আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় দল প্যাট কামিন্সদের কোণঠাসা করে রাখার পরিকল্পনায় বিভোর

খেলার একটি বিশেষ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার প্যাট কামিন্সের পাশে রোহিত শর্মা।

অ্যাডিলেড— ভারতীয় ক্রিকেট দলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ অস্ট্রেলিয়া সফরে এগিয়ে থাকা। তার প্রধান কারণ হল, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে টানা তিনবার খেলার ছাড়পত্র আদায় করে নেওয়া। তাই স্বাভাবিকভাবে বলতেই হবে, পাঁচ সিরিজের টেস্ট ম্যাচের মধ্যে চারটি ম্যাচ জিততেই হবে রোহিত শর্মাদের। তবে, পার্থে প্রথম টেস্ট ম্যাচ প্যাট কামিন্সদের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় তুলে নিয়েছে ভারতীয় দল। আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় দল অবশ্যই দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে দিন-রাতের খেলায় নতুন প্রেরণায় অস্ট্রেলিয়াকে চাপে রাখার জন্য সবরকম চেষ্টা করবে। প্রথম টেস্টে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরা। আর এবারে দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কের ব্যাটনটা তুলে নেবেন রোহিত শর্মা। সেই কারণে রোহিতের কাছেও অত্যন্ত মর্যাদার প্রশ্ন রয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর জন্য। ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গত দু’টি সফরেই টেস্ট সিরিজে ভারত জিতেছে। যদিও গত সফরে শুরুটা সেইভাবে ভালো জায়গায় পৌঁছতে পেরেছিলেন ভারতীয় দল। তবে এবারে ভারতীয় দলের শক্তি এবং মনোবল একেবারে তুঙ্গে রয়েছে। যে সমস্ত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে যেভাবে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে ভারতীয় দলকে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া সফরে বেশ চাপে পড়ে যাবেন রোহিত শর্মারা। কিন্তু আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে ভারতীয় দল প্রথম টেস্টে যেভাবে অস্ট্রেলিয়াকে কোণঠাসা করে রেখে দিয়েছিল, তা ভাবা যায় না।

ইতিমধ্যেই ভারতীয় দল অ্যাডিলেডে পৌঁছে গিয়েছে। দিনরাতের এই ম্যাচ দিয়ে গতবছর অ্যাডিলেডে গোলাপি বলের টেস্টে মাত্র ৩৬ রানে সবাই আউট হয়ে গিয়েছিলেন। দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের মধ্যে দিয়ে সিরিজ জিতলেও ভারতীয় দলে সেই ৩৬ রানের ক্ষতটা এখনও ভাবায়। এই অ্যাডিলেডেই আগামী শুক্রবার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। যদিও পার্থে দুরন্ত পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে ভারতীয় দল জিতেছে ২৯৫ রানের ব্যবধানে। অবশ্যই এই জয়ের পিছনে যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজরা বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। বিশেষ করে যশস্বী এবং বিরাট কোহলির শতরান ভারতীয় দলকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিল। আঙুলের চোটের কারণে শুভমন গিল খেলতে পারেননি। এবং রোহিত শর্মা প্রথম টেস্ট ম্যাচে না খেললেও লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ভারতীয় দল ওপেন করেছিল। ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিরুদ্ধে গোলাপি বলে প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতীয় দল খেলেছে এবং জিতেওছে।

তবে অধিনায়ক রোহিত শর্মা রান পাননি। পাশাপাশি বলতে হবে, ভারতীয় দলে সমন্বয়ে কোথাও একটা অভাব রয়েছে। যদি ভারতীয় খেলোয়াড়রা ঠিকমতো নিজেদের প্রকাশ করতে পারেন, তাহলে এই ম্যাচেও জয়ের আলো দেখতে পাওয়া যাবে। রোহিত শর্মা কি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামবেন, এমন ভাবনা অনেকেই করছেন। তার প্রধান কারণ হল, ওপেনার হিসেবে যশস্বী জয়সওয়াল ও লোকেশ রাহুল ভালোই করেছেন। প্রস্তুতি ম্যাচে অবশ্য বিরাট, বুমরা ও ঋষভ পন্থ খেলেননি। মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে প্র্যাকটিসে নেমে পড়বে ভারতীয় দল। দ্বিতীয় টেস্টে ভারতীয় দল কেমন হবে, তা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে কোনওভাবেই ওপেনার হিসেবে প্রথম টেস্টের জুটিকে ভাঙা নাও হতে পরে। যদি রোহিত শর্মা নিজে মনে করেন ওপেন করবেন যশস্বী জয়সওয়ালকে নিয়ে, তাহলে অন্য কথা নাও ভাবা হতে পারে।


প্রথম টেস্টে ভারতীয় দলে প্রথম একাদশে ধ্রুব জুরেল ও দেবদত্ত পাড়িক্কলকে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেইভাবে কারও নজর কাড়তে পারেননি। শুভমন গিল যদি প্রথম একাদশে চলে আসেন, সেক্ষেত্রে এই দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে যে কোনও একজনকে বাদ চলে যেতে হবে। আবার এমনও হতে পারে, এই ধ্রুব ও দেবদত্তকে কোনওভাবেই প্রথম একাদশে নাও রাখা হতে পরে। তাহলে রোহিত শর্মা দলকে নেতৃত্ব দিলেও সহঅধিনায়ক যশপ্রীত বুমরাকে ছাড়া কোনওভাবেই অন্য কারও কথা ভাবা হচ্ছে না। দলে থাকবেন উইকেটরক্ষক হিসেবে ঋষভ পন্থ। থাকবেন শতরানকারী বিরাট কোহলি ও যশস্বী জয়সওয়াল। আবার নীতীশ রেড্ডির সঙ্গে ওয়াশিংটন সুন্দরকে রাখার ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কেএল রাহুল মহম্মদ সিরাজের সঙ্গে হর্ষিত রানাকে দেখা যাবে, সেটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এদিকে ভারতের অন্যতম সেরা দ্রুতগামী বোলার মহম্মদ শামিকে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু দিনরাতের টেস্টের আগে মহম্মদ শামি ভারতীয় দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতীয় দল এখন যে জায়গায় রয়েছে, তাতে অস্ট্রেলিয়া দল চাপে থাকবে, এটা বলাই বাহুল্য।