নিজস্ব প্রতিনিধি– এবার হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী জিতে গেলেও তাঁদের নিজেদের এলাকায় ফল ভাল হয়নি। ‘দায় স্বীকার করে’ পদত্যাগ করলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধানরা। যদিও অন্য একটি ব্যাখ্যাও শোনা যাচ্ছে। আর তাতে বড় ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠেছেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। পরিসংখ্যান বলছে, হুগলি লোকসভা এলাকায়, ৭৬ হাজার ৮৫৩ ভোটে জিতেছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হুগলির ৭ বিধানসভার মধ্যে ৩টিতে পরাজিত হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবধান চুঁচুড়া বিধানসভায়। সেখানে রচনার থেকে ৮ হাজার ২৮৪টি ভোট বেশি পেয়েছেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। সার্বিক ফলাফলে তৃণমূল প্রার্থী জিতে গেলেও এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট হতেই সেখানকার তৃণমূল নেতাকর্মীদের আনন্দ কিছুটা হলেও ফিকে হয়ে যায়।
লোকসভা ভোটের ফলাফল বলছে, হুগলি থেকে জিতেছেন তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ওই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭ বিধানসভার ৩টি-তেই হেরেছেন তিনি। তার মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবধান চুঁচুড়ায়। সূত্রের খবর, এই ফলাফলের কারণ পর্যালোচনা করতে চুঁচুড়া বিধানসভার অন্তর্গত ব্যান্ডেল, দেবানন্দপুর, কোদালিয়া-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। সেই বৈঠকে, প্রধান, উপপ্রধানদের সামনে এ ব্যাপারে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিধায়ক, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, কারণ পর্যালোচনার নামে তাঁদের যাচ্ছেতাই অপমানও করা হয়।
এরপর শুক্রবার, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলির প্রধান ও উপপ্রধানরা মগরা বিডিও অফিসে গিয়ে পদত্যাগ করেন। সেই তালিকাতেই রয়েছেন কোদালিয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুচেতা মান্না পাল। তিনি অবশ্য কোনও চাপের কথা স্বীকার করেননি। বরং জানিয়েছেন, দলের পরাজয়ের দায় নিয়েই এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত। যদিও, সকলেই একসুর নন। চুঁচুড়া পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাসের যেমন অভিযোগ, ‘দলের কর্মি- কাউন্সিলরদের সঙ্গে কুকুর ছাগলের মতো ব্যবহার করেন বিধায়ক। তাই এই পরাজয় হয়েছে।’
বিজেপির আর এক নেতা সুরেশ সাউ বলেন, ‘পরাজয়ের দায় যদি নিতেই হয়, তা হলে বিধায়ক কেন নিচ্ছেন না? তিনিই তো চুঁচুড়ার অভিভাবক।’ কাউন্সিলরের একজন আবার মনে করছেন, একদিন তাসের ঘরের মতো এই সবটাই ভেঙে পড়বে। আর যে অসিত মজুমদারকে নিয়ে বিতর্ক, তিনি কী বলছেন? পদত্যাগীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ওঁদের ধন্যবাদ জানাই। কারণ তাঁদের বিবেক আছে। তাঁরা থাকা অবস্থায় দলের পরাজয় হয়েছে। অনেকে বিজেপি-কে ভোট দিয়েছে। কেন দিয়েছে, তা নিয়ে বসে পর্যালোচনা করব।’