• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আর জি করের ধর্ষিতা এবং নিহত তরুণী চিকিৎসকের খুনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই: দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অপরাধের বিরুদ্ধে আইন সংস্কার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা রেখে যে বিল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ সহমত

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির মধ্যে আর জি করের নিহত তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের বিচার চেয়ে এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলনের নামে বিজেপির তৈরি রাজ্যব্যাপী ন্যক্কারজনক অরাজকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বৃহস্পতিবার ২৯ অগাস্ট কলকাতার প্রেস ক্লাবে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। এই সভার সভাপতিত্ব করেন মাননীয় প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী, সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত, সুমন ভট্টাচার্য, গায়ক সৈকত মিত্র, অভিনেতা ভিভান ঘোষ, অভিনেত্রী সুদেষ্ণা রায়, অন্যন্যা চ্যাটার্জী, ডা. সিদ্ধার্থ গুপ্ত, প্রদীপ্ত গুহঠাকুরতা, প্রাক্তন বাম নেতা বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, অমিত কালী, বর্ণালী মুখার্জি, নাজমুল হক, সুষাণ রায়, কল্যাণ সেনগুপ্ত প্রমুখরা।

দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অপরাধের বিরুদ্ধে আইন সংস্কার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা রেখে যে বিল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ সহমত।

গত মঙ্গলবার তথাকথিত ‘ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযান এবং সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছিল। সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী তথা আরও অনেক পুলিশ কর্মীরা গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরের দিন অর্থাৎ বুধবার বিজেপির ডাকা বনধ এবং তাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে যে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয় তার বিরুদ্ধেও দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ প্রতিবাদ জানিয়েছে।

দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের প্রতিনিধিরা আর জি করের ধর্ষিতা এবং নিহত তরুণী চিকিৎসকের খুনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান। এবং তদন্ত যেন সঠিক পথে এগোয় সেই দাবিও করেন। কিন্তু রাজ্য জুড়ে বিজেপির অরাজকতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির তাঁরা ঘোরতর বিরোধী। গণমঞ্চ আশাহত ভারবর্ষের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বক্তব্যে। এই বিষয়ে গণমঞ্চের বক্তব্য যে, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, আসাম, মণিপুর, উন্নাও, হাথরাস, বিহারের বিজেপি শাসিত অঞ্চলগুলিতে যখন ধর্ষণের দুঃসংবাদ সারা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি কেন কোনো বক্তব্য রাখেননি? তাঁর এরকম সিলেক্টিভ আচরণ কেন? এবং একই প্রশ্ন গণমঞ্চ রাজ্যের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছেও রেখেছেন যে, এই সময়ে তিনি এরকম দলীয় প্রতিনিধির মতো আচরণ করছেন কেন? কেন তিনি রাজ্যের রাজ্যপালের মতো নিরপেক্ষ আচরণ করছেন না? কেন বিজেপির ডাকা বনধ না মানায় ট্রেনের হকার এবং বিভিন্ন দোকানপাঠ ভাঙার প্রতিবাদ করলেন না তিনি? কেন নবান্ন অভিযানের নামে প্রহসনের দিন আক্রান্ত সার্জেন্টের কোনো খোঁজখবর পর্যন্ত তিনি নিলেন না? গণমঞ্চের পক্ষ থেকে তাঁদের দুজনের জন্যই একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে, তাহলে কি ধরে নিতে হবে বিজেপির তৈরি চিত্রনাট্যের মেনেই এই আচরণ করছেন তাঁরা?

গণমঞ্চ কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইয়ের প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। প্রশ্ন হল এই যে, কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সিবিআইকে ২১ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল তদন্তের পরিসমাপ্তি ঘটানোর জন্য, কিন্তু ১৭ দিন কেটে যাওয়ার পরও কি এই তদন্ত যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়েছে নাকি কিছুটা অগ্রগতি ঘটেছে? ২১ দিন পর আদৌ যথোপযুক্ত বিচার নিহত তরুণী চিকিৎসক এবং তাঁর পরিবার পাবে তো?

সব শেষে গণমঞ্চের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত ডাক্তাদের অনুরোধ করা হয়, যেন তাঁদের নেওয়া শপথ তাঁরা ভুলে না গিয়ে অসুস্থ সাধারণ মানুষদের, প্রান্তিক মানুষদের চিকিৎসা আবার তাঁরা শুরু করেন। আন্দোলনের পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসাও যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।