পর পর তিন ঘটনায় বাংলাদেশে অস্বস্তি

বাসুদেব ধর, ঢাকা, ৩০ মে– পরপর তিন ঘটনায় বাংলাদেশে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে৷ সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সাবেক দুই প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং কলকাতায় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের হত্যাকান্ড সরকারকে দারুণ অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে৷ আজীমের হত্যাকান্ডের পেছনে সোনা চোরাচালানের ভাগ বাটোয়ারা ও হুন্ডি ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে৷ এই তিন ঘটনা সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, বিরোধী বিএনপিসহ অন্যান্য দলের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিয়েছে৷ শাসক আওয়ামি লিগ অবশ্য বলছে, এসব ঘটনা ব্যক্তির বিষয়, এতে সরকারের কোনো দায় নেই৷ ব্যক্তি যতই প্রভাবশালী হোন, অপরাধ করলে শাস্তি হবে৷

দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত ২০ মে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার কথা জানানো হয়েছে৷

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে সাবেক জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে, পূর্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর৷ এর ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন৷


বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তার (আজিজ আহমেদ) কর্মকান্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমেছে৷ আজিজ আহমেদ তার ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকান্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন৷ এটা করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন৷ এ ছাড়া অন্যায্যভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন৷ তিনি নিজের স্বার্থের জন্য সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে ঘুষ নিয়েছেন৷

জেনারেল আজিজের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে আল-জাজিরা টেলিভিশন একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার ক‌েরিেছল কিছুদিন আগে৷ কিন্ত্ত এই প্রতিবেদন প্রচারের পর বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়৷

পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) প্রধান (মহাপরিচালক) থাকার সময় মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, যা এখনো বহাল আছে৷ একই সঙ্গে র্যাবের আরও ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়৷ বেনজীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অগাধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আগে মুখে মুখে শোনা গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা গণমাধ্যমে বিশদভাবে প্রকাশিত হয়েছে৷ গত ২৩ মে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ জব্দ (ক্রোক) করার আদেশ দিয়েছে আদালত৷ একই সঙ্গে তাদের ব্যাংক হিসেব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করারও আদেশ দেওয়া হয়েছে৷ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে৷ দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ এসেছে৷ বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আদালতে এই আবেদন করা হয়৷ কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, বেনজীর আহমেদের সম্পদ কেনার ৮৩টি দলিল জব্দ করার আদেশ দিয়েছে আদালত৷ একই সঙ্গে তাদের ব্যাংক হিসেবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে৷

দৈনিক কালের কন্ঠ-এ গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ২ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে দুই পর্বের প্রতিবেদনে বলেছিল, বেনজীরের পরিবারের মালিকানায় রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত ইকো রিসোর্ট৷ এই রিসোর্টের পাশে আরও ৮০০ বিঘা জমি কিনেছে এই পরিবার৷ এ ছাড়া পাঁচ তারকা হোটেলের ২ লাখ শেয়ার রয়েছে তাদের৷ ঢাকার অভিজাত বসুন্ধরা এলাকায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাটও রয়েছে বেনজীর পরিবারের৷ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব সম্পত্তি অবৈধ টাকায় কেনা হয় বলে উল্লেখ করা হয়৷ দ্বিতীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার কাছে গাজীপুরে ভাওয়াল গড় ইউনিয়নের নলজানী গ্রামে ১৬০ বিঘা জমির ওপর ভাওয়াল রিসোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে৷ এই রিসোর্ট করতে বনের ২০ বিঘা জমি দখল করা হয়েছে৷ এ ছাড়া দুবাইয়ে শতকোটি টাকার হোটেল ব্যবসা এবং থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় তার পরিবারের জমি রয়েছে৷

ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, তারা বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে এবং কয়েকজন স্বজনের নামে প্রায় ১১৪ একর বা ৩৪৫ বিঘা জমি খুঁজে পেয়েছেন৷ সবচেয়ে বেশি জমি পাওয়া গেছে বেনজীরের স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে৷

সর্বশেষ জানা গেল, বেনজীর আহমেদ পুলিশ প্রধান হিসেবে অবসরে যাওয়ার ছয় মাস যেতে না যেতেই তিনি একদিনে অভিজাত গুলশান এলাকায় চারটি বৃহদায়তন ফ্ল্যাট কিনেছেন৷ তাদের ৬২১ বিঘা জমির সন্ধান মিলেছে, যার বেশির ভাগই তার স্ত্রীর নামে৷ দৈনিক প্রথম আলোর এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে কারণে অকারণে ঘুষ খাওয়ার কথা এতো বেশি শোনা যায় যে এই দুর্নামকে অনেকেই পেশাটির সমার্থক করে ফেলেন৷ কিন্ত্ত সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ বছর চাকরি করে কেউ যদি ঘুষখোর হিসেবেও পরিচিতি পান, তার পক্ষেও এতটা সম্পদ অর্জন প্রায় অসম্ভব৷ জবরদস্তি করে বা ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, দখলবাজি, কেনাকাটার কমিশন, অধস্তনদের উপরি আয়ে ভাগ বসানো এবং বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছ থেকে বড় অঙ্কের মাসোহারার মতো অনেকগুলো আয়ের সূত্র ছাড়া এতো অস্বাভাবিক সম্পদস্ফীতির আর কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হতে পারে না৷ স্বামী বা পিতা হিসেবে তার এ ঈর্ষণীয় ধন অর্জনে তার স্ত্রী-কন্যারা নিশ্চয়ই গৌরব বোধ করছেন৷ না হলে তাদের সম্মতি ছাড়া তো তাদের নামে সম্পদ করা সম্ভব ছিল না৷ ’
এরই মাঝে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন ভারতের কলকাতায়৷ দেশের বাইরে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর খুন হওয়ার ঘটনা জানা যায়৷ দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ খুনের ঘটনার পেছনে সীমান্তে চোরাচালান নিয়ে বিরোধের বিষয়কে তুলে ধরা হচ্ছে৷ উঠে আসছে হুন্ডি ব্যবসার কথাও৷ টানা তিনবারের এই সংসদ সদস্য এবার নির্বাচনী হলফনামায় বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে বিভিন্ন সময় ২১টি মামলার কথা উল্লেখ করেছিলেন৷ যদিও আওয়ামি লিগ সরকারের সময়েই কোনোটিতে খালাস বা কোনোটিতে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি৷ কিন্ত্ত এখন কলকাতায় গিয়ে তাঁর খুন হওয়ার ঘটনা যেমন নানা অভিযোগকে সামনে আনছে, একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি না থাকলেও বারবার আওয়ামি লিগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷

আনোয়ারুল আজীমকে ধরিয়ে দিতে ২০০৭ সালে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ৷ তার বিরুদ্ধে দেশের আদালতেও তখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল৷ এরপরও তিনি পলাতক থাকায় ২০০৮ সালে চুয়াডাঙ্গার একটি বিশেষ ট্রাইবু্যনাল সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন৷ এখন প্রতিদিনই এই সংসদ সদস্য সম্পর্কে নানা খবর সংবাদ মাধ্যমে বেরুচ্ছে৷

সমালোচনায় বলা হচ্ছে, এসব ঘটনায় সরকার ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দিন দিন কমছে৷ আওয়ামি রিগকেই এসব ঘটনার দায় নিতে হবে৷ সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘সাবেক পুলিশপ্রধানের যে পরিমাণ সম্পদের কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা অকল্পনীয়৷ এত সম্পদের মালিক কীভাবে হলেন সরকারি একজন কর্মকর্তা! তিনি তো অবসরের পর এই সম্পদ করেননি, চাকরিতে থাকা অবস্থাতেই করেছেন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়৷ তার মানে কি কর্তৃপক্ষ চোখ বন্ধ করে ছিল ? তিনি (বেনজীর আহমেদ) সরকারকে ব্যবহার করে এসব করেছেন৷ সরকারও তাকে ব্যবহার করেছে৷ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের সংশ্লিষ্ট আইনের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায়৷ সেই ধারায় ‘ক্লেপ্টোক্র্যাসি’ শব্দটি রয়েছে৷ এর মানে হচ্ছে, রাজনীতিতে ও সমাজে দুর্নীতির সুবিধা আছে৷ এর সুবিধা নিয়ে তিনি দুর্নীতিগ্রস্তদের অংশীদার হয়েছেন৷ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা যখন সাবেক এই সেনাপ্রধানকে ঘিরে তথ্যচিত্র প্রচার করেছিল, সে সময় ব্যবস্থা নেওয়া হলে পরিস্থিতি এত দূর যেত না বলে মনে হয়৷ এখন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর তার সমালোচনা করলেই চলবে না৷ ঘটনার দায় সরকারকেও নিতে হবে৷ সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের কলকাতায় খুন হওয়ার ঘটনায় চোরাচালানের অভিযোগ এসেছে৷ আসলে দেশের রাজনীতিতে সংসদ সদস্যের পদ লোভনীয় করে ফেলার কারণে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে৷ একক কোনো দলের কথা বলব না৷ এ ব্যাপারে সব দলের দায় রয়েছে৷ কারণ, কাকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, তা যাচাই-বাছাই কতটা করা হচ্ছে-এই প্রশ্ন করতেই হয়৷ ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা বলেছেন, সরকার যদি বলে থাকে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দায় তারা নিতে রাজি নয়, তাহলে কি তারা স্বীকার করছে যে ঘটনাগুলো ঘটেছিল? অপরাধ ব্যক্তিই করে থাকে৷ কিন্ত্ত কার ছত্রচ্ছায়ায় করে, সেটা দেখতে হবে৷ রাজনৈতিক প্রভাবের মধ্য থেকে যদি তারা করে, অবশ্যই ক্ষমতাসীনদের দায় আছে৷ তারা এড়িয়ে যেতে পারে না৷ তারা অবসরে যাওয়ার পর ঘটনাগুলো সামনে এসেছে৷ কিন্ত্ত এটা আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের ওপর বড় প্রভাব ফেলবে৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টে ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রিয়াজ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এই ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই৷ যে তিনজনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই সরকারের আনুকল্য পেয়ে এসেছেন৷

তবে ঘটনাগুলোকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না আওয়ামি লিগ নেতৃত্ব৷ দলে অস্বস্তি থাকলেও তিনটি ঘটনাকেই পৃথকভাবে দেখছেন নেতাদের কেউ কেউ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়কে রাজনৈতিক বলে মনে করে তাঁদের নেতৃত্ব৷ এর পেছনে তাদের যুক্তি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে থেকে সরকারের ওপর একধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরির চেষ্টা ছিল৷ এর অংশ হিসেবেই সেনাপ্রধানের পদ থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে৷ ফলে এটিকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয় আওয়ামি লিগ৷ আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ ইসু্যতে সরকার বিব্রত নয়৷ সরকারের বিচার করার সৎসাহস আছে৷ সরকার তাদের অপরাধ করে অস্বীকার করে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়নি৷

সংবাদ মাধ্যম বলছে, আওয়ামি লিগের মধ্যম সারির দুজন নেতা জানান, ঘটনাগুলো নিয়ে তাদের সর্বত্র নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে৷ তারা সঠিক কোনো জবাব দিতে পারছেন না৷ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে তারা নিজেরাও সন্ত্তষ্ট হতে পারছেন না৷ কিন্ত্ত দলীয় কোনো ফোরামে এসব নিয়ে সাহস করে কেউ আলোচনা তুলবেন, এমনটাও তারা মনে করেন না৷

তবে আওয়ামি লিগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনাগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক৷ যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোতে সরকার কোনো ছাড় দেবে না৷ সরকারের এই অবস্থানকে সমালোচকদের বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন৷