শামির প্রত্যাবর্তনে বাংলা এগিয়ে

মহম্মদ শামি। ফাইল চিত্র

এক বছর বাদে ভারতের অন্যতম দ্রুতগামী বোলার মহম্মদ শামি বাংলার হয়ে মাঠে নামলেন। গত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলার পরেই ভারতের এই তারকা বোলার চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। শুধু মাঠের বাইরেই নয়, তাঁর গোড়ালিতে যে চোট লেগেছে তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। বিদেশে গিয়ে অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে। কিন্তু সেইভাবে ফিট না হওয়াতে ভারতীয় দলে তাঁর জায়গা হয়নি। আশা করেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দলের হয়ে আবার তিনি মাঠে নামবেন। কিন্তু তার আগেই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার জন্য বাংলায় বেশ কিছুদিন কাটিয়েছেন। সেখানে অনুশীলনের সময় দেখা গেল শামির চোট সেইভাবে নিরাময় হয়নি। তাই আবার তিনি বেঙ্গালুরুতে রিহ্যাব করতে চলে গিয়েছিলেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট পাননি, ততদিন কোনওভাবেই কোনও দলের হয়ে খেলার সুযোগ হয়নি শামির। এবারে রঞ্জি ট্রফি ক্রিকেটে বেশ কয়েকটি ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরে বাংলার হয়ে এই প্রথম মাঠে নামলেন মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে। বাংলা প্রথম ইনিংসে ২২৮ রান করে সবাই আউট হয়ে যান। বাংলার এই রানের জবাবে মধ্যপ্রদেশ খেলতে নেমে বুধবার ১ উইকেটে ১০৩ রান করে। প্রথম দিনে মহম্মদ শামি ১০ ওভার বল করলেও কোনও উইকেট পাননি। তাই কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে নিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে মহম্মদ শামিকে দিয়েই আঘাত হানবেন মধ্যপ্রদেশে শিবিরে।

বৃহস্পতিবার মাঠে নেমেই অসাধারণ কামব্যাক মহম্মদ শামির। দ্বিতীয় দিনে ৪ উইকেট তুলে নেন তিনি। দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন ভারতের তারকা পেসার মহম্মদ শামি। এনসিএ-র ছাড়পত্র পেয়েই বাংলা দলের হয়ে রঞ্জিতে নামেন শামি। প্রথম দিনে ১০ ওভার বল করলেও কোনও উইকেট পাননি তিনি। এদিন প্রথম দুই ওভারে কোনও উইকেট না পেলেও, তারপরেই শামির বল ঝলসে ওঠে। মধ্যপ্রদেশ দলের ১২৩ রানের মাথায় শুভম শর্মা বোল্ড হয়ে যান শামির বলে। এরপর সারাংশ জৈন, কুমার কার্তিকেয় এবং কুলবন্ত খেজরোলিয়া শামির বলে আউট হন। মোট ১৯ ওভার বল করে ৪টি মেডেন ওভার নিয়ে ৪ উইকেট সংগ্রহ করেন শামি। রান দিয়েছেন মাত্র ৫৪। মধ্যপ্রদেশের ইনিংস শেষ হয় ১৬৭ রানে। শামি ছাড়া বাংলার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন সুরজ সিন্ধু এবং মহম্মদ কাইফ। ১টি উইকেট পান শাহবাজ আহমেদ। শামির এই পারফরমেন্স বর্ডার-গাভাসকর সিরিজের শেষ দুটো টেস্টে তাঁর দলে ফেরার জায়গা অনেকটাই মজবুত করল।

অন্যদিকে বাংলার প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পরে বোলাররা কামব্যাক করালেন। পরের রাউন্ডে যেতে গেলে এই ম্যাচ থেকে বাংলার ৬ পয়েন্ট দরকার। ঘরের মাঠে বৃষ্টির জন্য বিহার আর কেরালা ম্যাচে নষ্ট হওয়ায় চাপে বাংলা। যদিও উত্তরপ্রদেশ আর কর্ণাটক থেকে বাংলা ৩ পয়েন্ট পেয়েছে। তবে এই ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া টিম বেঙ্গল। দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলা ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৭০ রান করেছে। ২৩১ রানে এগিয়ে রয়েছে বাংলা। সুদীপ ঘরামি এবং সুদীপ চ্যাটার্জি দু’জনেই ৪০ রান করে আউট হয়েছেন। ১৯ রানে ফিরেছেন অধিনায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার। ঋত্বিক চ্যাটার্জি ৩৩ রানে এবং ঋদ্ধিমান সাহা ২১ রানে অপরাজিত রয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনে বাংলা যদি চা পানের আগে বড় রানের স্কোর করতে পারে, তাহলে বোলারদের কাছে অনেক সহজ হবে প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে। কোচ লক্ষ্মীরতন চাইবেন, বোলারদের দিয়ে প্রথম থেকেই ব্যাটম্যানদের চাপে রাখতে। বিশেষ করে মহম্মদ শামিকে কাজে লাগিয়ে খুব তাড়াতাড়ি প্রতিপক্ষ শিবিরে আঘাত হানা এবং উইকেট তুলে নেওয়া। যদি সেই কাজটি সফল হয়, তাহলে বাংলার ঘরে ৬ পয়েন্ট আসাটা কোনও কঠিন হবে না বলে বিশ্বাস।