মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে আইনি লড়াইতে নামলেন মমতার আমলেই এজি পদ ছাড়া দুই আইনজীবী 

Written by SNS July 3, 2024 9:41 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজ্যপালের দায়ের করা মানহানি মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আইনি লড়াই লড়তে নামলেন রাজ্যের দুই প্রাক্তন এজি বা অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র এবং সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেই রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ আইনি পরামর্শদাতা অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ ছেড়েছিলেন তাঁরা। রাজ্যপালের দায়ের করা মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে আইনজীবীদের যে প্যানেল আদালতে সওয়াল করবেন, তাতেই মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন রাজ্যের দুই প্রাক্তন এজি। উল্লেখ্য, পদত্যাগের পর সরাসরি সরকারের প্রতি উষ্মাপ্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল জয়ন্তকে। এমনকি সৌমেন্দ্রনাথের পদত্যাগ নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল বিস্তর। এবার তাঁরাই মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে আইনি লড়াইয়ে নামলেন। যদিও বুধবারের শুনানিতে তাঁরা সওয়াল করেননি। রাজ্যপালের হয়ে এই মামলা লড়ছেন কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজ ত্রিবেদী এবং মামলার শুনানিতে বুধবার উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বর্তমান এজি কিশোর দত্তও।
এবার একটু অতীত ঘেঁটে দেখা যাক। জয়ন্ত মিত্র এবং সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কবে রাজ্যের এজি পদের দায়িত্বে ছিলেন? ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, রাজ্যের এজি পদে ছিলেন জয়ন্ত। অর্থাৎ, প্রথম মমতা সরকারের মাঝামাঝি সময় থেকে দ্বিতীয় মমতা সরকারের প্রথম দিক পর্যন্ত রাজ্যের এজি ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সময় বিভিন্ন আইনি বিষয়ে সরকারের সঙ্গে তাঁর মতের অমিল প্রকাশ্যে আসে। অন্যদিকে, বর্তমান এজি কিশোর দত্তের আগে ওই পদে ছিলেন সৌমেন্দ্রনাথ। তিনি রাজ্যের এজি পদে যোগ দেন ২০২১-এর ১৪ সেপ্টেম্বর। মমতা তৃতীয় বারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে পরেই। তাঁর সঙ্গেও সরকারের দূরত্ব তৈরির জল্পনা ‌ছড়িয়েছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জয়ন্তের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মতের অমিল হওয়ায় ২০১৭ সালে তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি এবং সরকারের সঙ্গে তাঁর মতের অমিলের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। জানান, সরকারের সঙ্গে মতান্তর ক্রমে বাড়ছিল। এই কারণেই তিনি সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে বিদেশে থাকাকালীনই রাজ্যপাল বোসের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠান সৌমেন্দ্রনাথ। পরে জানিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে তাঁকে হয়তো সরকারের আর দরকার নেই।
উল্লেখ্য, তিনি এজি পদে থাকাকালীনই নিয়োগ দুর্নীতি থেকে রেশন দুর্নীতি-সহ বহু মামলায় নাম জড়িয়েছিল শাসকদলের। এবার এই দুই আইনজীবীই মমতার হয়ে মামলা লড়তে নামলেন রাজ্যপালের দায়ের করা মানহানির মামলায়। তাহলে মমতার সাথে চলা মনোমালিন্যতেই কি এবার ইতি টানলেন জয়ন্ত এবং সৌমেন্দ্রনাথ? এবার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খণ্ডাতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তাঁরা।