• facebook
  • twitter
Friday, 27 December, 2024

কোচ সঞ্জয়ের মোক্ষম চালে ওড়িশাকে হারিয়ে বাংলা শেষ চারে

রবি হাঁসদা ও ইসারাফিলের কাছে গোলের সুযোগ আসলেও, তা থেকে গোল আসেনি। আক্রমণের অঙ্ক বদলে বাংলার খেলোয়াড়রা মাঝমাঠ থেকে গোল করার জন্য বার বার উঠে আসতে থাকেন।

তেলেঙ্গানায় ৭৮তম সন্তোষ ট্রফি ফুটবলের শেষ আটের খেলায় ওড়িশাকে হারিয়ে বাংলা শেষ চারে পৌঁছে গেল। বৃহস্পতিবার বাংলা তাদের চেনা ছন্দে খেলতে পারেনি। ওড়িশা প্রথমে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল। খেলার ২৫মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে বল পেয়ে রাকেশ ওরাম হেডে গোল করে ওড়িশাকে এগিয়ে দেন। বাংলার রক্ষণভাগের ভুলে ওড়িশার রাকেশ গোল করেন। সেসময় বাংলার মাঝমাঠের সংঘবদ্ধতার অভাব দেখা দিচ্ছিল। ওড়িশার একের পর আক্রমণ বাংলার রক্ষণভাগে আছড়ে পড়তে থাকে। চাপে পড়ে যায় বাংলা। তারপরেই আবার বক্সের উপর থেকে রোশন রানার শট বাংলার গোলপোটে লেগে প্রতিহত হয়। নিজেদের হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে যেতে থাকে। তখনই বাংলার কোচ সঞ্জয় সেন তাঁর মোক্ষম চাল দেন। অমরনাথ বাক্সের পরিবর্তে ইসরাফিল দেওয়ানকে মাঠে নামিয়ে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলার খেলার চেহারা বদলে যায়। কিছুতেই ওড়িশার গোলমুখ খুলতে পারছিলেন না বাংলার ফুটবলাররা। প্রথমার্ধের সংযোজিত সময়ে বাংলার রক্ষণভাগের ফুটবলার অয়ন মন্ডল ডানদিক থেকে ওড়িশার বক্সে নরহরি শ্রেষ্ঠার উদ্দেশ্যে কোনাকুনি বল ভাসিয়ে দেন। ওড়িশার স্টপার বিশাল টিগ্গা বলের আন্দাজে ভুল করলে, নরহরির কাছে বল চলে আসে। ঠান্ডা মাথায় নরহরি শ্রেষ্ঠা বলকে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে গোলকিপারের বাঁদিকে রেখে অসাধারণ প্লেসিংয়ে গোল করে দেন। খেলায় সমতা ফিরে আসে। এই গোল হওয়ার পরেই খেলার মোড় ঘুরিয়ে যায়। বিরতিতে খেলার ফলাফল ছিল ১-১।

বিরতির পর বাংলা তাদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে থাকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই বাংলার আক্রমণে ওড়িশার রক্ষণভাগ এলোমেলো হয়ে যায়। তবুও সুযোগ পেয়েও বাংলা গোল করতে পারছিল না।

রবি হাঁসদা ও ইসারাফিলের কাছে গোলের সুযোগ আসলেও, তা থেকে গোল আসেনি। আক্রমণের অঙ্ক বদলে বাংলার খেলোয়াড়রা মাঝমাঠ থেকে গোল করার জন্য বার বার উঠে আসতে থাকেন। সেই আক্রমণ সামাল দিতে গিয়ে ওড়িশার ফুটবলাররা বেসামাল হয়ে যান। খেলার ৭৪ মিনিটে বাংলার কোচ সঞ্জয় সেন একসঙ্গে দু’জন খেলোয়াড়কে পরিবর্তন করেন। চাক্কু মান্ডি ও সুপ্রিয় পন্ডিতের জায়গায় মনোতোষ মাঝি ও আদিত্য থাপাকে মাঠে নিয়ে আসেন। খেলার ৭৭ মিনিটের মাথায় আবারও ওড়িশা বক্সে ভেসে আসা এরিয়াল বলকে নরহরি শ্রেষ্ঠা তাঁর সতীর্থ রবি হাঁসদার জন্য নামিয়ে দেন। রবি হাঁসদা সেই বলটি বাঁ-পায়ের দুরন্ত ভলিতে গোলের জালে জড়িয়ে দেন। বাংলা ২-১ গোলে এগিয়ে যেতেই ওড়িশা গোল পরিশোধের জন্য পাল্টা আঘাত হানতে শুরু করে। রক্ষনের ফুটবলার বসিয়ে ওড়িশা কোচ অক্ষয় দাস আক্রমণভাগের ফুটবলার জিতু মুদুলিকে নিয়ে আসেন চন্দ্রমোহন মুর্মুর পরিবর্তে। তবুও বাংলাকে দমানো যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের সংযোজিত সময়ে ওড়িশা রক্ষণের ভুলে মনোতোষ মাঝি বাংলাকে ৩-১ গোলে এগিয়ে দেন। ওড়িশার বিরুদ্ধে এই জয়ের ফলে বাংলা শেষ চারে পৌঁছে যায়। নরহরি শ্রেষ্ঠা প্রতিটি ম্যাচেই গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়ে চলেছেন। এদিন ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন বাংলার নরহরি শ্রেষ্ঠা। আগামী রবিবার শেষ চারের ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাকে।