর থেকে তুর্কি ইভেন্ট থেকে ব্রোঞ্জ পদক জয় করল। অলিম্পিকের আসরে ভারতীয় হকি দলের সাফল্য কিন্তু চোখে পড়ার মতন। সকলেই ভাবছেন এত সাফল্য! হ্যাঁ, ভারত অলিম্পিকের আসরে হকি ইভেন্ট থেকে মােট আটবার সােনার পদক জয় করেছে।
একবার রুপাে এবং তিনবার ব্রোঞ্জ পদক জয়। এই নিয়ে অলিম্পিকের আসরে হকি থেকে ভারতের এক ডজন পদক জয় হয়ে গেল মনপ্রীতদের হাত ধরে। কারণ মনীতরাই দেশের হয়ে দ্বাদশ পদকটি তুলে নিল টোকিও অলিম্পিকের আসর থেকে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় হকি দল ১৯২৮ সাল থেকে টানা তিনবার ১৯৩২ ও ১৯৩৬ সালে সােনার পদক জয় করেছে। এরপর ১৯৪৮, ১৯৫২ ও ১৯৫৬ সালে সােনার পদক জয় করে। ৫৬ সালের পর দীর্ঘ চব্বিশ বছর পর ১৯৮০ সালে মস্কো অলিম্পিক থেকে শেষবার সােনার পদক জয় করেছিল ভারতীয় হকি দল।
চোখে পড়ার মতন লড়াই করে গিয়েছিল ভারতীয় হকি দলের খেলােয়াড়রা কোনও সময়ের জন্য এক ইঞ্চি জমিও তারা ছেড়ে দেয়নি। একটা সময় ভারতীয় পুরুষ হকি দলের খেলােয়াড়রা (১-৩) গােলে পিছিয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে দুর্দান্ত কামব্যাক।
ভারতের হয়ে প্রথম গােলটি করেছিলেন সিমরনজিত সতেরাে মিনিটের মাথায়। এরপর ওঠা পড়া খেলায় লেগেছিল। তবে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের লড়াইতে বার বার এগিয়ে যাচ্ছিল জার্মানির খেলােয়াড়রা গােল পরিশােধ করে। তবে সাতাশ মিনিটে ভার হয়ে গােল করে দলকে খেলায় ফিরিয়ে এনেছিলেন হার্দিক সিং। দু’মিনিট পরেই হরমনপ্রীত সিং (৪-৩) গােলে ভারতকে এগিয়ে দেন।
তবে জার্মানির খেলােয়াড়রা খেলায় কামব্যাক করার জন্য বার বার চেষ্টা করছিল। তবে ব্যবধান বাড়িয়ে দিয়ে রুপীর পাল সিং। ৩১ মিনিটে ভারতকে (৫-৩) গােলে এগিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর আর খেলায় সুযােগ করতে পারেনি জার্মানির খেলােয়াড়রা।
কিন্তু আটচল্লিশ মিনিটে জার্মানির হয়ে লুকাস খেলার ব্যবধান কমিয়ে দিয়েছিলেন (৪-৫) গােলে। শেষ কোয়ার্টারে একটা টান টান উত্তেজনার মধ্যে খেলা সামনের দিকে এগিয়ে চলছিল। শেষ মুহুর্তে এমন একটা অবস্থা হয়েছিল যে খেলার ফল কি হয় … কি হয় … এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এবং শেষ সময়ে জার্মানি পেনাল্টি কর্ণারও পেয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভারতের গােলরক্ষক পি.আর শ্রীজেস তা বাঁচিয়ে দিয়ে দলকে রক্ষা করেন। সেই সঙ্গে ৪১ বছর পর ভারতকে অলিম্পিকের আসর থেকে পদক জয় করতে সাহায্য করেন।