কর্ণাটকে আস্থা ভোটে জয় ইয়েদুরাপ্পা

বি এস ইয়েদুরাপ্পা (File Photo: IANS)

প্রত্যাশামতােই সহজে কর্ণাটক আস্থা ভােটে জয়ী হল বি এস ইয়েদুরাপ্পা সরকার। জয়ের পরই প্রতিশ্রুতিমতাে অর্থ বিল পেশ করেন নয়া মুখ্যমন্ত্রী। ধ্বনি ভােটে পাশ হয়ে যায় তাও।

সােমবার ধ্বনিতভাটে ১০৬টি ভােট পেয়ে আস্থা অজ্বনের পর ইয়েদুরাপ্পা বলেন, তিনি ‘ফরগেট অ্যান্ড ফরগিভ’ নীতিতে বিশ্বাসী। অর্থাৎ ভুলে যাও এবং ক্ষমা কর। কাজেই তিনি কিছুতেই প্রতিহিংসার রাজনীতির রাস্তায় হাঁটবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

তাঁকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তিনি আরাে বলেন, আমি জানি, এখনও বিধায়কদের ইস্তফা দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। আমরাও একই পথে হাঁটব না। দেখা যাক আপনারা কীভাবে সরকার চালান। মাঝপথেই বিধায়কদের ছেড়ে দেবেন না। গত ১৪ মাসের সরকারের কাজকর্ম সম্পর্কে সব রকম প্রশ্নের জবাব দিতেও তিনি প্রস্তুত বলেও জানান কুমারস্বামী।


কুমারস্বামীর এই বক্তব্যের পর ইয়েদুরাপ্পা বলেন, আমার সরকার সম্পর্কে আপনার এই মন্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। কোনাে সমস্যা হলে আমাকে ফোন করে বলবেন, কোথায় ভুল হচ্ছে। আমরা তা শুধরে নেব। প্রতি মিনিটে আমি উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করব। আপনার বিশ্বাস ভাঙব না। আমাকে সহযােগিতা করার জন্য আপনাকে অনুরােধ করছি।

যদিও ইয়েদুরাপ্পা কোনাে দিনই মানুষের আস্থায় মুখ্যমন্ত্রী হননি বলে কটাক্ষ করে কংগ্রেস বলে, তিনি ঘােড়া কেনাবেচায় সিদ্ধহস্ত। কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার আস্থা ভােটের ঠিক একদিন আগে গতকাল ১৪ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন স্পিকার রমেশ কুমার।

এই বিধায়করা আজ সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। এই বিধায়কদের ১১ জন কংগ্রেসের এবং তিনজন জেজিএসর। এই নিয়ে কর্ণাটকে মােট ১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ হল।

গতকাল এই সিদ্ধান্ত ঘােষণা করে স্পিকার রমেশ কুমার বলেছিলেন, দলত্যাগ বিরােধী আইন অনুযায়ী কংগ্রেসের ১১ জন এবং জেডি (এস)-র তিন জনের বিধায়ক পদ খারিজ করা হল। ফলে আগামী ২০২৩ সালে চলতি বিধানসভার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ১৪ জন আর কোনাে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারবেন না।

এর আগে গত সপ্তাহে কংগ্রেসের ২ জন এবং আরও একজন নির্দল বিধায়কের সদস্যপদ এভাবেই কেড়ে নিয়েছিলেন অধ্যক্ষ।

তবে দু’দফায় শাস্তিপ্রাপ্ত ১৭ জন বিধায়কের কয়েকজন গতকাল জানিয়েছেন, অধ্যক্ষের এই সিদ্ধান্ত অবৈধ। এর প্রতিকার চাইতেই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে গতকাল নতুন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা দাবি করেছেন, আস্থা ভােটে জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।

প্রসঙ্গত ১৭ বিক্ষুব্ধ বিধায়কের পদত্যাগের জেরে নানা ঘটনাপ্রবাহে গত ২৩ জুলাই আস্থা ভােটে পরাজিত হয়ে ইস্তফা দেন। ১৪ মাসের কংগ্রেস-জেডি (এস) জোট সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী রাজ্যপাল বাজুভাই বালার আমন্ত্রণে একাই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন বিজেপি’র বি এস ইয়েদুরাপ্পা।

রাজ্য রাজনীতিতে টানা তিন সপ্তাহের নাটক শেষে বিধানসভার দুই শিবিরের বিধায়ক সংখ্যার হিসেব যা দাঁড়িয়েছে, নতুন কোনাে অঘটন না ঘটলে আস্থা ভােটে ইয়েদুরাপ্পার জয় নিশ্চিত।

১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ হওয়ার ফলে কর্ণাটক বিধানসভায় ২২৪ আসনের মধ্যে অধ্যক্ষকে বাদ দিয়ে ভােট দেওয়ার জন্য এই মুহুর্তে ২০৭ জন বিধায়ক রইলেন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়ােজন হবে ১০৪ জন বিধায়ক। ভােটাভুটিতে উভয় পক্ষে সমানসংখ্যক ভােট পড়লেই কেবল কাস্টিং ভােট দিয়ে থাকেন অধ্যক্ষ। কিন্তু একজন নির্দলকে ধরে বিজেপি’র হাতেই ছিল ১০৬ সমর্থন।