তবু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকবেন না কোহলিরা

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে অনুশীলনে ভারতীয় ক্রিকেট দল।

পার্থ— আর পাঁচদিন বাদে ভারতের ক্রিকেট দল কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে লড়াই করতে হবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। আর এই লড়াইয়ের ফলাফলের ভিত্তিতে ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা করে নিতে পারবে কিনা, তার প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। পাঁচটি টেস্ট খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে ভারতকে। এই পাঁচটি টেস্টের মধ্যে কমপক্ষে চারটি ম্যাচে ভারতকে জিততেই হবে। তা না হলে ছিটকে যেতে হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই থেকে। স্বাভাবিকভাবে এই লড়াই ভারতের কাছে অত্যন্ত মর্যাদার। হয়তো সেই কারণেই ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর দল গঠনে বিশেষ গাইডলাইন তৈরি করেছেন। অভিজ্ঞ ও তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আসলে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের কাছ ভারতীয় দল যেভাবে হোয়াইট ওয়াশ হয়েছেন, তাতে আশঙ্কা নতুনভাবে তৈরি হয়েছে।

ক্রিকেটাররা আত্মবিশ্বাস অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন। তার মধ্যে অধিনায়ক রোহিত শর্মা প্রথম ম্যাচে থাকছেন না। তাই দলের ব্যাটনটা কার হাতে যাবে, তা এখনও স্পষ্ট করা হয়নি। তবে নাম উঠে এসেছে বিরাট কোহলির পাশে যশপ্রীত বুমরার। তবে যশপ্রীত বুমরা দলের সহঅধিনায়ক। কিন্তু অভিজ্ঞতার কথা ভেবেই এবং লড়াকু মনোভাবের পরিচয় দিতে গেলে বিরাট কোহলিকেই এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হতে পারে। এদিকে, ভারতীয় শিবিরে চোট ও আঘাত নিয়ে বড় চিন্তার বিষয় হয়ে গিয়েছে।

অনুশীলনে ইতিমধ্যেই দুই-তিনজন ভারতীয় দলের ক্রিকেটার চোট পেয়েছেন। অর্থাৎ ভারতীয় শিবির অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার আঘাত লেগেছিল সরফরাজ খানের। আর শুক্রবার চোট পেলেন কে এল রাহুল। সেই কারণে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির প্রথম টেস্টে তিনজন খেলোয়াড়কে নিয়ে চিন্তা ক্রমেই গভীর হচ্ছে কোচের। রাহুলকে ওপেনার হিসেবে ভাবা হয়েছিল। তাই যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে তাঁকে মাঠে নামানো হত। সেখানেও আরও একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াল ভারতীয় দলে। তাহলে কি বিরাট কোহলি বা শুভমন গিলের মধ্যে কাউকে বেছে নেওয়া হবে? একটা সময় বিরাট কোহলি ওপেনার হিসেবে মাঠে নেমেছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিরাট কোহলিকে নিয়ে আসা হয় তিন নম্বরে। এমনকি মাঝেমধ্যেও তাঁকে দেখা গিয়েছে সাত নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামতে। আবার শুভমন গিল কোনও কোনও খেলায় ওপেন করতে এসেছেন।


সাধারণত, শুভমন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলানো হয়ে থাকে। এদিন রাহুল যখন ব্যাট করছিলেন হঠাৎই একট শট বল রাহুলের ডান কনুইতে এসে আাঘাত করে। ব্যাটিং থামিয়ে তিনি ব্যথায় ছটফট করতে শুরু করেন। ফিজিও তাঁকে সেবাশুশ্রুষা করলেও ব্যাট নিয়ে আর মাঠে নামতে পারেননি রাহুল। ভারতীয় শিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চোট গুরুতর নয়। তাই প্রথম টেস্ট ম্যাচে তাঁকে না পাওয়া নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। আসলে ভারতীয় দলে পেস ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য অপ্টাস স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয়। স্থানীয় পার্থ ক্লাবের গতিশীল তরুণ বোলারদের নেটে বল করতে ডেকে আনা হয়েছিল। সেই সময় কোনও এক বোলারের বলটা ছিটকে গিয়ে রাহুলের কনুইতে আঘাত করে। বৃহস্পতিবার নেটে অনুশীলন করতে গিয়ে সরফরাজ খানও সেইভাবে আঘাত পেয়েছেন। এদিকে শোনা গেছে, বিরাট কোহলি স্ক্যান করাতে গিয়েছিলেন কোনও একটি কারণে। তাঁরও কি চোট আছে, এই সন্দেহটা দেখা দিয়েছে। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এমন কোনও চোট নেই, যা বিরাটকে পাওয়া যাবে না, এমন কথা নেই। পরপর দু’দিন ভারতের দুই ক্রিকেটার চোট পাওয়াতে সতীর্থ খেলোয়াড়রা একটু সাবধানী হয়ে গেছেন।

আবার এমনও হতে পারে, বিরাট ও শুভমন গিল যদি ওপেনার হিসেবে তাঁদের দেখতে না পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে বিরাট কোহলির নামটা ভাবা হলেও হঠাৎ করে আরেকটা নাম ঘোরাফেরা করছে। তিনি হলেন সরফরাজ খান। যদি চোট পাওয়া খেলোয়াড়রা দলে জায়গা না পান, সেক্ষেত্রে বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণের টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হতে পারে। আবার উইকেট রক্ষক হিসেবে ধ্রুব জুরেলকে দেখতে পাওয়া গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। তখন ঋষভ পন্থের জায়গা হবে ব্যাটসম্যান হিসেবে।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে ক্রিকেটাররা অতি আত্মবিশ্বাসী। তাঁরা ভালো করেই জানেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে গতবছর ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দিয়েছে। আর এবারে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে খেলতে এসেছে ভারতীয় দল। স্বাভাবিকভাবে ভারতীয় দল বড় চাপের মধ্যে রয়েছেন। তাই ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে লড়াইটা সহজভাবে নিলেও অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্সরা প্রথম টেস্ট ম্যাচ থেকে ঝড় তুলতে চাইছেন।