অভিষেকের নিশানায় কমিশন,
নিজস্ব প্রতিনিধি – জলপাইগুড়িতে ঝড়ে বিদ্ধস্ত পরিবারের জন্য কোনো বাড়ি নির্মাণ নয়! বুধবার দুপুরেই নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট জানানো হয়৷ এমনটাই বলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷ ভূপতিনগর ঘটনার জট কাটেনি এখনও৷ এরই মধ্যে দ্বিতীয়বার রাজভবন পাড়ি দিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এক তত্ত্বাবধানে ৮ জন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল৷ রাজভবন থেকে বেড়িয়েই এ বিষয়ে খোলসা করেন তিনি৷ সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,নির্বাচন কমিশন বিহু উৎসব পালনের জন্য আসামে ফান্ড দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে৷ কিন্ত্ত বাংলায় ঝড়ে বিদ্ধস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সেই অনুমতি মিললো না৷ তৃণমূল সেনাপতির দাবি, কমিশন জানিয়েছে রাজ্য আপাতত নতুন বাডি় তৈরি করে দিতে পারবে না৷ তবে বাডি় মেরামতির জন্য আর্থিক সাহায্য করতে পারে৷ অল্প ক্ষতিগ্রস্ত বাডি়র জন্য ৫ হাজার এবং বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাডি়র জন্য ২০ হাজার টাকা অর্থসাহায্য করতে পারবে রাজ্য৷ একথা তুলে ধরার পরই অভিষেকের প্রশ্ন, এদের বাংলা বিরোধী বলব না তো কি বলব? এ প্রসঙ্গে অভিষেক আরো বলেন, আসামে বিজেপি সরকার তাই আসামের ক্ষেত্রে আইন, নিয়মকানুন সবই পৃথক৷ কেন্দ্রীয় সংস্থা তথা নির্বাচন কমিশনের কাজ বিজেপির তল্পিবাহকতা করা৷ অভিষেক যেসকল অভিযোগের ওপর আলোকপাত করে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিলেন সেসকল বিষয়ে রাজ্যপাল কথা বলতে চান নির্বাচন কমিশনের সাথে৷ কিন্ত্ত বুধবার অভিষেকের সাথে দেখা করে রাজ্যপাল জানান, চিফ নির্বাচন কমিশন কথা বলছেন না রাজ্যপালের সাথে৷ অভিষেকের অভিযোগ, “বাংলার রাজ্যপাল বলেই হয়তো ফোন ধরেননি কমিশনার৷ বাংলার দাবিদাওয়া তুলতে পারেন ভেবেই ফোন ধরেননি৷” কিন্ত্ত রাজ্যপাল তৃণমূলকে আশ্বাস্ত করেছেন নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলে তৃণমূলের দাবিগুলি তুলে ধরা হবে৷ অভিষেকের দাবি, এরপরেও কোনো সদর্থক পদক্ষপ না নেওয়া হলে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল একই দাবিদাওয়া নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে, এমনটাই জানান অভিষেক৷ পাশাপাশি এনআইএ -র এসপি ধনরাম সিং এর ইসু্যতে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক৷
আগামীকাল অর্থাৎ ১২ই এপ্রিল পরিকল্পনামাফিক ধূপগুড়িতে সভার পর অভিষেক বৈঠকে বসবেন জলপাইগুড়ির সেই অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যেখানে ঝড়ে প্রায় ১৬০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ পাশাপাশি ডাকা হয়েছে তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দলের প্রত্যেক সদস্যকে যাঁরা সোমবার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ বিষয়টিও জানান অভিষেক৷ পাশাপাশি এদিন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কেও তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, মমতা বালা ঠাকুরকে রাজ্যসভায় শপথ গ্রহণের সময় নিজ দেবতা শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম উচ্চারণ করায় তাঁর শপথ গ্রহণে বাধা দিয়েছিলেন৷ একসময় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের ভুল বুঝিয়ে ভোট আদায় করেছিল বিজেপি৷ জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীনও ক্রমাগত বাংলার বিরোধিতা করে গেছেন বলেই আজ উপরাষ্ট্রপতির পদ পেয়েছেন৷ পাশাপাশি বুধবারের অমিত শাহের বালুরঘাটের সভাকে কেন্দ্র করেও শাহের বিরুদ্ধে কটাক্ষের সুর চড়ান অভিষেক৷ ডায়মন্ড হারবারে অভিষেকের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যোগ্য প্রার্থী হতে পারে ইডি, সিবিআই, এনআইএ -র ডিরেক্টররাই, এমনটাই বলেন অভিষেক৷ বুধবারে অভিষেকের নেতৃত্বে যে প্রতিনিধি দল গিয়েছিলো তাতে উপস্থিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ব্রাত্য বসু এবং কুণাল ঘোষ৷