• facebook
  • twitter
Tuesday, 8 April, 2025

আজ ইডেনে অজিঙ্কা রাহানে

চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছেন প্যাট কামিন্সদের বিরুদ্ধে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

পূর্ণেন্দু চক্রবর্তী

অজিঙ্কা রাহানের কলকাতা নাইট রাইডার্স জেতার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের বিরুদ্ধে। আবার হায়দরাবাদের অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও ছক কষে চলেছেন, কীভাবে আন্দ্রে রাসেলদের কীভাবে পিছনে ফেলে দিতে পারেন। সেই কারণে দুই দলের অধিনায়ক একে অপরের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করার জন্য নিশ্চয়ই দুরন্ত লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে। দুই দলই ভালো জায়গায় নেই। কলকাতা দলের প্রতি যে আশা ছিল, তা এখনও পূরণ করতে পারেনি। লিগ টেবলে তারা তলানিতে রয়েছে। আবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের একই অবস্থা। সেই কারণেই দুই দলের কাছেই মরণ-বাঁচন লড়াই। কীভাবে ম্যাচ ছিনিয়ে নেওয়া যায়, তার জন্য কোচ অবশ্যই গোপন ছক তৈরি করবেন, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন হয় না। কেকেআর দল প্রথম ম্যাচেই কোহলির বেঙ্গালুরুর কাছে হার স্বীকার করে।

তবে দ্বিতীয় ম্যাচে গুয়াহাটিতে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে আট উইকেটে জয় তুলে নেয়। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে আবার ধরাশায়ী কেকেআর। হারল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। তাই জয়ের সরণিতে ফিরতে চাইছে কেকেআর। অন্যদিকে হায়দরাবাদও চাইছে জয়ের মুখ দেখতে। গত ম্যাচে তারা লখনউয়ের কাছে ৫ উইকেটে হেরে গিয়েছিল। তবে হায়দরাবাদের ওপেনার ট্রাভিস হেড রানের মধ্যে রয়েছেন। গত ম্যাচে তিনি ৩ রানের জন্য অর্ধ শতরান করতে পারেননি। আবার ঈশান কিশানের ব্যাটে রান আসছে না। অনিকেত শর্মা চেষ্টা করছেন তাঁর ব্যাট থেকে রান আসুক। কিন্তু তাঁর অভিজ্ঞতা সেইভাবে কাজে আসছে না। তবে গত ম্যাচে ৩৬ রান করেছিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের সবচেয়ে বড় ভরসা বলতেই অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। কামিন্সের ব্যাটেও রান আসছে না। তাই দল বেশ চিন্তিত। সবদিক দিয়ে বলা যায় কেকেআর এবং হায়দরাবাদ দলের অবস্থা প্রায় একই রকম।

গুয়াহাটিতে কুইন্টন ডি’কক ভালো রান পেয়েছিলেন। মাত্র ৩ রানের জন্য তিনি শতরান থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে কেকেআর দলের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন, তাতে অনেকেই হতাশ। কীভাবে এই দুর্দিনকে অতিক্রম করে আলোর পথে ফেরা যায়, তার জন্য অধিনায়ক অজিঙ্কা রহানে সতীর্থ খেলোয়াদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। আবার অনেকে বলছেন, প্রথম ম্যাচে ইডেনের উইকেটে স্পিনাররা কোনওভাবেই সফল হতে পারেননি। যার ফলে বরুণ চক্রবর্তীরা প্রতিপক্ষ দলকে ভয় দেখাতে পারেননি। বরঞ্চ, বিরাট কোহলি অন্য স্টাইলে খেলে বড় রান পেয়েছে। অপর বোলার মইন আলি গুয়াহাটি ম্যাচে দুটো উইকেট পেলেও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারেননি। পেসার জনসনের উপরেই ভরসা রাখতে হবে। হর্ষিত রানা এবারে কিছু পরিবর্তন ঘটাতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।

অন্যদিকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলে ভালো ব্যাটসম্যানরা রয়েছেন। কিন্তু সেইভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে না পারলেও তাঁরা চেষ্টা করছেন কলকাতাকে ঘরের মাঠে আঘাত হানতে। প্রত্যেকেই অত্যন্ত সচেতন দুরন্ত লড়াই করার জন্য। সব মিলিয়ে বলতে পারা যায়, দুই দলের যুদ্ধটা খুব যে একটা আকর্ষণীয় হবে, তা নয়। যেমন কলকাতা দলে আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিংরা ভালো জায়গায় নেই। একটা সময় এই রিঙ্কুকে নিয়ে অনেক গল্প তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই গল্পের নায়ক এখন পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন। তাঁর ব্যাট থেকে রান আসছে না। এই রিঙ্কুকে বলা হত ‘উইনার্স ফিনিশার’। সেই নামে তাঁকে এখন আর ডাকা যাচ্ছে না। আবার উটিতে ফিরে গেলে দেখতে পাওয়া গেছে আন্দ্রে রাসেলের ঝোড়ো ব্যাটিং। কিন্তু সেই আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটিং আর কথা বলে না। উইকেটে দাঁড়ালে সেই রণং দেহি মনোভাব নেই। হয়তো তাঁর ব্যাট ম্রিয়মান হয়ে গেছে। কলকাতার দর্শকরা রিঙ্কু ও আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটের কথা হয়তো ভুলে গেছেন।

এদিকে ইডেনের উইকেট নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ঘরের মাঠে যদি কলকাতা দল সুবিধা না পায়, তাহলে খেলার ফলাফল অন্যরকম হতেই পারে। বলা হয়েছিল, স্পিনারদের জন্য উইকেট করা হয়নি। স্পিনারদের জন্য উইকেট না হলেও, পেসাররা কী করল? এর পাশাপাশি বলতে হয়, ব্যাটসম্যানরা নিজেদের দাপট দেখাতে ব্যর্থ হলেন কেন? প্রতিপক্ষ দল যদি খেলতে পারে, তাহলে কলকাতা দল কেন খেলতে পারছে না? এই প্রশ্নের উত্তরটা কে দেবে? তবুও এই খেলা দেখার জন্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু টিকিটের চাহিদা থাকলেও সেইরকম আগ্রহ কারও চোখে পড়ছে না। সবাই ছোটাছুটি করছেন, সৌজন্যমূলক কার্ড যদি পাওয়া যায়, তাহলেই মাঠে খেলা দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন।

News Hub