অলিম্পিক্স সাঁতারে সবচেয়ে কমবয়সী আরতি সাহাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৪ বছরের সাঁতারু ধিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি: আসন্ন প্যারিস অলিম্পিক্স গেমসে ভারতের হয়ে ১১৭ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন৷ তার মধ্যেই সবচেয়ে কমবয়সী প্রতিনিধি হল সাঁতারে বেঙ্গালুরুর ধিনিধি ডেসাঙ্ঘু৷ তার বয়স মাত্র ১৪ বছর৷ ১৪ বছর বয়সে অলিম্পিক্সে অংশ নিয়ে ভারতকে গর্বিত করতে চলেছে৷ অবশ্য এর আগে ভারতের থেকে সবচেয়ে কমবয়সী প্রতিনিধি হিসেবে সাঁতারু আরতি সাহা অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছিলেন৷ তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর৷ ৭২ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৫২ সালে হেলসিঙ্কি অলিম্পিক্সে ১২ বছর বয়সী সাঁতারু আরতি সাহা অংশ নিয়েছিলেন৷ আর ৭২ বছর বাদে প্যারিস অলিম্পিক্সে ১৪ বছরে ধিনিধি অংশ নিতে চলেছেন৷ ধিনিধিকে সারা বিশ্বের সেরা প্রতিযোগীদের সঙ্গে লড়াই করতে হবে৷ তবে, ধিনিধি মনে করেন, তিনি যখন পুলে নামেন তখন অন্য কিছু ভাবেন না৷ এটা মনে রাখতে হবে সুইমিং পুলে প্রতিযোগীদের সবাই এক৷ গতবছর জাতীয় সাঁতারে জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন ধিনিধি৷ সেই কারণে সবাই আশায় বুক বেঁধেছেন৷

৭২ বছর আগে সাঁতারে ভারতীয় মেয়েদের পথ দেখিয়েছিলেন আরতি সাহা৷ আরতি সাঁতার কেটে বিশ্বমঞ্চে ভারতকে পরিচিতি দিয়েছিলেন৷ তাই অনেকেই মনে করছেন, ৭২ বছর বাদে আরতির সেই ব্যাটনটা নিয়ে এগিয়ে যাবেন ধিনিধি৷ সাঁতারু ধিনিধিকে দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন৷ সবাই অপেক্ষা করছেন অলিম্পিক্সের আসরে তিনি নিজেকে কীভাবে প্রকাশ করেন৷

আরতি ও ধিনিধির সাঁতারের কাহিনিটা অদ্ভুত শিহরণ জাগায় আরতি একদিন কাকার হাত ধরে গঙ্গায় স্নান করতে এসেছিলেন৷ তারপরে কাকার হাত ধরে সাঁতার শেখা এবং বাবা পাঁচুগোপাল সাহা আরতিকে হাটখোলা ক্লাবে সাঁতারের জন্য ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন৷ সেখান থেকেই আরতি সাহার সাঁতার জীবন শুরু৷ পরবর্তীতে তিনি ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছিলেন৷ আবার ধিনিধির লজ্জা কাটানোর জন্য সাঁতারে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা৷ লাজুক ধিনিধি কারওর সঙ্গে কথা সেইভাবে কথা বলত না৷ তাই একদিন মজা করে সাঁতারে নিয়ে এসে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন বাবা৷ তারপরেই ধিনিধির সাঁতার শেখা শুরু হয়ে যায়৷ অলিম্পিক্সে ২০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে অংশ নেবেন৷ কোচ বিএম মধুকুমার আশা করছেন, ছাত্রী ধিনিধি খুব একটা খারাপ ফল করবে না৷ জাতীয় স্তরের অভিজ্ঞতা নিয়ে সে সাঁতারে নামবে৷ পাশাপাশি নিজেও মনে করেন, উন্নততর জায়গায় পৌঁছতে গেলে সেরা সাঁতারুদের সঙ্গে লড়াই করতে হয়৷ আর পদক জিততে গেলে সবকিছু উজার করে দিতে হয়৷ ধিনিধি বেঙ্গালুরু কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী৷ দেশের থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হয়ে থাকে৷ তবে, একটা লক্ষ্য রেখেই জলে নামা উচিত৷ অলিম্পিক্সে সাতবারের সোনাজয়ী সাঁতারু আমেরিকার কেটি লেডেকির ভক্ত ধিনিধি৷ তাঁরই আদর্শে তিনি সবসময় সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেন৷ অলিম্পিক্সে যাওয়াটা ধিনিধির স্বপ্ন ছিল৷ সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছেন৷ মাত্র ১১ বছর বয়সেই রাজ্যস্তরে ২২টি প্রতিযোগিতায় তিনি পদক জিতেছেন৷