ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১০৭

প্রথম টেস্টে চেন্নাইয়ের মাঠে বাংলাদেশকে প্রায় দুরমুশ করে জয় তুলে নিয়েছে রোহিত শর্মার ভারত। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিতীয় টেস্টে আত্মবিশ্বাসী ভারত বাংলাদেশকে চাপে রাখবে। বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত সেকথা ভালো করেই জানতেন। কিন্তু তাঁরা একটা লড়াকু মনোভাব নিয়ে লড়াই করবেন, এমন ধারণা রেখেছিলেন। কিন্তু সেই ভাবনার উপরে বৃষ্টির ছটা পড়তেই শুক্রবার কানপুরের মাঠে প্রথম দিনের পুরো খেলা সম্ভব হল না। অবশ্য আবহাওয়া অফিস থেকে আগাম পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, প্রবল বৃষ্টি হতে পারে সকাল থেকে। আবহাওয়া অফিসের এই বার্তাই ঠিক হল। বৃষ্টি এসেছে এবং প্রথম দিনের খেলা মাত্র ৩৫ ওভার হয়েছে। বাংলাদেশ তখন ভারতের বিরুদ্ধে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান করেছে। খেলার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। বৃষ্টি থেমে গেলে দেরিতে খেলা শুরু হয়। ভারতীয় দলে তিনজন পেসারকে নিয়ে প্রথম একাদশ গঠন করা হয়। টসে জিতে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বল করার সিদ্ধান্ত নেন। রোহিতের সিদ্ধান্ত অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। তার প্রধান কারণ হল

বৃষ্টিভেজা উইকেটে অঘটন ঘটে যায়। সেই সুযোগটা নিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
ব্যাট করতে নেমে খুব সাবধানেই বাংলাদেশ খেলা শুরু করে। দুই ওপেনার ধীরে খেলছিলেন। শাদমান ইসলাম কয়েকটি শট খেললেও জাকির হাসান রান করতে পারছিলেন না। কিছু বলে সমস্যা হলেও যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজকে সামলান বাংলাদেশের দুই ওপেনার। তৃতীয় পেসার হিসাবে বল করতে নেমে প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে ধাক্কা দেন বাংলার আকাশ দীপ। তাঁর বলে গালি অঞ্চলে ক্যাচ দেন জাকির। প্রথম টেস্টের মতো এই টেস্টেও ভাল ক্যাচ ধরেন যশস্বী জয়সওয়াল। সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে বল তালুবন্দি করেন তিনি। মাঠের আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তৃতীয় আম্পায়ার আউট দেন। ২৪ বল খেলে শূন্য রানে ফেরেন জাকির।

অপর ওপেনার শাদমানকেও প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান আকাশ দীপ। তাঁর বল শাদমানের প্যাডে লাগলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। আম্পায়ার আউট দেননি। আকাশ দীপের জোরালো আবেদনে রিভিউ নেন রোহিত। ডিআরএসে দেখা যায় শাদমান আউট। শেষ পর্যন্ত ২৪ রান করে তিনি প্যাভিলিয়নের দিকে পা বাড়ান।


মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের আগে বিরতি ঘোষণা করে দেন আম্পায়াররা। বৃষ্টি থামলে দ্বিতীয় বার খেলা শুরু হলে মোমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শান্তকে ৩১ রানের মাথায় ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তার পরে আবার বৃষ্টি শুরু হয়। গোটা মাঠ ঢেকে দেওয়া হয়। বেশ কিছু ক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পরে আম্পায়াররা মাঠ পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেন প্রথম দিনের খেলা শেষ। বৃষ্টি ভেজা মাঠে কোনওভাবেই আউটফিল্ডে ফিল্ডিং করা সম্ভব ছিল না খেলোয়াড়দের। দিনের শেষে মোমিনুল ৪০ ও মুশফিকুর রহিম ৬ রানে ব্যাট করছেন।

প্রথম দিনের সিংহভাগ সময় খেলা না হওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শনিবার বা রবিবার কেমন থাকবে কানপুরের আবহাওয়া? খেলা কি হবে? এটাই প্রশ্ন ক্রিকেটার এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী কানপুরে রবিবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই খুব একটা আশার কথা শোনা যাচ্ছে না আবহাওয়াবিদদের কাছ থেকে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার কানপুরে বৃষ্টির সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিকালের দিকে ঝড়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। সারা দিন আকাশ থাকবে মেঘাচ্ছন্ন। ফলে শুক্রবারের মতোই আলোর সমস্যা হতে পারে টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও।

রবিবারও কানপুরের আয়োজকেরা নিশ্চিত থাকতে পারবেন না। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সে দিন আকাশ থাকবে আংশিক মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫৯ শতাংশ। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সে দিন বিকালের পর থেকে উন্নতি হবে আবহাওয়ার। সোমবার এবং মঙ্গলবার অর্থাৎ ম্যাচের শেষ দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা তেমন নেই কানপুরে। শেষ দু’দিন পুরো খেলা হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। সেই কারণে দ্বিতীয় টেস্ট যদি বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায় তাহলে খেলাটি অমীমাংসিতভাবে শেষ হবে। সেক্ষেত্রে কিছুটা বাংলাদেশের মুখরক্ষা হবে। এরপরেই ভারত ও বাংলাদেশের তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ রয়েছে। সেই ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকবেন ক্রিকেট প্রেমীরা।