• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মার্কিন বন্দুক সংস্কৃতি

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় ‘বিস্ময়, হতাশা ও শঙ্কা’ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের সব নেতারাই৷ প্রায় সবাই বলেছন, গণতন্ত্রে এ ধরনের রাজনৈতিক হিংসা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন৷ এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি৷

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় ‘বিস্ময়, হতাশা ও শঙ্কা’ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের সব নেতারাই৷ প্রায় সবাই বলেছন, গণতন্ত্রে এ ধরনের রাজনৈতিক হিংসা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন৷ এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি৷ রাজনীতি ও গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনও স্থান নেই৷ তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি৷ নিহত ব্যক্তির পরিবার, যাঁরা আহত হয়েছেন এবং আমেরিকার জনগণের প্রতি আমাদের সমবেদনা ও প্রার্থনা রইল৷’

আগামী ৫ নভেম্বর আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন৷ এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের ওপর হামলার কড়া নিন্দা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছন, ‘আমেরিকায় এই ধরনের হিংসার কোনও স্থান নেই৷ এটা অসুস্থ মানসিকতা৷ সবার উচিত এই ঘটনার নিন্দা জানানো৷’ ট্রাম্প হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন বাইডেন৷ হোয়াইট হাউস সূত্রে একথা জানা গেছে৷
ট্রাম্পের ওপর হামলার পরদিন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বিবৃতি দেন৷ তিনি বলেছেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় আমি ও আমার স্ত্রী সারা ব্যথিত৷ তাঁর নিরাপত্তা এবং দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য আমরা প্রার্থনা করছি৷’

নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চে পেনসিলভেনিয়ার বাটলার এলাকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বক্তব্য রাখতে শুরু করতেই আচমকা গুলির শব্দে মঞ্চে বসে পড়েন৷ তাঁর ডান কান থেকে রক্ত পড়তে দেখা যায়৷ তখন ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলে বলতে থাকেন, ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট৷’ সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হন সন্দেহভাজন অভিযুক্ত আততায়ীও৷ চিকিৎসার পর ট্রাম্প ভালো আছেন বলে জানা গিয়েছে৷ তবে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাস চারেক আগে ট্রাম্পের ওপর এ ধরনের হামলার কারণ অবশ্য জানা যায়নি৷ তদন্ত চলছে৷

হামলার পরপরই ৭৮ বছর বয়সি ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ স্পেশালে একটি পোস্ট করেন৷ সেখানে তিনি লেখেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে আমাদের দেশে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে৷ হামলাকারী নিহত হয়েছেন৷ ঈশ্বর আমেরিকার মঙ্গল করুন৷’

ট্রাম্পের ওপর হামলার মাঝেই টেসলা কর্তা ধনকুবের এলন, মাস্কও প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করলেন৷ টেসলা কর্তার দাবি, গত ৮ মাসে তাঁর উপর দু’বার প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টা হয়েছে৷ ধনকুবের মাস্কের এই দাবির পর স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক চরমে উঠেছে৷ প্রশ্ন উঠছে, আমেরিকার মাটিতে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিয়ে৷

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলাকারীর নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস৷ বয়স ২০৷ সে পেনসিলভানিয়ার বেথেল পার্কের বাসিন্দা ছিল৷ ওই প্রদেশের ভোটার তালিকা অনুযায়ী টমাস রিপাবলিকান দলের সদস্য৷ রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ট্রাম্পকে সমর্থন করে এক বার্তা দেন এলন মাস্ক৷ বার্তায় তিনি জানান, ‘আমি সম্পূর্ণরূপে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন জানাচ্ছি এবং ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি৷

বিশ্বের সর্বোন্নত দেশ আমেরিকা নিজেদের সুসভ্য জাতি বলে অহংকার করলেও হিংসা তাদের মূল্যবোধের অঙ্গ৷ তাই দেশের রাষ্ট্রনায়ক ও শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের গুলি করে মারা বা মারার চেষ্টা করার ঐতিহ্য তাদের আছে৷ এর আগে ৪৬ জন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে চারজনকে প্রকাশ্যে আততায়ীরা খুন করেছিল৷ আরও বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্ট, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীকেও এভাবে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল৷ তবে তাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন৷ আমেরিকার ‘সভ্য’ সংস্কৃতিতে সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র অর্থাৎ গুলিভরা বন্দুক রাখা যে কোনও নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ তাই অপরাধমূলক কাজ বা হিংসার জন্য বন্দুকের অভাব নেই৷ প্রায় সকলের ঘরেই এক বা একাধিক বন্দুক আছে৷ মার্কিন মনস্তত্ব হল আত্মরক্ষার জন্য প্রত্যেকের সঙ্গেই সর্বদা বন্দুক রাখা দরকার৷ ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার এক সমীক্ষায় প্রকাশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজনের কাছে আছে সস্তার মহাঘাতক এআর-১৫৷ এই সেমি-অটো রাইফেল নিয়েই ট্রাম্পকে অ্যাটাক করেছিল ক্রুকস৷

প্রতিদিনই প্রায় শোনা যায় আমেরিকায় কেউ না কেউ স্কুলে, শপিং মলে, অনুষ্ঠানে, রাস্তায়, জনবহুল জায়গায় বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়ে মানুষ খুন করছে৷ ট্রাম্পও সেই বন্দুক সংস্কৃতির হিংস্রতার শিকার৷