বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির তৃতীয় টেস্ট ম্যাচে ভারত দ্বিতীয় দিনের শেষে বেশ চাপে পড়ে গেছে। রবিবার অস্ট্রেলিয়া চালকের আসনে ৪০৫ রান ৭ উইকেট হারিয়ে। প্রথম দিনে মাত্র ৮০ বল হয়েছিল। তারপরেই বৃষ্টিতে আর খেলা চালু করা সম্ভব হয়নি। প্রথম দিনের ২৮ রান নিয়ে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামে। ভারতের বোলারদের সেইভাবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান ট্রেভিস হেড এবং স্টিভ স্মিথ জায়গা দেননি। আবার ভারতের বোলাররা সেইভাবে তাঁদের চ্যালেঞ্জর সামনে ভয় দেখাতে পারেননি। তাই হেড ও স্মিথ যেভাবে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডকে উজ্জ্বল করেছেন-তা দেখার মতন। ট্রাভিস হেড ও স্টিভ স্মিথের ব্যাট থেকে শতরান আসতে অস্ট্রেলিয়া দল ভারতকে চিন্তায় ফলে দিয়েছে। ভারতের যশপ্রীত বুমরা ছাড়া ভারতের অন্য কোনও বোলার দাঁত ফোটাতে পারেননি। এদিনের ভারতীয় বোলিংয়ে হতাশার ছবি বড় করে দেখা দিয়েছে। পুরনো বলকে ভারতের বোলাররা সেইভাবে ব্যবহার করতে পারছেন না।
বরঞ্চ দ্বিতীয় দিনে দ্বিতীয় সেশনে হেড ও স্মিথ যেভাবে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে খেলেছেন-তা অস্ট্রেলিয়া দলের কাছে বড় প্রাপ্তি হয়েছে। এই জুটিতে ১৭১ রান এসেছে ৩১ ওভারে। সেই সময়ে ভারতের কোনও বোলার অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আঘাত হানতে পারেননি। যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন বল নিতে পারেননি রোহিত শর্মারা, ততক্ষণ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান আউট করা সম্ভব হয়নি। নতুন বল নেওয়ার পরে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখা সম্ভব হয়েছে। প্রথম দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান উসমান খোয়াজা এবং নাথান ম্যাক সুইনির উইকেট দুটি তুলে নেন যশপ্রীত বুমরা। খোয়াজা ২১ রানে ও নাথান ৯ রানে আউট হন। লাবুশেন ১২ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান।
এই উইকেটটি পান নীতিশ রেড্ডি। তারপরে বড় রানের পাহাড় গড়তে শক্ত হাতে ব্যাট করতে থাকেন ট্রেভিস হেড ও স্টিভ স্মিথ। দুজনেই শতরান করে ভারতের বোলারদের কপালের ভাঁজ গভীর করে দেন। স্মিথ ১০১ রান করেন ১৯০ বল খেলে। তবে তাঁর ব্যাট থেকে ছক্কা না এলেও, ১২টি বাউন্ডারি মারেন। ট্রাভেস হেড ১৫২ রানের ইনিংস উপহার দেন। তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিং দর্শকদের মোহিত করেছে। তিনি ওই রান তুলতে ১৬০টি বল খেলেন। স্মিথ ও হেডকে আউট করেছেন যশপ্রীত বুমরা। স্মিথ আউট হন রোহিতের হাতে ক্যাচ দিয়ে। আর হেড প্যাভেলিয়নে ফেরত যান বুমরার বলে উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থের হাতে ধরা পড়ে। মিচেল মার্শ মাত্র ৫ রানে কোহলির হাতে ক্যাচ তুলে দেন বুমরার বলে। কিছুটা ধরে খেলার চেষ্টা করেন উইকেটরক্ষক এ. ক্যারি ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। কিন্তু মহম্মদ মিরাজের বলে খেলতে গিয়ে কামিন্স ক্যাচ তুলে দেন ঋষভের হাতে। কামিন্স ২০ রান করে প্যাভেলিয়নের পথে পা বাড়ান। দিনের শেষে এ. ক্যারি ৪৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ক্রিজে রয়েছেন মিচেল স্টার্ক ৭ রানে। ভারতের যশপ্রীত বুমরা ছাড়া অন্য বোলাররা নিষ্প্রভ ছিলেন।
এই মুহূর্তে ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড ও যশপ্রীত বুমরা সমার্থক হয়ে উঠেছে। সব ধরনের ক্রিকেটে ভারতের বড় ভূমিকা বলতেই বুমরা তাইতো একা কুম্ভ রক্ষা করে ব্রিসবেনের মাঠে ভারতের বুমরা। গাব্বার মাঠে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ ক্রিকেটারকে আউট করে কপিলদেবের রেকর্ডকে টপকে গেলেন। মহম্মদ সিরাজ ও নীতিশ রেড্ডি একটি করে উইকেট পেলেও আকাশদীপ ও রবীন্দ্র জাদেজা নিষ্ফলা। ভারতের বোলিং ব্যর্থতায় অস্ট্রেলিয়া বড়রানের স্কোরবোর্ড গড়তে অস্ট্রেলিয়া বড় ভূমিকা নিল। যশপ্রীত বুমরা ৮ বার ৫টি উইকেট নিলেন এক ইনিংসে। আগে রেকর্ড গড়েছিলেন একই ইনিংসে কপিলদেব ৫ উইকেট পেয়ে ছিলেন ৭ বার। তা টপকে গেলেন যশপ্রীত বুমরা। এক কথায় আবার ভারতের ত্রাত হয়ে উঠলেন বুমরা। ভারতের হতাশার আকাশে আলোর ফুলকি বুমরা।