আট দফায় নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘােষণা হওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূল সুপ্রিমাের বাড়িতে হােমযজ্ঞ চলছিল। সেই অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই ভােটের দিন ঘােষণা হল।
বাংলার নজিরবিহীনভাবে আট দফায় ভােটের নেপথ্যে কেন্দ্রের রাজনৈতিক হাত রয়েছে বলেই মনে করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নির্বাচন কমিশনের মতাে একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ওপর বিজেপির প্রভাব খাটানাের অভিযােগ তুললেন তিনি। ব
ললেন, আমিই একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। আমাকে হারাতে গােটা কেন্দ্রীয় সরকার নেমে পড়েছে। শুক্রবার বিকেলেই সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা প্রশ্ন তােলেন, এই ভােটসূচি কি মােদি-শাহ ঠিক করেছেন? কারণ, বিজেপির পার্টি অফিস থেকে যে তালিকা এসেছিল, এদিন হুবহু তাই প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন।
মমতা বলেন, নির্বাচন কমিশন মহান প্রতিষ্ঠান। তার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, এটা সুবিচার হল কি? কমিশনের নিরপেক্ষতা কি বজায় থাকল? মমতা এদিন নির্বাচনের দফা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন। যেমন বিহারে ২৪০ টি আসন থাকলেও সেখানে তিন দিনে ভােট সম্পন্ন হয়েছে। তামিলনাড়ু, কেরলে একদিন করে ভােট হচ্ছে।
সেক্ষেত্রে কেবল বাংলার ক্ষেত্রেই আট দফার ভােট কাদের সুবিধের জন্য। শুধু তাই নয়, মমতা এদিন বলেন, তামিলনাড়ু, কেরল, অসমে ভােট পর্ব মিটে যাওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গের ভােট শেষ করা হচ্ছে।
২৭ মার্চ অসমে এবং ৬ এপ্রিল কেরল ও তামিলমাডুতে ভােট পর্ব মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে। যাতে বিজেপি নেতারা বাকি সময়টা বাংলাকে দিতে পারেন। তবে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই মমতা বলেন, আট দফাতেই ‘খেলা হবে। হারিয়ে ভূত করে দেব।
মমতা এদিন নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে এতগুলাে দফায় ভােট হচ্ছে তা নজিরবিহীন। এরপর মমতা বলেন, এক একটা জেলাকে একাধিক ভাগে ভাগ করে ভােটের দিন ধার্য করা হয়েছে।
মমতা প্রশ্ন তােলেন , কাকে সুবিধে করে দিতে এই সূচি? মমতা বলেন, একটা জেলাকে পার্ট ওয়ান, পার্ট টু’তে ভাগ করা হচ্ছে । অন্যদিকে দক্ষিণ চৰ্বিশ পরগণায় আমাদের প্রভাব বেশি, সেখানে তিন দফায় ভােট করা হচ্ছে। বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় রয়েছে বলে তার অপব্যবহার করা হচ্ছে।
মমতা এদিন কমিশনের কাছে আবেদন রাখেন, বিজেপি যাতে টাকা ছড়িয়ে ভােট কিনতে না পারে। অন্যদিকে এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তাে আট দফায় ভােট চেয়েছিলেন। বাংলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানাে কঠিন কাজ। তাই এত দফায় ভােট করানাের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।