চ্যাম্পিয়নস লিগ ফুটবলের গত বারােটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ খেলতে নেমে গােল করতে পারেননি লিওনেল মেসি। কিন্তু এবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মেসির চোখ ধাঁধানাে পারফরমেন্স দিয়ে বার্সিলােনা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-০ গােলে হারিয়ে দিল। প্রথম লেগে বার্সিলােনা ১-০ জিতে থাকায় মােট ৪-০ গােলের গড়ে জিতে মেসির দল চার বছরের মধ্যে প্রথমবার শেষ চারে উঠলো।
সেমি ফাইনালে বার্সিলােনাকে হয় ইংল্যান্ডের ক্লাব লিভারপুল অথবা পর্তুগালের ক্লাব এফসি পাের্তোর সঙ্গে খেলতে হবে। ম্যান ইউয়ের সঙ্গে খেলার অধিকাংশ সময় বার্সিলােনা প্রতিপক্ষকে নিয়ে স্রেফ ছেলেখেলা করে গিয়েছে। যদিও ম্যান ইউ শুরুটা করেছিল দারুণভাবে কিন্তু মেসি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নেন। আসলে ইয়ংয়ের একটি পাস ভুল জায়গায় চলে গেলে মেসি সেই বল ধরে ম্যাচের ১৬ মিনিটে একটি ঘুর্নি শটে গােল করে বার্সিলােনাকে এগিয়ে দেন।
চার মিনিট পরই ম্যান ইউ ডিফেন্সে আরও একটি ভুলের সুযােগ থেকে বার্সিলােনা ২-০ করে ফেলে। একটি ব্যাক পাস এত উচু হয়ে সােজাসুজি মেসির সামনে চলে আসে, যা থেকে বক্সের বাইরে দাঁড়িয়েই শট করে মেসি গােল পেয়ে যান। ম্যান ইউয়ের গােলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া ভাবতেই পারেননি যে মেসি এই ধরনের একটা সুযােগ এমনভাবে কাজে লাগাবে৷
দ্বিতীয়ার্ধে বার্সিলােনার পক্ষে শেষ গােলটি করেছেন ফিলিপে কুটিনহাে। গত তিনটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে কুটিনহাে গোল করতে পারেননি। খেলার পর উচ্ছ্বসিত মেসি নিজেই সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন আমাদের চোখ ধাঁধানাে পারফরমেন্স তাে দেখলেন। এটাই হচ্ছে বার্সিলােনা দল।
ম্যাচের প্রথম পাঁচ মিনিট আমরা খানিকটা নার্ভাস ছিলাম। সম্ভবত প্রথম লেগে এক গােলে জিতে থাকাটা আমাদের ওপর চাপ ছড়াচ্ছিল কিন্তু তারপর আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েনি। অন্যদিকে, ম্যান ইউয়ের কোচ ওলে গানার সােলসকারের খেলােয়াড় হিসেবে জীবনের সর্বত্তম রাতটি এসেছিল ন্য ক্যাম্পে। কিন্তু কোচ হিসেবে যে দল তিনি হাতে পেয়েছেন তারা বার্সিলােনার সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি মুহুর্তের জন্য।
ম্যান ইউ কিন্তু শুরুতেই গােল পেতে পারতাে। কিন্তু মার্কাস র্যাসফোর্ডের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তারা গােলও খেয়ে যেতে পারতাে কারণ তাদের ডিফেন্ডার ফ্লেড বার্সিলােনার ইভান র্যাকটিককে বক্সের মধ্যে ফাউল করায় বার্ষিলানাকে পেনাল্টি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্টেন্ট রেফারির রায়ে সেই পেনাল্টি বাতিল করে দেওয়া হয়।
ম্যাচের সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য ঘটনা স্পেনের গােলরক্ষক ডেভিড ডিবিয়া লিওনেল মেসির দ্বিতীয় গােলটির সময় সবচেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছিলেন। মেসির আচমকা শটটি ডেভিড ডিবিয়ার শরীরের ফাঁক গলে গােলে ঢুকে যায়। ম্যান ইউয়ের কোচ সােলসকার বলেছেন, দুটো দলের মধ্যে পার্থক্য কি সেটা আপনারা দেখলেন। কোনও টুর্নামেন্টে এই স্তরে ভূল করা চলে না। আমরা যে দারুণভাবে শুরু করেছিলাম তার সুযােগও নিতে পারিনি। বার্সিলােনা গােল লক্ষ্য করে তাদের প্রথম দুটি শটেই দুটি গোল পেয়ে যাওয়ায় খেলাটা এখানেই শেষ হয়ে যায়।