• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

সীমাহীন নির্লজ্জতা

দুর্নীতিগ্রস্তদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে বিজেপি দলটি৷ মোদি সরকারের পরিচয় হয়ে দঁড়িয়েছে দুর্নীতিগ্রস্তদের ‘গ্যারান্টি’৷ যে নির্বাচনী বন্ডকে অবৈধ, অসংবিধানিক বলে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছে, তার পক্ষে নির্লজ্জের মতো এখনও সওয়াল করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ প্রথম দিকে কিছুটা চুপ থেকে সময় নিয়েছেন৷ এখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে নির্বাচন৷ তাই অবশেষে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং৷ পছন্দের একটি টিভি চ্যানেলকে

দুর্নীতিগ্রস্তদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে বিজেপি দলটি৷ মোদি সরকারের পরিচয় হয়ে দঁড়িয়েছে দুর্নীতিগ্রস্তদের ‘গ্যারান্টি’৷ যে নির্বাচনী বন্ডকে অবৈধ, অসংবিধানিক বলে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছে, তার পক্ষে নির্লজ্জের মতো এখনও সওয়াল করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ প্রথম দিকে কিছুটা চুপ থেকে সময় নিয়েছেন৷ এখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে নির্বাচন৷ তাই অবশেষে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং৷ পছন্দের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এবং পরে কয়েকটি জনসভাতেও নির্বাচনী বন্ডের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন৷ সাক্ষাৎকারে মোদিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নির্বাচনী বন্ড কি আপনার সরকারের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে? কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাফাই গাওয়ার মতো বলেছেন, আগেও তো নির্বাচন হতো, কিন্ত্ত কে কাকে চাঁদা দিত জানা যেত না৷ এখন নির্বাচনী বন্ডের জন্য সেটা তো জানা যাচ্ছে৷ মোদির এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ মোদি নির্বাচনী বন্ডের সম্পূর্ণ তথ্য গোপন রেখেছিলেন, বলা ভালো রাখতে চেয়েছিলেন৷ সেইভাবেই আইন তৈরি করা হয়েছিল৷ কে কত টাকা দিচ্ছে, কাকে দিচ্ছে তা জানা যাবে না৷ ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪, কোনও তথ্যই পাওয়া যায়নি৷ সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ডকে অসংবিধানিক আখ্যা দেওয়ার পর সেই তথ্য সামনে এসেছে৷ শেষ দিন পর্যন্ত আদালতে মোদি সরকার নির্বাচনী বন্ডের তথ্য গোপন রাখার চেষ্টা করে গেছে৷ সুপ্রিম কোর্টে মোদি সরকারের আইনজীবী সওয়াল করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি কোথা থেকে চাঁদা পাচ্ছে, তা জানার অধিকার নেই সাধারণ মানুষের৷ শেষ রক্ষা হয়নি৷ নির্বাচনী বন্ডে সরকার এবং বিজেপির পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে৷ ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি বড় মুখ করে বলে থাকেন, তিনি একাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে৷ কিন্ত্ত দেখা যাচ্ছে, গোটা দেশে তিনিই দুর্নীতি বিলি করে চলেছেন৷ যাকে যত বড় দুর্নীতিগ্রস্ত বলা হচ্ছে, তাকেই বিজেপি দফতরে তত বড় গেরুয়া কার্পেট বিছিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে৷ ইডি, আয়কর, সিবিআইয়ের মতো সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানো হয়েছে বিরোধী কণ্ঠস্বর রোধ করার জন্য৷

মোদি এখন সাফাই গাইছেন ইডি একটি স্বশাসিত সংস্থা৷ তিনি বা তাঁর সরকার তাদের কাজে কোনও হস্তক্ষেপ করে না৷ বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডি বা অন্য কোনও সংস্থাকে ব্যবহারই করা হয়নি৷ কিন্ত্ত নির্বাচনী বন্ডের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির তদন্তের মুখে পড়েছে এমন ৪১টি সংস্থা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দিয়েছে বিজেপিকে৷ নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন সংস্থা কবে বিজেপিকে টাকা দিয়েছে সামনে চলে াসার পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে কীভাবে বন্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করছে বিজেপি৷ শুধু তাই নয়, যখন নির্বাচনী বন্ডের তথ্য বিজেপির বিপুল দুর্নীতিকে উলঙ্গ করে দিয়েছে, দেশজুড়ে বিজেপির লুঠ এবং তোলাবাজির ছবি স্পষ্ট হয়ে গেছে, তখনও গলা চড়িয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ কিন্ত্ত চমকপ্রদ বিষয় হল, বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিতে যেখানে মোদির ভাষণ পোস্ট করা হলে আগে মোদি-বন্দনায় ভরে উঠত কমেন্ট বক্স, সেখানে এখন অসংখ্য মানুষের কটাক্ষ এবং আক্রমণাত্মক পোস্ট উপচে পড়ছে৷ শুধু বিরোধীরা নয়, পিএম কেয়ার্সের হিসাবও চাইছেন অসংখ্য মানুষ৷ তবুও নির্লজ্জ মোদি ফাটা রেকর্ডের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে চলেছেন৷