নির্বাচন পর্বের মধ্যেই শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে এক প্রকার তােলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি তুলেছেন। মমতার এই দাবির ২৪ ঘণ্টা পর তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বারাসত দক্ষিণের একটি সভা থেকে রব্বিার অমিত শাহ বলেন, ‘দিদি বার বার বলছেন অমিত শাহ ইস্তফা দিন। দিদি, মানুষ যখন চাইলে , তখন ইস্তফা দেব। কিন্তু আপনি তৈরি থাকুন। ২ মে’র পর আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে। শাহ অবশ্য শীতলকুচির ঘটনার জন্য মমতাকেই দায়ী করেছেন।
এদিন তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উস্কানি না দিলে এই ঘটনা ঘটত না। বাহিনীকে ঘেরাও করার উস্কানি দেন মমতা। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন তিনি। এই চারজনের মৃত্যুর জন্য কি ওঁর দায় নেই? মৃত্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেননি মমতা। শােকপ্রকাশেও বিভেদ, তােষণের রাজনীতি করছেন।
অমিত শাহ এদিন আরও বলেন, ‘বাহিনীর রাইফেল লুঠের চেষ্টা হয়। আত্মরক্ষায় গুলি চালায় বাহিনী। শীতলকুচির ঘটনা দুঃখজনক। ভােটের লাইনে খুন হন আনন্দ বর্মণ। এদিন অমিত শাহ এই সভা থেকে দাবি করেন, এই ঘটনা ছাড়া বাংলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভােট হয়েছে।
কথা দিচ্ছি, বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলেন রাজনৈতিক ও ভােটের হিংসাব বন্ধ হবে। যদিও শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় অমিত শাহকেই দায়ী করছেন মমতা। তিনি শাহকে চক্রান্তকারী হিসেবেও অভিহিত করেন।
মমতার অভিযােগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঢাল করে ষড়যন্ত্রের জ্বাল বুনছেন অমিত শাহ। ফলে ভােটারদের গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। আর এই প্রসঙ্গেই অমিত শাহের পদত্যাগের দাবি তুলেছিলেন মমতা।
প্রসঙ্গত, শনিবার নির্বাচন শুরু হতেই শীতলকুচির পাঠানটুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এক ১৮ বছর বয়সী যুবকের। বেলা গড়াতেই আবার উত্তেজনা ছড়ায় জোড়পাটকি এলাকাতে। ১২৬ নং বুথের বাইরে এলােপাথারি গুলি চালানাের অভিযােগ ওঠে জওয়ানদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৪ জনের।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সিআরপিএফ জওয়ানদের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। একুশে বিধানসভা নির্বাচনে চতুর্থ দফার ভােটগ্রহণ পর্বে কুচবিহারের শীতলকুচির ঘটনায় ভােট রাজনীতি তপ্ত।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গুলিতে নিহত চারজনের ঘটনায় রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছেন। রবিবার সারা রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস কালাে ব্যাচ পড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত করে।
আজ অর্থাৎ রবিবার বসিরহাটে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ তৃণমূল নেত্রীর পদত্যাগ দাবি নিয়ে জানালেন-মানুষ চাইলে ইস্তফা দেব, তবে তার আগেই দিদি আগামী ২ মে রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেলে।
বাংলায় দিদির বিদায় নিশ্চিত। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অর্মিত শাহের নিয়ন্ত্রণে, তাই শীতলকুচিতে চারজন নিহতের ঘটনায় সরাসরি অমিত শাহ মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে অভিযােগ তুলেন মমতা।
যদিও অমিত শাহ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন রয়েছে।